পুরো নাম ক্যাসান্ড্রা মে স্পিটম্যান। তবে সঙ্গীত জগতে তিনি ক্যাসমে নামেই পরিচিত। গোটা বিশ্ব তাঁকে এই নামে চেনে। তাঁর গান বড়ই প্রিয় প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর।
নিজেই গান লেখেন ক্যাসমে। বয়স ২১। জন্ম ২০০২ সালের ১০ মে। জার্মানির ডুইসবার্গে।
একেবারে ছোটবেলা থেকেই তিনি গান ভালবাসতেন। পিয়ানো বাজাতেন। পরবর্তী কালে তবলা বাজানোও শেখেন। তবে খ্যাতি ছড়ায় গায়িকা হিসাবে।
জন্ম থেকে দৃষ্টিহীন হলেও সুর ও তালে দখল ছিল তাঁর। ২০১৭ সালে বার্কলে কলেজ অফ মিউজ়িক থেকে সঙ্গীতচর্চার জন্য বৃত্তি পান ক্যাসমে।
প্রথম যখন তাঁর গান খ্যাতি পায় তখন ক্যাসমের বয়স মাত্র তিন। একটু বড় হতে আফ্রিকান ড্রাম বাজানোও শিখতে শুরু করেন।
২০১৫ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে জার্মানির একটি প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত ব্যক্তিত্বের পুরস্কার পান তিনি।
পরের বছর ২০১৬ সালে তাঁর গাওয়া ‘গোয়িং হোম’ সাড়া ফেলে দেয় একটি টিভির অনুষ্ঠানে। এর পরে রেডিয়ো এবং টিভিতে নিয়মিত গায়িকা হয়ে ওঠেন ক্যাসমে।
এখন সমাজমাধ্যমে খুবই জনপ্রিয় ক্যাসমে। ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, ইউটিউব সর্বত্র রয়েছেন তিনি। ইনস্টাগ্রামে তাঁর ফলোয়ার সংখ্যা দু’লাখ ৬০ হাজারের বেশি।
ভারতেও ক্যাসমের গান জনপ্রিয়। কারণ, তিনি হিন্দি, মালয়ালম, তামিল, উর্দু, অসমিয়া, বাংলা, সংস্কৃত এবং কন্নড়ের মতো ভারতীয় ভাষাতেও সঙ্গীত আয়ত্ত করেছেন।
ক্যাসান্দ্রা মে স্পিটম্যান কখনও ভারতে না এলেও ভক্তিমূলক গান-সহ তাঁর তামিল গানের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মন ছুঁয়ে ফেলে।
সেপ্টেম্বর মাসের ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে মোদী ক্যাসমের কথা প্রথম উল্লেখ করেন। তিনি এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে ক্যাসমের প্রশস্তি করে পোস্টও করেন। সেখানে ভারতীয় সংস্কৃতি ও সঙ্গীতের প্রতি ক্যসমের ভালবাসার প্রশংসা করেন মোদী।
মোদী ক্যাসমের দু’টি গান শেয়ার করেছিলেন। প্রথম গানটি ছিল শ্রীহরি স্তোত্রম ‘জগৎ জানা পালাম’ সংস্কৃত ভাষায় যা ভগবান বিষ্ণুকে উৎসর্গ করা হয়েছিল এবং দ্বিতীয়টি ছিল কন্নড় গান। মোদী বলেছিলেন, ‘‘কন্নড়-সংস্কৃত ছাড়াও, স্পিটম্যান হিন্দি, মালয়ালম, তামিল, উর্দু, অসমিয়া এবং বাংলার মতো আরও অনেক ভারতীয় ভাষার সঙ্গীত আয়ত্ত করেছেন।’’
মোদী গানগুলি পোস্ট করলেও গায়িকার নাম প্রথমে প্রকাশ করেননি। তিনি বলেছিলেন, ‘‘মিষ্টি গলা এবং প্রতিটি শব্দে প্রতিফলিত আবেগের মাধ্যমে ঈশ্বরের প্রতি তাঁর ভালবাসা অনুভব করতে পারি। যদি আমি আপনাদের বলি যে, এই সুরেলা কণ্ঠটি জার্মানির মেয়ের, সম্ভবত আপনারা আরও অবাক হবেন। এই কন্যার নাম ক্যাসান্দ্রা মে স্পিটম্যান।’’
সোমবার মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনে ক্যাসমের একটি গান এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করেছেন মোদী। মহাত্মা গান্ধীর অন্যতম প্রিয় ভজন কবি নরসি মেহতার লেখা ‘বৈষ্ণব জন তো তেনে কহিয়ে’। মোদী লিখেছেন, ‘‘গান্ধীজির ভাবনা বিশ্বের সব মানুষকে এক সুরে বেঁধেছে।’’
ক্যাসমের গাওয়া ‘বৈষ্ণব জন তো’ ভজন পোস্ট করে মোদী লিখেছেন, ‘‘আমি এই গায়িকার কথা সম্প্রতি ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে বলেছিলাম।’’ গানটি ক্যাসমের ইনস্টাগ্রাম পেজে রয়েছে।