জঙ্গলমহলে মাওবাদী তৎপরতা প্রতিরোধে ফের পথে নামল ‘বজ্র’। চলতি মাসে মাওবাদীদের ডাকা বন্ধে জঙ্গলমহলের কিছু অংশে ভাল প্রভাব পড়ায় ফের আঁটসাঁট হচ্ছে নিরাপত্তা।
প্রায় দেড় দশক আগে জঙ্গলমহলে মাওবাদী অশান্তির সময় ল্যান্ডমাইন-নিরোধক গাড়িতে টহলদারি শুরু করেছিল কেন্দ্রীয় আধাসেনা ও পুলিশ।
জঙ্গলমহলের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পাল্টানোয় দীর্ঘ দিন ধরে পড়ে থেকে মাইন নিরোধক কয়েকটি গাড়ি অকেজো হয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ।
কয়েক বছর আগে বাঁকুড়া জেলা পুলিশ নতুন করে তাদের হাতে থাকা পাঁচটি ‘মাইন প্রোটেক্টেড ভেহিকেল’ মেরামতিতে উদ্যোগী হয়েছিল।
.ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা (ডিআরডিও) প্রাথমিক ভাবে দাঙ্গাদমন যান হিসেবে ‘বজ্র’-এর নকশা তৈরি করেছিল। প্রথম পর্যায়ের যানগুলি উৎপাদন করেছিল স্বরাজ মাজদা সংস্থা।
উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য কাঁদানে গ্যাস ছোড়ায় স্বয়ংক্রিয় বন্দুক, রবার বুলেট ছোড়ার বন্দুক, ‘পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম’ এবং সার্চ লাইটের ব্যবস্থা ছিল যানে।
‘বজ্র’ যানে সওয়ার হতে পারেন ১৪ জন নিরাপত্তাকর্মী। তাদের ঢিল-পাথরের আঘাত থেকে বাঁচাতে জানালাগুলিতে রয়েছে শক্ত তারের জাল।
সঙ্কীর্ণ গলি, জনাকীর্ণ এলাকা এবং খারাপ রাস্তায় নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিআরডিও-র নকশায় তৈরি যানে রয়েছে ‘থ্রি সাইড কন্ট্রোল অ্যাকসেসিবলিটি’।
‘বজ্র’-এর পাশাপাশি দাঙ্গাদমন যান হিসেবে ডিআরডিও নকশায় তৈরি হয়েছিল ‘বরুণ’। টাটা মোটরসের তৈরি ওই গাড়িতে রয়েছে শক্তিশালী জলকামান। ‘বরুণ’-এর ১২ হাজার লিটার জলবহনের ক্ষমতা।
টাটা মোটরসের তৈরি ‘ব্রজ্র’-এর নয়া সংস্করণের পোশাকি নাম ‘ডিফেন্স কমব্যাট সাপোর্ট প্ল্যাটফর্মস রায়ট কন্ট্রোল ভেহিকল্’।
কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ার পাশাপাশি এতে রয়েছে হিমশীতল জল ছিটিয়ে উন্মত্ত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার ব্যবস্থাও।
মাওবাদী উপদ্রুত এলাকাগুলিতে ভারতীয় অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড নির্মিত ‘মাইন প্রোটেক্টেড ভেহিকল্’ (এমপিভি) ব্যবহার করে সিআরপিএফ এবং পুলিশ।
প্রায় দু’দশক সন্ত্রাস মোকাবিলায় তৈরি এই ল্যান্ডমাইন-নিরোধক যানে রয়েছে মিডিয়ম মেশিনগান-সহ নানা ধরনের অস্ত্রসম্ভার।
অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের তৈরি ল্যান্ডমাইন-নিরোধক যানের নীচে বসানো রয়েছে বিশেষ ধাতুর পাত। মাওবাদীদের ৮০ কিলোগ্রামের আইইডি বিস্ফোরণেও সওয়ারিদের প্রাণ রক্ষায় সক্ষম এমপিভি।
অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের তৈরি এমপিভি-র দু’টি মডেল ‘আদিত্য’ এবং ‘যুক্তিরথ’ ভারতের পাশাপাশি নেপাল এবং মায়ানমারের নিরাপত্তাবাহিনীও ব্যবহার করে।