এককালে জিলিপি বিক্রি করতেন। পরে হন স্বঘোষিত গুরু। এখানেই শেষ নয়। অভিযোগ, অন্তত ১০০ জন মহিলাকে ধর্ষণ করেছেন তিনি। ধর্ষণের ভিডিয়োও করেছেন। আদালতের রায়ে দোষী সাব্যস্ত সেই ‘জিলিপি বাবা’ ওরফে বিল্লু ওরফে অমরবীর।
ফতেহাবাদের অতিরিক্ত জেলা বিচারক বলবন্ত সিংহকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। শতাধিক মহিলাকে ধর্ষণে আগেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। ধর্ষণের ভিডিয়ো দেখিয়ে নির্যাতিতাদের ব্ল্যাকমেলও করতেন তিনি। তার পর আবার তাঁদের ধর্ষণ করতেন।
২০১৯ সালের ১৯ জুলাই হরিয়ানার তোহানা পুলিশ গ্রেফতার করেন জিলিপি বাবাকে। ধর্ষণের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছিল তাঁর। এর পরেই গ্রেফতারি। তদন্তে নেমে এ রকম আরও ভিডিয়োর সন্ধান পান তাঁরা।
তদন্তে নেমে ১২০টি ভিডিয়োর খোঁজ পেয়েছিল তোহানা পুলিশ। ভিডিয়োগুলি নিজের মোবাইলে তুলেছিলেন জিলিপি বাবা। সেই প্রমাণও পেয়েছে পুলিশ।
৬৩ বছরের জিলিপি বাবার আসল নাম অমরবীর ওরফে অমরপুরী। আদতে পঞ্জাবের মানসা গ্রামের বাসিন্দা তিনি। চার মেয়ে এবং দুই ছেলে রয়েছে তাঁর। স্ত্রী মারা গিয়েছিলেন বহু বছর আগে।
২৩ বছর আগে মানসা থেকে হরিয়ানার ফতেহাবাদের তোহানা গ্রামে চলে আসেন অমরপুরী। সেখানে জিলিপি বিক্রি করতেন তিনি। তোহানায় এসে প্রথম ১৩ বছর সেই কাজটাই করেছিলেন অমরবীর। সে ভাবেই সংসার চালাতেন।
জিলিপি বিক্রির সময় এক তান্ত্রিকের সঙ্গে পরিচয় হয় অমরপুরীর। তাঁর থেকেই শিখেছিলেন তন্ত্রসাধনা।
কয়েক বছরের জন্য অমরপুরী তোহানা থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। এর পর ফিরে এসে একটি বাড়ি তৈরি করেন। সঙ্গে লাগোয়া মন্দির। সেই মন্দিরে ধীরে ধীরে ভক্ত সমাগম হতে থাকে। বেশির ভাগই ছিলেন মহিলা। জিলিপি বাবা নামে পরিচিত হন তিনি।
বলা হত, জিলিপি বাবার উপর ভর হয়। তখন তিনি অনেক অজানা কথা বলেন। সেই শুনতেই হাজির হতেন মহিলারা।
মহিলা ভক্তদের মাদক খাইয়ে ধর্ষণ করতেন অমরপুরী ওরফে জিলিপি বাবা। সেই ঘটনার ভিডিয়োও তুলে রাখতেন। সেই ভিডিয়ো দেখিয়েই পরে ব্ল্যাকমেল করতেন নির্যাতিতাদের। তার পর চলত লাগাতার ধর্ষণ।
২০১৮ সালে এক মহিলা অভিযোগ করেন, মন্দিরের ভিতর তাঁকে ধর্ষণ করেছেন জিলিপি বাবা। পুলিশ গ্রেফতার করে অমরপুরীকে। যদিও ওই মামলায় পরে জামিন পেয়ে যান তিনি। নির্যাতিতা ছিলেন অমরপুরীর এক পরিচিতের স্ত্রী।
২০১৯ সালে একটি ধর্ষণের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর আবার তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর মন্দিরে তল্লাশি চালিয়ে যৌন উত্তেজক ওষুধ, ধর্ষণের ভিডিয়োর হদিস পায় পুলিশ।
তোহানার ভাটিয়া নগরে ছিল অমরপুরীর মন্দির। স্থানীয়রা অনেক দিন আগেই টের পেয়েছিলেন তাঁর কীর্তি। তাতে অমরপুরীর কোনও সমস্যা হয়নি। অন্য শহর, রাজ্য থেকে তখন আসতে থাকেন মহিলা ভক্তরা। তাঁদের উপরও চলতে থাকে ধর্ষণ।
২০১৯ সালের জুলাই থেকে হাজতে জিলিপি বাবা। দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার আদালত তাঁকে ১৪ বছর কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে।