wealth of ratan tata

পোষ্য, সহচর, রাঁধুনি... রতনের ১০ হাজার কোটির সম্পত্তি পেলেন কারা? কী আছে শিল্পপতির ইচ্ছাপত্রে?

অকৃতদার রতন টাটা মারা যাওয়ার পর তাঁর সম্পত্তির কী হবে সেই নিয়ে চর্চা শুরু হয় বিভিন্ন মহলে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৪ ০৭:৫৯
Share:
০১ ১৯

গত ৯ অক্টোবর ভারতের শিল্পজগতে নক্ষত্রপতনের দিন। ৮৭ বছর বয়সে রতন টাটার মৃত্যুর পর টাটা সাম্রাজ্যে শূন্যস্থানের সৃষ্টি হয়। রতনের মৃত্যুর পর টাটা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান হন তাঁর সৎভাই নোয়েল টাটা।

০২ ১৯

এর পর সাধারণের মনে দানা বাঁধে অন্য প্রশ্ন। রতন নাভাল টাটার ব্যক্তিগত সম্পত্তির মালিক কে হবেন, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয় আমজনতার। কারণ টাটা সাম্রাজ্যের একদা অধীশ্বরের কোনও সন্তান বা উত্তরা‌ধিকারী ছিল না। অকৃতদার রতন মারা যাওয়ার পর তাঁর সম্পত্তির কী হবে তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়।

Advertisement
০৩ ১৯

দেশের ধনকুবেরদের তালিকার প্রথম দশে ছিল না তাঁর নাম। ‘হুরুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্ট’ তালিকায় ভারতীয় ধনকুবেরদের মধ্যে ৩৫০ নম্বরে ছিল দেশের অন্যতম সেরা এই শিল্পোদ্যোগীর নাম। সেই তালিকায় বলা হয়েছিল এই পার্সি ধনপতির মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৭ হাজার ৯০০ কোটি টাকার কাছাকাছি।

০৪ ১৯

সংবাদমাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে তাঁর মৃত্যুর পরে এই বিশাল সম্পত্তি কার হাতে উঠবে তা উইল করে আগে থেকেই ঠিক করে গিয়েছিলেন রতন। সেই উইল কার্যকর করার গুরুদায়িত্বও সঁপেছেন খুব ঘনিষ্ঠ কয়েক জনের হাতেই। সম্প্রতি সেই ইচ্ছাপত্র প্রকাশ্যে এসেছে। আর তাতেই জানা গিয়েছে কার জন্য কী রেখে গিয়েছেন জামশেদজি টাটার এই উত্তরসূরি।

০৫ ১৯

রতনের ইচ্ছাপত্র অনুযায়ী তাঁর প্রিয় পোষ্য টিটোর আজীবন ভরণপোষণের খরচ দেওয়া হবে এই সম্পত্তি থেকে। জার্মান শেফার্ড টিটোর আদরযত্নের যেন কোনও ত্রুটি না হয় তার সমস্ত বন্দোবস্ত করে দেওয়া হয়েছে এই ইচ্ছাপত্রে।

০৬ ১৯

৬ বছর আগে অন্য পোষ্য মারা যাওয়ার পর টিটোকে নিজের কাছে এনেছিলেন রতন। সেই থেকেই প্রায় তাঁর ছায়াসঙ্গী হয়ে ওঠে টিটো।

০৭ ১৯

প্রিয় পোষ্যের জন্য সম্পদ রেখে যাওয়া পশ্চিমি দেশগুলিতে অস্বাভাবিক নয়, তবে ভারতে এটি বিরল বলে মনে করছেন অনেকেই। তবে টাটা গ্রুপের প্রাক্তন কর্ণধারের পোষ্যপ্রেম বহুচর্চিত। অনেক পথকুকুরকেও আশ্রয় দিয়েছিলেন রতন।

০৮ ১৯

মুম্বইয়ে প্রথম ২৪ ঘণ্টার পশুদের হাসপাতাল গড়ে ওঠে টাটা গ্রুপের উদ্যোগে। নিজের অসুস্থ পোষ্যকে মিনেসোটায় চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি উপলব্ধি করেন, দেশে সর্ব ক্ষণের পোষ্য হাসপাতালের প্রয়োজন রয়েছে। তার পরেই তিনি এই হাসপাতালটি তৈরি করেছিলেন।

০৯ ১৯

তবে শুধু পোষ্য নয়, দীর্ঘ দিন ধরে যাঁরা তাঁর যত্ন নিয়েছিলেন, তাঁদের কথা ভুলে যাননি তিনি। মনে রেখেছেন রাঁধুনি রাজনকে, পরিচারক সুব্বিয়াকে। মারা যাওয়ার আগে এঁদের নাম রতন ঘোষণা করে দিয়ে গিয়েছেন ইচ্ছাপত্রে। টিটোর সমস্ত দায়িত্বভার ন্যস্ত হয়েছে রাজন সাউয়ের উপরে।

১০ ১৯

আর এক অসমবয়সি বন্ধুকেও ভুলতে পারেননি প্রয়াত এই শিল্পপতি। তিনি শান্তনু নাইডু। শেষ বয়সে রতনের সহচর ছিলেন তিনি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত রতন টাটার সবচেয়ে কাছের মানুষ ছিলেন এই শান্তনু।

১১ ১৯

টাটা গোষ্ঠীর এমিরেটাস চেয়ারম্যানের প্রয়াণে তিনি লেখেন, ‘‘বন্ধুত্বে যে শূন্যতা তৈরি হল, আমি আমার বাকি জীবন দিয়ে তা পূর্ণ করার চেষ্টা করব। দুঃখ দিয়ে এই ভালবাসার মূল্য চোকাতে হবে। বিদায়, আমার প্রিয় লাইটহাউস।’’

১২ ১৯

শান্তনু নাইডুও বাদ পড়েননি উইল থেকে। শান্তনুর স্টার্টআপ সংস্থা ‘গুডফেলোজ়’-এ অংশীদারি ছিল রতন টাটার। সেই অংশ যেমন ছেড়ে দিয়েছেন, তেমনই শান্তনুর বিদেশে পড়তে যাওয়ার খরচের পুরোটাই রতন টাটা নিজের সম্পত্তি থেকে দিয়ে গিয়েছেন।

১৩ ১৯

রতনের নিজের ভাইয়ের নাম জিম্মি। দাদার মতো তিনিও অকৃতদার থেকে গিয়েছেন। ভাই জিম্মি টাটার জন্য সম্পত্তির একটি অংশ লিখে দিয়েছেন রতন। ভাই জিম্মি ছাড়াও দুই সৎবোন শিরিন ও ডায়ানার জন্যও সম্পত্তি রেখে গিয়েছেন তিনি। বাকি সম্পত্তি তিনি টাটা ফাউন্ডেশনের নামে করে দিয়েছেন।

১৪ ১৯

রতনের সম্পদের মধ্যে রয়েছে মুম্বইয়ের জুহু তারা রোডে একটি দ্বিতল বাড়ি, একটি ২ হাজার বর্গফুটের বাংলো, ৩৫০ কোটির স্থায়ী আমানত এবং টাটা সন্সের ০.৮৩ শতাংশ মালিকানা।

১৫ ১৯

মুম্বইয়ের কোলাবাতে সমুদ্রমুখী একটি আবাস রয়েছে রতনের। তার দাম ১৫০ কোটি টাকা বলে অনুমান করা হয়। ব্যক্তিগত সংগ্রহে রতন মার্সিডিজ় থেকে শুরু করে ন্যানো পর্যন্ত রেখেছিলেন। শিল্পপতির গাড়ির সংগ্রহ টাটা গ্রুপ পুণেয় জাদুঘরের জন্য অধিগ্রহণ করতে পারে বা নিলামে তুলতে পারে।

১৬ ১৯

বিশেষজ্ঞদের দাবি, ব্যক্তিগত সম্পত্তির নিরিখে অন্য শিল্পপতিদের থেকে রতন টাটার পিছিয়ে থাকার মূল কারণ হল দান। আয়ের একটি বড় অংশই জনহিতকর কাজে বিলিয়ে দিতেন তিনি। এর জন্য ট্রাস্টও তৈরি করেন।

১৭ ১৯

রতন টাটার উইল বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁর সৎবোন শিরিন এবং ডায়ানা জিজিবয়, আইনজীবী দারিয়াস খাম্বাটা এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু মেহলি মিস্ত্রিকে। রতন টাটার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও আস্থাভাজন ছিলেন মেহলি। সম্পর্কে মেহলি আবার সাইরাস মিস্ত্রির তুতো বোন।

১৮ ১৯

জামশেটজি টাটার পুত্র রতনজি টাটার দত্তক পুত্র নাভাল ও সুনু টাটার পুত্র রতনের জন্ম ১৯৩৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর, তৎকালীন বম্বেতে। আমেরিকার কর্নেল ইউনিভার্সিটি থেকে স্থাপত্যবিদ্যায় স্নাতক হয়ে ১৯৬১ সালে যোগ দেন টাটা গোষ্ঠীর ব্যবসায়।

১৯ ১৯

২০১৭ সালে টাটা গোষ্ঠীর অন্তর্বর্তিকালীন চেয়ারম্যানের পদ থেকে অবসর নেন রতন টাটা। সংস্থা ছাড়ার পরও কখনওই প্রকৃত অর্থে অবসরে যাননি তিনি। এর পরই আরএনটি অ্যাসোসিয়েটসের মাধ্যমে বিভিন্ন স্টার্ট আপ সংস্থায় লগ্নি করতে শুরু করেন জামশেদজির উত্তরসূরি। ওই স্টার্ট আপগুলিকে কোম্পানিতে পরিণত করাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য।

সব ছবি : সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement