জাতীয় বা রাজ্য সড়কের মাঝে মাঝেই থাকে টোল প্লাজ়া। সেখানে এসে দাঁড়ায় যান। টাকা দিয়ে তবেই মেলে আগে চলার অনুমতি। গোটা দেশে যত টোল প্লাজ়া ছড়িয়ে রয়েছে, তার বেশির ভাগেরই নেপথ্যে রয়েছে একটিমাত্র সংস্থা।
সারা দেশে জাতীয় সড়কে ছড়িয়ে রয়েছে টোল প্লাজ়া। রাজ্য সড়কেও রয়েছে। সড়ক মেরামতি এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য টাকা দিতে হয় সব গাড়িকে। সেই টাকা সংগ্রহ করা হয় এই প্লাজ়াতেই।
রাজ্য সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য টোল সংগ্রহ করে আরটিও (রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অফিস)। রাজ্য সরকার সেই টাকা দিয়ে রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ করে।
জাতীয় সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকা ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এনএইচএআই)। তারাই টোল সংগ্রহের দায়িত্বে থাকে। এনএইচএআই টোল বসিয়ে টাকা সংগ্রহ করে।
এনএইচএআই-এর নির্দেশিকা মেনে কিছু যানকে জাতীয় সড়কে চলার সময় টোল দিতে হয় না। অ্যাম্বুল্যান্স, দমকলের গাড়ি, পুলিশের গাড়িকে টোল দেওয়ার আওতায় রাখা হয় না।
প্রতিরক্ষা বাহিনীর গাড়ির থেকেও টোল আদায় করা হয়। না। প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের মতো ভিভিআইপির গাড়ি থেকেও টোল আদায় করা হয় না।
দেশের একাধিক রাজ্যের বেশ কিছু টোল প্লাজ়া থেকে টোল সংগ্রহের দায়িত্বে রয়েছে একটিই বেসরকারি সংস্থা।
১৯৯৪ সালে এই সংস্থা তৈরি হয়। প্রতিষ্ঠাতা কিশোর আগরওয়াল। এখন দেশে যে সব বেসরকারি সংস্থা টোল সংগ্রহের দায়িত্বে রয়েছে, তাদের মধ্যে অগ্রগণ্য কিশোরের সংস্থা।
কিশোর ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক। ২০০৮ সালের নীতি অনুযায়ী, দেশে একটি টোল প্লাজ়া থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরত্বে পরের টোল প্লাজ়া রাখতে হবে।
কোনও সড়ক তৈরি হলে টোল প্লাজ়া তৈরি করে দেয় সরকার। কত টোল হবে, তা নির্ধারণও করে দেয়। এই বিপুল সংখ্যক টোল প্লাজ়ার দায়িত্ব সামলানো একা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। সেই দায়িত্ব দেওয়া হয় একাধিক বেসরকারি সংস্থাকে।
দেশের ১৩টি রাজ্যে টোল সংগ্রহ করে এই সংস্থা। অন্তত ২০০টি টোল প্লাজ়া সামলায় কিশোরের সংস্থা। বেশ কিছু রাজ্য সড়কেও টোল প্লাজ়া রয়েছে এই সংস্থার।
যারা এই সংস্থা থেকে পরিষেবা নেয়, সেই তালিকায় রয়েছে এনএইচএআই, মহারাষ্ট্র স্টেট রোড ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন (এমএসআরডিসি), পাবলিক ওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট (পিডব্লুডি)।
গোটা দেশে সড়ক এবং পরিকাঠামো উন্নয়নে বড় ভূমিকা রয়েছে কিশোরের সংস্থার। কিশোরের হাত ধরেই উন্নতি হয়েছে সংস্থার।
২০১১-১২ অর্থবর্ষে সংস্থার রাজস্বের পরিমাণ ছিল ৩০ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে সংস্থার রাজস্বের পরিমাণ ২,৭০০ কোটি টাকা।
২০১০ এই সংস্থা পরিকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রেও প্রবেশ করে। এই উদ্যোগকে পুরস্কৃত করে আহমদনগর পুরসভা।
এখন এই সংস্থায় কাজ করেন ৪,০০০ জন। গোটা দেশে টোল সংগ্রহের রূপরেখা অনেকটাই বদলে দিয়েছে এই সংস্থা। নেপথ্যে রয়েছেন ‘টোল কিং’ কিশোর।