৬০ বছরে আবার ঘর বাঁধলেন আশিস বিদ্যার্থী। সই করে বিয়ে করলেন রূপালি বড়ুয়াকে। জানালেন, রূপালিকে বিয়ে করার অনুভূতি একেবারেই অন্য রকম। কী ভাবে আলাপ? সেই গল্প পরে কখনও শোনাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আশিস।
কে এই রূপালি, যাঁর জন্য ৬০ বছর বয়সে দ্বিতীয় বার বিয়ের বন্ধনে জড়ালেন অভিনেতা?
বৃহস্পতিবার সকালে ঘরোয়া পরিসরে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেছেন আশিস আর রূপালি। সন্ধ্যাবেলা ঘরোয়া এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং আত্মীয়রা।
বিয়ের ছবি সমাজমাধ্যমে দিয়েছিলেন রূপালি। সেখান থেকে সেগুলি ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা গিয়েছে, বিয়ের সময় আশিসের পরনে ছিল দক্ষিণ ভারতীয় ধুতি আর ঘিয়ে রঙের পঞ্জাবি। রূপালি পরেছিলেন সাদা রঙের অসমিয়া মেখলা। সঙ্গে সোনার গয়না।
বিয়ের কথা প্রকাশ্যে আসতে সমাজমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আশিসের প্রাক্তন স্ত্রী, তথা অভিনেত্রী শকুন্তলা বড়ুয়ার মেয়ে রাজশী বড়ুয়া। দীর্ঘ দাম্পত্যের শেষে বিচ্ছেদ হয় আশিস এবং রাজশীর। তাঁদের এক ছেলেও রয়েছেন।
রাজশী এবং আশিসের ছেলের নাম অর্থ বিদ্যার্থী। জানা গিয়েছে, বাবার বিয়েতে নাকি অমত করেননি ছেলে।
তবে রাজশী সমাজমাধ্যমে যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, সেখানে ফুটে উঠেছে তাঁর আক্ষেপ। ইনস্টাগ্রামে রাজশী লিখেছেন, ‘‘তোমার কাছের মানুষেরা কখনওই প্রশ্ন করবেন না, তাঁদের কাছে তুমি কী? যেটা তোমায় আঘাত করবে, তাঁরা সেটা করবেন না। মনে রেখো।’’
এর পরের পোস্টেই নাম না করে নতুন জীবনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাজশী। সেটা যে আশিসের উদ্দেশে, তা আর বলে দিতে হয় না। রাজশী লিখেছেন, ‘‘এ বার তোমার আশীর্বাদ পাওয়ার সময় এসেছে। তুমি তার যোগ্য।’’
যাঁর সঙ্গে বাকি জীবন কাটাতে চলেছেন আশিস, সেই রূপালির পরিচয় কী? জানা গিয়েছে, রূপালি অসমের মেয়ে। পেশায় ফ্যাশন ডিজ়াইনার।
কলকাতায় এক নামী ফ্যাশন বিপণির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন রূপালি। তাঁর সাজপোশাক থেকেও স্পষ্ট যে, তিনি কতটা ফ্যাশন সচেতন। শাড়ি পরতে খুব ভালবাসেন। সমাজমাধ্যমের ছবি থেকে তা স্পষ্ট।
রূপালির জন্ম অসমে। ১৯৭৩ সালের ২১ এপ্রিল তিনি জন্মেছিলেন। এখন তাঁর বয়স ৫০ বছর।
রূপালির পড়াশোনা অসমেই। অ্যানথ্রোপলজি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। গুয়াহাটির কটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়েছেন। গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
আশিসের মতো রূপালিরও এটি দ্বিতীয় বিয়ে। জানা গিয়েছে, এর আগে মিতম বড়ুয়া নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তাঁর।
মিতম পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। ইংল্যান্ডে কর্মরত ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
মিতম এবং রূপালির একটি কন্যাসন্তানও রয়েছে। সমাধমাধ্যমে প্রায়ই নিজের কন্যাসন্তানের সঙ্গে ছবি দেন রূপালি।
২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে স্বামীর সঙ্গে একটি কাপড়ের বিপণি খোলেন রূপালি। ২০১৪ সালের অক্টোবরে লিমিটেড সংস্থা হিসাবে নাম নখিভুক্ত করান রূপালি এবং মিতম।
যদিও ২০১৬ সালের নভেম্বরে সেই সংস্থা বন্ধ হয়ে যায়। জানা গিয়েছে, ইংল্যান্ডে তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়। তার পর তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন।
কলকাতায় ফিরে একটি হ্যান্ডলুমের বিপণি খোলেন রূপালি। নিজের বিপণির হয়ে মডেলিংও করেছেন। আর দুই অংশীদারের সঙ্গে একটি ক্যাফেও রয়েছে রূপালির।
রূপালি সমাজমাধ্যমেও বেশ সড়গড়। ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুগামীর সংখ্যা ১১২৪। তিনি নিজে ৯৯১ জনকে অনুসরণ করেন। ইনস্টাগ্রাম রিল থেকে স্পষ্ট, নাচতে ভালবাসেন রূপালি। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতেও ভালবাসেন। সুযোগ পেলেই দেশভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন।
কী ভাবে রূপালির সঙ্গে পরিচয় আশিসের? আশিস নিজে জানিয়েছেন, এই নিয়ে পরে মুখ খুলবেন। তবে সূত্রের খবর, নিজের ভ্রমণের ভ্লগের জন্য প্রায়ই কলকাতায় আসতেন আশিস। তখনই আলাপ রূপালির সঙ্গে।
রূপালি একটি সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, ‘‘কিছু সময় আগে আমাদের পরিচয়। এর পর সম্পর্কটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবি।’’ আশিস কেমন মানুষ? রূপালির কথায়, ‘‘দারুণ মানুষ ও। খুব ভাল মন।’’