রাশিয়ার দাবি, এই ক্ষেপণাস্ত্রের নাম শুনলেই পিলে চমকে উঠবে সকলের! কারণ, এটিই নাকি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র।
নাম ‘সারমাট আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র’। বুধবারই তার সফল উৎক্ষেপণ সারল রাশিয়া।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজেই এই সংবাদ জানিয়েছেন। ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণে বিশ্বের অন্য দেশও চিন্তিত।
পুতিনের দাবি, পৃথিবীর যে কোনও লক্ষ্যে নির্ভুল আঘাত হানতে সক্ষম সারমাট।
কেন একে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র বলা হচ্ছে? অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি হল এটি একসঙ্গে একাধিক পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম। পরমাণু অস্ত্র বহন করে বিশ্বের যে কোনও লক্ষ্যে নির্ভুল আঘাত হানতে পারে সারমাট।
দ্বিতীয়ত, এই ক্ষেপণাস্ত্রে ১০ বা তার বেশি ‘ওয়ারহেড’ যোগ করা যায়। অর্থাৎ, তা একাধিক যুদ্ধাস্ত্র নির্ভুল ভাবে ছুড়তে পারে। যার ফল, সাধারণ ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়ে সারমাটের ধ্বংসের ক্ষমতা অনেক বেশি।
এমনই প্রযুক্তিতে এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি হয়েছে যে একে ধরতে পারবে না শত্রুপক্ষের কোনও রেডার। ফলে শত্রুপক্ষের অজান্তেই এই ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে বলে দাবি রুশ সংবাদমাধ্যমের।
রুশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, এই ক্ষেপণাস্ত্রটি নিয়ে প্রায় ২২ বছর ধরে গবেষণা করা হয়েছে। গবেষণা করে এই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যা অন্য ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়ে কয়ের গুণ বেশি শক্তিশালী।
বলা হচ্ছে, সারমাটের তিনটি স্তর। ১৮ হাজার কিলোমিটার পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে তরল দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করা হয়।
সারমাট আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের দৈর্ঘ্য ৩৫.৫ মিটার। ব্যাস তিন মিটার।
পশ্চিমী বিশ্ব সারমাটকে ‘দ্বিতীয় শয়তান’-এর তকমা দিয়েছে। রাশিয়ার আগামী প্রজন্মের ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে রয়েছে পুতিনের ভাষায় ‘অজেয়’ কিঞ্ঝল এবং আভানগার্ড হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র। তার সঙ্গে এ বার যুক্ত হল সারমাটও।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, সারমাটের সফল উৎক্ষেপণটি সম্পন্ন হয়েছে উত্তর রাশিয়ার প্লেসেটস্ক কসমোড্রোমে।
রুশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, ছ’হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যে নির্ভুল ভাবে আঘাত হানতে পেরেছে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি।
সফল উৎক্ষেপণের পর পুতিন বলেছিলেন, ‘‘পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম এই হাতিয়ার ক্রেমলিনের শত্রুদের দু’বার ভাবতে বাধ্য করবে। কারণ পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তের যে কোনও বিন্দু এখন এর পাল্লার মধ্যে এসেছে।’’
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ এই ক্ষেপণাস্ত্র হাতে পাবে রুশ পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারকারী সেনা।