অভিনয় নয়, বরং মডেলিংয়ের মাধ্যমে নিজের কেরিয়ার শুরু করেছিলেন বলিপাড়ার সত্তরের দশকের প্রথম সারির চিত্রনাট্যকার সেলিম খানের পুত্র সলমন খান। বর্তমানে যিনি বলিউডে ‘ভাইজান’ নামে পরিচিত, তাঁর থেকে নাকি তিন গুণ বেশি পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন সলমনের নায়িকা।
পুরনো এক সাক্ষাৎকারে সলমনের পারিশ্রমিকের বিষয়ে খোলসা করেছেন বলিপাড়ার অভিনেত্রী পরভিন দস্তুর। ১৯৮৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’ ছবিতে সীমার চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় পরভিনকে। এই ছবিতেই মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সলমন।
১৯৮৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘বিবি হো তো অ্যায়সি’ ছবিতে স্বল্পদৈর্ঘ্যের চরিত্রে প্রথম অভিনয় করেছিলেন সলমন। কিন্তু অভিনেতার কেরিয়ারের প্রথম ছবি হিসাবে ধরা হয় ‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’কে।
বলি পরিচালক সুরজ বরজাতিয়ার হাত ধরে বলিপাড়ায় অভিনেতা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন সলমন। রোম্যান্টিক ঘরানার ছবি ‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’তে সলমনের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন ভাগ্যশ্রী।
‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’ ছবির মাধ্যমে অভিনয়ে হাতেখড়ি হয় ভাগ্যশ্রীর। পরিচালনার ক্ষেত্রেও হাতেখড়ি হয়েছিল সুরজের। কিন্তু এই ছবিতে বলি অভিনেত্রীর চেয়ে অনেক কম পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন সলমন।
পরভিন সাক্ষাৎকারে জানান, ‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’ ছবিতে অভিনয় করে সলমন পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন ৩১ হাজার টাকা। কিন্তু তাঁর বিপরীতে অভিনয় করে সলমনের চেয়ে তিন গুণ বেশি আয় করেছিলেন ভাগ্যশ্রী।
‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’ ছবিতে অভিনয় করে ভাগ্যশ্রী দেড় লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন বলে সাক্ষাৎকারে জানান পরভিন।
ভাগ্যশ্রী যে দেড় লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন, তা শুনে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন ছবির সঙ্গে জড়িত তারকারা। বিশেষ করে সলমনের চেয়ে যে অভিনেত্রী বেশি উপার্জন করেছেন তা নিয়ে আলোচনাও হয়েছিল বিস্তর। বলিপাড়ায় অভিনেতারা যে অভিনেত্রীদের থেকে পারিশ্রমিক বহু গুণ বেশি পান, তা নিয়ে বিতর্ক চলে অহরহ। কিন্তু ‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’ ছবির ক্ষেত্রে ঘটল বিপরীত ঘটনা।
রাজশ্রী প্রোডাকশনস ‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’ ছবির প্রযোজনার দায়িত্বে ছিল। পরভিন জানান, ‘‘রাজশ্রী প্রোডাকশনস কখনও তারকাদের হতাশ করে না। সঠিক সময়ে তারকাদের বাড়িতে চেক পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’’
পরভিনের দাবি, তিনি বলিপা়ড়ার এমন অনেককে চেনেন যাঁদের সঙ্গে কাজ করার পরেও পারিশ্রমিক পাওয়া যায় না। কিন্তু রাজশ্রী প্রোডাকশনসের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা কখনও ঘটে না।
‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’ ছবির সেটে মেক আপ রুম থেকে শুরু করে খাবার— সব কিছুই ভাল মানের ছিল বলে জানান পরভিন। গোড়ার দিকে রাজশ্রী প্রোডাকশনস মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক দিত না। পারিশ্রমিক হিসাবে এক থেকে দু’হাজার টাকা পেতেন তারকারা, এমনটাই দাবি করেন পরভিন।
তবে সলমনের জীবনে প্রথম উপার্জিত অর্থের পরিমাণ ৭৫ টাকা। এক পুরনো সাক্ষাৎকারে অভিনেতা জানান, মুম্বইয়ের তাজ হোটেলের পিছনে কোনও এক অনুষ্ঠানে নাচ করেছিলেন সলমন। সেখানে পারফর্ম করেই ৭৫ টাকা আয় করেছিলেন তিনি।
সলমন বলেন, ‘‘আমার এক বন্ধু তাজ হোটেলের পিছনে কোথাও পারফর্ম করতে যাচ্ছিল। আমাকেও ওর সঙ্গে যেতে বলল। আমিও রাজি হয়ে গিয়েছিলাম। ভাবলাম খুব মজা হবে। সেখানে পারফর্ম করেই আমার প্রথম আয়। ৭৫ টাকা।’’
সলমন তাঁর কেরিয়ারে নামী সংস্থার বিজ্ঞাপনেও অভিনয় করেছেন। ঠান্ডা পানীয়ের একটি নামকরা সংস্থার বিজ্ঞাপনে অভিনয় করে ৭৫০ টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন সলমন।
সলমন সাক্ষাৎকারে জানান, বিজ্ঞাপনে অভিনয়ের পর তাঁর পারিশ্রমিক এক লাফে দ্বিগুণ পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। ৭৫০ টাকা থেকে এক ধাক্কায় ১৫০০ টাকা পারিশ্রমিক পান সলমন।
পারিশ্রমিক হিসাবে দীর্ঘ দিন ধরে ১৫০০ টাকা পেয়েছেন সলমন। তার পর ‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। এই ছবি তাঁর কেরিয়ারে নতুন মাইলফলক গড়ে তোলে। এর পর আর সলমনকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। তাঁর পারিশ্রমিক এখন কোটির ঘরে।
চলতি বছরে ‘কিসি কা ভাই কিসি কি জান’ ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে সলমনকে। বলিপাড়া সূত্রে খবর, এই ছবিতে অভিনয় করে ৫০ কোটি টাকা আয় করেছেন সলমন।
চলতি বছরের নভেম্বর মাসে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়ার কথা ‘টাইগার ৩’ ছবিটির। যশরাজ ফিল্মস প্রযোজিত এই ছবিতে অভিনয় করেছেন সলমন খান, ক্যাটরিনা কইফ এবং ইমরান হাশমি। ক্যামিয়ো চরিত্রে দেখা যাবে শাহরুখ খানকেও।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে যে, ‘টাইগার ৩’ ছবিতে অভিনয় করে আনুমানিক ১০০ কোটি টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছেন সলমন।