১ ফেব্রুয়ারি সংসদে বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। মঙ্গলবার আর্থিক সমীক্ষার রিপোর্ট সংসদে জমা পড়েছে। এই রিপোর্টে দেশের এক বছরের অর্থনীতির হালহকিকতের গাণিতিক পরিসংখ্যান তুলে ধরা হবে।
কোভিড অতিমারির পর ভারতের অর্থনীতি সামান্য ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আগামী অর্থবর্ষের বাজেট কেমন হবে? অর্থনীতিবিদ এবং সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী কোন কোন খাতে পরিবর্তন আনা হতে পারে তার একটি ধারণা করা হয়েছে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, আয়করের হারে সামান্য পরিবর্তন করতে পারেন নির্মলা। দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণি এবং দরিদ্রদের হাতে নগদের পরিমাণ বাড়াতে এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন অর্থমন্ত্রী।
ভারতের বিভিন্ন গ্রামে চাকরির সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো থেকে শুরু করে স্থানীয় কোনও জিনিস উৎপাদনের বৃদ্ধির দিকে নজর দেওয়া হতে পারে বলে অর্থনীতিবিদদের দাবি। এর ফলে অতিরিক্ত খরচ করতে পারে সরকার।
দেশে এই মুহূর্তে ধনী এবং দরিদ্রের মধ্যে ফারাক বেড়েই চলেছে। অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, এই ব্যবধান কমাতে বাজেটে বেশ কিছু সামাজিক কর্মসূচির কথা ঘোষণা করতে পারেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
মুদ্রাস্ফীতি রুখে অর্থনীতির গতিকে অতিরিক্ত জ্বালানি দেওয়ার চেষ্টাও করা হতে পারে এই বাজেটে।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সারা বছরের ব্যয়ের যে চূড়ান্ত পরিকল্পনা প্রকাশ্যে এনেছেন তাতে ক্রমবর্ধমান সুদের হার এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির মন্থর গতি ধরা পড়ে।
ব্লুমবার্গের একটি সমীক্ষা পর্যবেক্ষণ করে অর্থনীতিবিদেরা জানিয়েছেন, এই বছর রাজস্ব ঘাটতি মোট জাতীয় উৎপাদনের ৬.৪ শতাংশ থেকে কমে ৫.৯ শতাংশে আসতে পারে।
দ্য ইকনমিক টাইমস সূত্রে খবর, বেসরকারি বিমান, হেলিকপ্টার, ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র এবং গয়নার উপর আমদানি শুল্ক বাড়াতে পারেন অর্থমন্ত্রী। এর ফলে দেশের বাজারে দেশীয় জিনিসের কেনাকাটা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
গত ১৬ মাসের মধ্যে ভারতে বেকারত্ব বেড়ে ৮.৩ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। ফলে এ বারে বাজেটে গ্রামীণ এলাকায় চাকরির সুবিধার দিকে নজর দেওয়া হতে পারে বলে আশা করা যায়।
গ্রামের উন্নতির দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। গ্রামীণ রাস্তাঘাট নির্মাণ, শস্য বিমা এবং কম খরচে ঘরবাড়ি নির্মাণের জন্য পরিকল্পনা থাকতে পারে বাজেটে।
এই বাজেট বয়স্ক এবং শিশুকন্যাদের ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের পরিধিকে প্রশস্ত করতে পারে।
জিনিসপত্র পরিবহণ করার জন্য শিপিং কন্টেনার এবং খেলনা তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন আর্থিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হতে পারে।
শেয়ার মার্কেটের আশা, লং টার্ম ক্যাপিটাল গেনের ক্ষেত্রে এই বাজেটে কর ছাড় দেওয়া হবে।
বাজারে তেলের দামের ওঠাপড়া রুখতে সরকারের তরফে তৈল সংস্থাগুলিকে ভর্তুকি দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গত বছরের বাজেটে ক্রিপ্টোকারেন্সি সংক্রান্ত সম্পত্তির উপর যে পরিমাণ কর নির্ধারণ করা হয়েছিল তা কমানো হতে পারে বলেও আশা করছেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ।
সোনার কালোবাজারি রুখতে আমদানি শুল্কের উপর ছাড়ের আশা করা হচ্ছে।
চিন-ভারত সীমান্তে সৃষ্ট উত্তেজনার দিকে নজর রেখে এই অর্থবর্ষে প্রতিরক্ষা বাজেটের পরিমাণ বাড়ানোর আশা রাখা হচ্ছে।