ঠিক ১০০ বছর পর আবার অলিম্পিক্স হল ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে। এই প্রথম অলিম্পিক্সে অনুষ্ঠিত হল ব্রেক ডান্সের প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় সোনার পদক পেয়েছেন জাপানের আমি ইয়ুয়াসা। রুপোর পদক পেয়েছেন লিথুয়ানিয়ার ডমিনিকা বানেভিক এবং ব্রোঞ্জ পেয়েছেন চিনের লিউ কিনগি। তবে এই প্রতিযোগিতার পর চর্চা শুরু হয়েছে ‘বি গার্ল’ ইন্ডিয়া সরজোকে নিয়ে। ব্রেক ডান্সে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছেন তিনি।
নামে রয়েছে ভারত, কিন্তু ভারতের বাসিন্দা নন। ২০০৬ সালের ১৯ মে নেদারল্যান্ডসের হেগে জন্ম ইন্ডিয়ার। তাঁর বাবা দক্ষিণ আমেরিকার সুরিনামের এবং মা নেদারল্যান্ডসের বাসিন্দা।
ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলোর প্রতি আগ্রহ ছিল ইন্ডিয়ার। স্কুলে পড়াকালীন ফুটবলও খেলতেন তিনি।
শৈশবে হিপ-হপ শেখার ইচ্ছা ছিল ইন্ডিয়ার। তাই ফুটবল ছেড়ে হিপ-হপের দিকে ঝুঁকে পড়েন তিনি। আলাদা ভাবে হিপ-হপের প্রশিক্ষণও নেন তিনি।
যত তাড়াতাড়ি হিপ-হপের প্রতি ইন্ডিয়ার আগ্রহ তৈরি হয়েছিল, তত তাড়াতাড়িই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি।
হিপ-হপ ছেড়ে ব্রেক ডান্সের দিকে মন যায় ইন্ডিয়ার। সাত বছর বয়সে ব্রেক ডান্সের প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন তিনি।
ব্রেক ডান্স নিয়ে কেরিয়ার গড়বেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন ইন্ডিয়া। দেশ-বিদেশের নানা প্রান্তে ব্রেক ডান্সের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে শুরু করেন তিনি।
ইন্ডিয়ার যখন মাত্র ১০ বছর বয়স, তখন ডাচ ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করেন তিনি। জয়ী হন অনূর্ধ্ব ১২ বিভাগে।
টন স্টিনভুরডেনের কাছ থেকে ব্রেক ডান্সের প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন ইন্ডিয়া। ব্রেক ডান্সে দক্ষ হয়ে ওঠায় একাধিক নাচের দলে যোগও দেন তিনি।
জাতীয় স্তরের পর আন্তর্জাতিক স্তরেও খেলতে চেয়েছিলেন ইন্ডিয়া। সেই উদ্দেশ্যে দেশ-বিদেশের নানা জায়গায় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে শুরু করেন তিনি।
মাত্র ছ’মাসের ব্যবধানে পর পর বহু আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করেন ইন্ডিয়া। ২০২২ সালে ডাচ চ্যাম্পিয়নশিপের পর একে একে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ এবং রেড বুল বিসি ওয়ান ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীর মুকুট পরেন তিনি।
শুক্রবার প্যারিসে ব্রেক ডান্সের ‘ব্রেকিং-বি গার্লস’ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন ইন্ডিয়া। ১২টি দেশ থেকে মোট ১৭ জন এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন।
অলিম্পিক্সে ৮-১৯ পয়েন্টে লিউয়ের কাছে হেরে যান ইন্ডিয়া। ব্রোঞ্জ পদক ভাগ্যে জোটেনি তাঁর।
১৮ বছর বয়সি ইন্ডিয়া ইতিমধ্যেই নজর কাড়তে শুরু করেছে নেটব্যবহারকারীদের। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামের পাতায় তরুণীর অনুগামীর সংখ্যা ৩৩ হাজারের গণ্ডি পার করে ফেলেছে।