বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন জনপ্রিয় নেটপ্রভাবী তথা ইউটিউবার রবিন জিন্দাল। তিনি পরিচিত ‘ওয়ে ইনদওরি’ নামে। তাঁর ইউটিউব চ্যানেলের নামও তাই। রবিনের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন তাঁরই ‘লিভইন পার্টনার’। মামলাও দায়ের হয়েছে রবিনের বিরুদ্ধে।
অভিযোগকারী মহিলার দাবি, তিনি রবিনের সঙ্গে একত্রবাস করতেন। তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। কিন্তু শারীরিক সম্পর্কে হওয়ার পর রবিন নিজের প্রতিশ্রুতি পূরণ করেননি বলে অভিযোগ করেছেন ওই মহিলা।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযোগকারী মহিলার আগেও এক বার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু পরে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। রবিন তাঁর বাড়ির উল্টোদিকেই থাকতেন। তখনই রবিনের সঙ্গে তাঁর আলাপ। পরে তাঁরা একত্রবাস শুরু করেন বলেও দাবি করেছেন ওই মহিলা।
অভিযোগকারিনীর দাবি, কারসাজি করে রবিন তাঁকে শোষণ করার পর অন্য এক জনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
সম্প্রতি, ইন্দোরের একটি হোটেলে অন্য বান্ধবীর সঙ্গে বাগদান পর্ব সেরেছেন রবিন। সেখানে তাঁর পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং দেশের অনেক নেটপ্রভাবী এবং ইউটিউবার উপস্থিত ছিলেন। ইনস্টাগ্রামে সেই অনুষ্ঠানের বেশ কয়েকটি ছবি এবং ভিডিয়োও পোস্ট করেছেন রবিন।
তার কয়েক দিনের মধ্যেই রবিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলেন ওই মহিলা। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার রবিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা।
উল্লেখ্য, এর আগেও রবিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। গত মার্চ মাসে ওই মহিলা রবিনের উপর অভিযোগ এনে পুলিশের দ্বারস্থ হন। তবে পরে তা প্রত্যাহার করে নেন।
ইন্দোরের এমআইজি থানার পুলিশ ৩৫ বছর বয়সি ওই নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা নথিভুক্ত করেছে। রবিনের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।
রবিন নেটমাধ্যমের এক সুপরিচিত নাম। ১৯৯৫ সালের ২৬ নভেম্বর মধ্যপ্রদেশের ইনদওরে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে রবিনের জন্ম। তরুণ বয়সেই নেটমাধ্যমে মজার ভিডিয়ো পোস্ট করা শুরু করেন রবিন।
‘টিকটকার’ হওয়ার সুবাদে বেশ পরিচিতিও পান। তবে পরে দেশে টিকটক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তিনি সমাজমাধ্যমের অন্যান্য প্ল্যাটফর্মেও ভিডিয়ো পোস্ট করতে শুরু করেন। অল্প সময়েই দেশে পরিচিত নেটপ্রভাবীর তালিকাতেও নাম ওঠে রবিনের।
রবিনের বাবা-মা সম্পর্কে বিশষ কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রবিনের ভাই রোহিন জিন্দালও এক জন নেটপ্রভাবী।
ইনস্টাগ্রামে রবিনের ফলোয়ারের সংখ্যা ৭৪ লক্ষ। ইউটিউবে আরও অনুরাগী রয়েছে তাঁর। রবিনের ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ৭৮ লক্ষ। ফেসবুকেও ৪ লক্ষের বেশি মানুষ রবিনকে ফলো করেন।
মানুষকে হাসাতে ভালবাসেন রবিন। তাঁর ট্যাগলাইন—‘অব হাসেগা ইন্ডিয়া (অর্থাৎ এ বার ভারত হাসবে)’।
সমাজমাধ্যমের সঙ্গে অটুট যোগ থাকলেও ২০১৯ সালে ‘খাতরা খাতরা’ নামে এক টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে রবিন কাজ করেছেন। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সব পানীয়ের মধ্যে চা খেতে পছন্দ করেন রবিন।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউটিউব এবং ইনস্টাগ্রাম থেকে কোটি কোটি আয় করেন রবিন।
ইনস্টাগ্রামে কোনও জিনিসের স্টোরি দিতে এক-দু’লক্ষ টাকা নেন রবিন। রিল বানাতে নেন প্রায় তিন লক্ষ।
তবে সদা হাসির ভিডিয়ো তৈরি করতে থাকা রবিন যে এ রকম একটা কাণ্ড করেছেন, তা মানতে রাজি নন তাঁর পরিচিতেরা। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিস্তারিত তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।