Lok Sabha Election 2024

‘অসাংবিধানিক’ নির্বাচনী বন্ড থেকে সবচেয়ে বেশি লক্ষ্মীলাভ কোন দলের? বিজেপির আয় হয়েছে কত?

ভোটে কালো টাকার খেলা বন্ধ করার কথা বলে নির্বাচনী বন্ড চালু করেছিল মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন ২০১৮ সালে প্রয়াত অরুণ জেটলি নির্বাচনী বন্ডের কথা ঘোষণা করেছিলেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:৫৮
Share:
০১ ২৩

নির্বাচনী বন্ড নিয়ে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছে, নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প ‘অসাংবিধানিক’ এবং তা ‘বাতিল হওয়া উচিত’।

০২ ২৩

বৃহস্পতিবারের শুনানিতে শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়, নির্বাচনী বন্ড তথ্য জানার অধিকার (আরটিআই) আইনকে লঙ্ঘন করছে।

Advertisement
০৩ ২৩

ভোটে কালো টাকার খেলা বন্ধ করার কথা বলে নির্বাচনী বন্ড চালু করেছিল মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন ২০১৮ সালে প্রয়াত অরুণ জেটলি নির্বাচনী বন্ডের কথা ঘোষণা করেছিলেন।

০৪ ২৩

২০১৭-র অর্থবিলের মাধ্যমে আইনে একগুচ্ছ সংশোধনী এনে মোদী সরকার ২০১৮ থেকে নির্বাচনী বন্ড চালু করেছিল। এর ফলে কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিতে চাইলে, বন্ড কিনে সংশ্লিষ্ট দলকে দিতে হবে।

০৫ ২৩

এক হাজার, ১০ হাজার, এক লক্ষ, ১০ লক্ষ এবং এক কোটি টাকা মূল্যের বন্ড পাওয়া যাবে। রাজনৈতিক দলগুলি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে সেই বন্ড ভাঙিয়ে নিতে পারবে। কিন্তু কে, কত টাকা দিচ্ছেন, তা বোঝা যাবে না। যাই হোক, এ নিয়ে সেই সময় কম জলঘোলা হয়নি।

০৬ ২৩

নির্বাচনী বন্ড চালু হওয়ার পর বিষয়টির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। বিরোধী দল এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, এতে অস্বচ্ছতাই বাড়বে। বিশ্বের কোনও দেশেই এমন ব্যবস্থা নেই, যেখানে বন্ড ভাঙাচ্ছে রাজনৈতিক দল। ফলে কোন কর্পোরেট সংস্থা কাকে ভোটে সাহায্য করছে, তার বিনিময়ে ক্ষমতাসীন দলের থেকে কী সুবিধে আদায় করছে, তা জানার কোনও উপায় নেই। এই নিয়ে মামলাও দায়ের হয়েছিল। সেই মামলাতেই বৃহস্পতিবার রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট।

০৭ ২৩

তবে এই বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই) কয়েকশো কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড বিক্রি করেছে।

০৮ ২৩

তা হলে নির্বাচনী বন্ড নিয়ে সুপ্রিম রায়ের আগে পর্যন্ত কারা লাভবান হয়েছে?

০৯ ২৩

রিপোর্ট বলছে, এসবিআই এখনও পর্যন্ত সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি নির্বাচনী বন্ড বিক্রি করেছে৷

১০ ২৩

২০১৭-’১৮ এবং ২০২২-’২৩ এর মধ্যে বিক্রি হওয়া মোট ১২,০০৮ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ডের মধ্যে প্রায় ৫৫ শতাংশ, অর্থাৎ ৬,৫৬৪ কোটি টাকা পেয়েছে বিজেপি।

১১ ২৩

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাঁচ বছরের বিক্রি হওয়া নির্বাচনী বন্ডের মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছে ৯.৫ শতাংশ, অর্থাৎ ১,১৩৫ কোটি টাকা।

১২ ২৩

তৃণমূল ওই একই সময়ের মধ্যে নির্বাচনী বন্ড থেকে প্রায় ৭০০-৮০০ কোটি টাকা পেয়েছে।

১৩ ২৩

স‌ংবাদমাধ্যম ‘দ্য হিন্দু’র একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২০২২-২৩ সালে বিজেপির মোট আয়ের ৫৪ শতাংশ নির্বাচনী বন্ড থেকে এসেছে। যার পরিমাণ প্রায় ২,১২০ কোটি টাকা।

১৪ ২৩

‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর)’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৮ থেকে ২৩ সালের মধ্যে বিজেপির মোট অনুদানের ৫২ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৫,২৭২ কোটি টাকা এসেছে নির্বাচনী বন্ড থেকে।

১৫ ২৩

কংগ্রেস ২০২২-’২৩ সালে নির্বাচনী বন্ড থেকে আয় করেছে ১৭১ কোটি টাকা।

১৬ ২৩

আঞ্চলিক দলগুলিও নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা পেয়েছে। ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস) ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে ৫২৯ কোটি টাকা পেয়েছে।

১৭ ২৩

দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তৃণমূল। নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে প্রাপ্ত টাকার পরিমাণ ৩২৫ কোটি।

১৮ ২৩

এর পরে রয়েছে বিজেডি। ওই বছর ওড়িশার বিজেডি ১৫২ কোটি রুপি এবং অন্ধ্রপ্রদেশের ওয়াইএসআর কংগ্রেস ৫২ কোটি টাকা আয় করেছে নির্বাচনী বন্ড থেকে।

১৯ ২৩

২০২১-’২২ সালে তৃণমূল ৫২৮ কোটি টাকা আয় করেছিল নির্বাচনী বন্ড থেকে। ডিএমকে পেয়েছিল ৩০৬ কোটি টাকা। অন্য দিকে ওই অর্থবর্ষে বিজেডি এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেস, যথাক্রমে ২৯১ কোটি এবং ৬০ কোটি টাকা পেয়েছিল নির্বাচনী বন্ড থেকে।

২০ ২৩

২০১৯ লোকসভা নির্বাচন দেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচন, যার আগে নির্বাচনী বন্ড বিক্রি হয়েছিল। ব্লুমবার্গ রিপোর্ট অনুযায়ী, সেই নির্বাচন বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল নির্বাচনগুলির মধ্যে একটি ছিল।

২১ ২৩

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল মিলে প্রায় ৮৭০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে যা ব্যয় হয়েছিল, তার দ্বিগুণেরও বেশি।

২২ ২৩

তবে সেই নির্বাচনী বন্ডের নিয়ম আর থাকল না। চালু হওয়ার প্রায় সাত বছর পরে সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে ঘোষণা করল। বৃহস্পতিবার এই নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থাকে ‘কুইড প্রো কুয়ো’ বলে মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ কোনও কিছুর বিনিময়ে কাউকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া।

২৩ ২৩

সুপ্রিম কোর্ট এসবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে, অবিলম্বে যেন ওই বন্ড দেওয়া বন্ধ করে তারা। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, বন্ড সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দিতে হবে এসবিআইকে। ভারতের রাজনৈতিক দলগুলিকে কারা কয়েকশো কোটি টাকা দান করেছে, তা-ও আর গোপন থাকবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement