‘হর হর শম্ভু…শম্ভু…শিব মহাদেব..শম্ভু…শম্ভু’। এই গানটি বাচ্চা থেকে বুড়ো সকলের হৃদয় জয় করেছে। শুধু শিবভক্তরাই নন, আমজনতাও এই গানের সুর-তালে মুগ্ধ। যাঁর শিবভক্তির গান গোটা দেশ মাতাচ্ছে, সেই গায়ক আসলে কে?
‘হর হর শম্ভু’ খ্যাত সেই গায়িকা হলেন অভীলিপ্সা পাণ্ডা। জীতু শর্মার সঙ্গে ডুয়েটে ‘হর হর শম্ভু’ গান গেয়ে মন মাতাচ্ছেন আট থেকে আশির।
ওড়িশার কেওনঝড়ের বারবিলে এক ব্রাহ্মণ পরিবারে ২০০১ সালে জন্ম অভীলিপ্সার। তাঁরা দুই বোন।
অভীলিপ্সার বাবা অশোক পাণ্ডা ভারতীয় সেনার প্রাক্তন কর্মী। বর্তমানে একটি বেসরকারি সংস্থায় ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন। তাঁর মা পুষ্পশ্রী পেশায় শিক্ষক।
শৈশবেই গানের সঙ্গে পরিচয় হয় অভীলিপ্সার। তাঁর ঠাকুরদা গানের জন্য বারবিলে বেশ পরিচিত। ঠাকুরদার হাত ধরেই গানের জগতে পা রাখেন অভীলিপ্সা।
ঠাকুরদার কাছে ধ্রুপদী সঙ্গীতে তালিম নেন তিনি। চার বছর বয়সে ওডিশি ধ্রুপদী সঙ্গীত শেখা শুরু করেন। ১৭ বছর বয়সে ওড়িশায় গানের একটি রিয়ালিটি শো-তে অংশ নেন অভীলিপ্সা। সেই সময় তাঁর একটি গান বেশ ভাইরাল হয়। সেই গান ভাইরাল হওয়ার পরেই ‘হর হর শম্ভু’ গানের প্রস্তাব পান। তার পরই রাতারাতি তাঁর পরিচিতি ছড়িয়ে পড়ে সেই গানের মধ্য দিয়ে।
২০২২-এর এপ্রিলে ‘হর হর শম্ভু’ গানের রেকর্ডিং করেন অভীলিপ্সা। গানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পোশাক পরে স্টুডিয়োয় এসেছিলেন তিনি। শাড়িকে ধুতির মতো পরে, কালো টিশার্ট এবং কপালে টিকা লাগিয়ে গানের রেকর্ডিং করেন।
তাঁর গাওয়া গানটি যে এত জনপ্রিয় হবে সেটা প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেননি অভীলিপ্সা। তাঁর কথায়, ‘‘ভেবেছিলাম খুব একটা সাড়া পাব না। কিন্তু এই গান এখন বাচ্চা-বুড়ো সকলের মুখে মুখে। ভালই লাগছে।’’ ১০ বছর বয়সে স্টুডিয়োতে শিশুশিল্পী হিসাবে প্রথম রেকর্ডিং করেন।
আটটি ভাষায় গান করতে পারেন অভীলিপ্সা। ইংরেজি, বাংলা, অসমীয়া, মরাঠি, মারওয়াড়ি, গুজরাতি, তামিল ভাষায় গান করতে পারেন। শুধু গানই নয়, ক্যারাটেও জানেন অভীলিপ্সা। ক্যারাটেতে তিনি ব্ল্যাক বেল্ট পেয়েছেন। সামুদ্রিক জীব নিয়ে গবেষণা করতে চান অভীলিপ্সা। ইচ্ছা সমুদ্রবিজ্ঞানী হওয়ার।
গানের মধ্যে দিয়েই মানুষের মধ্যে আধ্যাত্মিক বিষয় সঞ্চারিত করতে চান তিনি। যদি তাঁর এই উদ্দেশ্য সফল হয়, তা হলে এর থেকে বড় পাওনা আর কিছু হতে পারে না বলেই এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন অভীলিপ্সা।