মুকেশ অম্বানীর থেকেও দামি গাড়িতে চড়েন তিনি!
দিন কয়েক আগে একসঙ্গে তিনটি রোলস রয়েস কিনেছেন। তার মধ্যে একটি ব্রিটেনের বিলাসবহুল গাড়ি সংস্থার অন্যতম সেরা মডেল। নাম ব্ল্যাক ব্যাজ।
মুকেশ অম্বানী যে গাড়ি চড়েন সেটি রোলস রয়েসের কালিনান। দাম ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮ কোটি টাকা। ব্ল্যাক ব্যাজের দাম প্রায় তার দ্বিগুণ। ভারতীয় মুদ্রায় ১৫-১৬ কোটি টাকা।
গত এক মাসে এ ছাড়া আরও যে দু’টি নতুন রোলস রয়েস কিনেছেন। সেগুলিরও এক একটির দাম প্রায় ১০ কোটি করে।
যানবাহনের সংগ্রহ অবশ্য এখানেই শেষ হয় না। আরও বহু দামি গাড়ি আছে ওই একই গ্যারাজে। আর আছে একটি জেট বিমান এমব্রায়ার লেগাসি ৬৫০। সেই বিমানের দাম নাকি ১৭৮ কোটি টাকা। আছে বেল ৪২৭ মডেলের একটি হেলিকপ্টারও। কানাডায় তৈরি এই হেলিকপ্টারের মূল্য ৪৮ কোটি টাকা।
অথচ বিশ্বধনী তালিকায় বছরখানেক হল নাম উঠেছে এই ধনকুবেরের। নাম টিএস কল্যাণরমণ।
ভারতের সবচেয়ে ধনী স্বর্ণকার ইনি। বাড়ি কেরলের ত্রিশুরে। তবে তাঁর গয়নার দোকান দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে পাড়ি দিয়েছে বিদেশেও।
তাঁর গয়নার বিজ্ঞাপন করেন অমিতাভ বচ্চন থেকে শুরু করে শাহরুখ খান, দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেতা নাগার্জুন, প্রভু গণেশন।
দেশের প্রথম সারির অভিনেত্রী ঐশ্বর্য রাই, সুস্মিতা সেন, ক্যাটরিনা কইফ, রশ্মিকা মন্দানার নামও জড়িয়ে রয়েছে এই গয়না সংস্থার সঙ্গে। বাংলার ঋতাভরী চক্রবর্তীও এই সংস্থার বিজ্ঞাপনের মুখ হয়েছেন।
ভারতে শ’দুয়েক গহনার দোকান রয়েছে কল্যাণরমণের সংস্থার। কুয়েত, দুবাই, কাতারের মতো পশ্চিম এশিয়ার ধনী দেশগুলিতে রয়েছে আরও ৩০টি দোকান।
অর্থনৈতিক খবরাখবর সংক্রান্ত পত্রিকা ফোর্বসের হিসাব অনুযায়ী আপাতত ২৮০ কোটি ডলারের সম্পত্তির মালিক কল্যাণরমণ। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ২৩ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা।
অথচ ভারতের সবচেয়ে ধনী স্বর্ণকার কল্যাণরমণ যে গয়নার ব্যবসা করবেন, তা নিজেও ভাবেননি।
কল্যাণরমণ তামিল ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান। তবে পারিবারিক ব্যবসা কাপড়ের। ১২ বছর বয়স থেকে সেই ব্যবসাই শিখেছেন বাবার কাছে।
কল্যাণরমণ অবশ্য পরে অন্যত্র কাজ শুরু করেন। প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা জমিয়ে যখন তিনি নতুন ব্যবসায় আসার কথা ভাবছেন, তখন হঠাৎই গয়নার ব্যবসার কথা মাথায় আসে তাঁর। ঠিক করেন নিজের গয়নার দোকান খুলবেন। কিন্তু তাঁর জমানো টাকায় তা সম্ভব নয়।
কল্যাণরমণ ব্যাঙ্ক থেকে ৫০ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে ১৯৯৩ সালে তাঁর নিজের নামে প্রথম গয়নার দোকান খোলেন। তার পর থেকে অবশ্য পিছু ফিরে তাকাননি।
নিজের গয়নার ব্যবসাকে একটিই দোকানে সীমাবদ্ধ না রেখে ক্রমেই দোকানের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে শুরু করেন কল্যাণ। এ ভাবে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে দোকানের সংখ্যা। প্রথমে দেশ। তার পরে বিদেশেও।
আপাতত বিশ্বের ধনী তালিকায় নাম উঠেছে কল্যাণরমণের। তালিকায় অম্বানীদের থেকে অনেক অনেক নীচুতে তাঁর স্থান। তবে বহুমূল্য বিলাসদ্রব্য ব্যবহারের দিক থেকে তিনি টেক্কা দেন অম্বানীদেরও।