ক্রিকেট মাঠে তিনি ক্ষিপ্র। তাঁর ব্যাট যেন কথা বলে। তাঁর গরম মেজাজ নিয়ে চলে বিস্তর আলোচনা এবং সমালোচনা। তিনি বিরাট কোহলি। তাঁকে ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম বৈগ্রহিক ব্যাটার বলেও মনে করা হয়। কেউ কেউ ভারতীয় দলের একদা অধিনায়ক হিসাবে তাঁকে অন্য অধিনায়কদের সঙ্গে দাঁড়িপাল্লায় মাপার চেষ্টাও করেন।
বিরাট ‘ক্যাপ্টেন কুল’ নন। সেই তকমাও তাঁকে কেউ দেয়নি। তাঁর তুঙ্গে থাকা মেজাজেই মজে অগণিত ভক্ত। এই মুহূর্তে ভারতীয় দলে অন্যতম সেরা ব্যাটার তিনি। ব্যাট হাতে তিনি ছক্কা হাঁকান মাঠের বাইরে। কোহলিই প্রথম ব্যাটার যিনি ১১ ইনিংসে ১০০০ রান করেছিলেন। এ ছাড়াও একাধিক রেকর্ড এবং পুরস্কার তাঁর ঝুলিতে রয়েছে।
বিরাট ক্রিকেটার হিসাবে কতটা সফল, তা তামাম ক্রিকেটপ্রেমী জানেন। কিন্তু জানেন কি ক্রিকেট ছাড়া অন্য একাধিক ক্ষেত্রে আগ্রহ রয়েছে ৩৪ বছর বয়সি ক্রিকেটারের! শুনতে অবাক লাগলেও ক্রিকেট খেলে এবং বিজ্ঞাপন করে কোটি কোটি টাকা আয়ের পাশাপাশি, ব্যবসা থেকেও বিরাটের আয় বিপুল।
কোহলি ক্রিকেটার হিসাবে কতটা সফল, তা বোঝা যাবে তাঁর রেকর্ড দেখলে। আর তাঁর ব্যবসায়িক সাফল্য বুঝতে হলে জানতে হবে কোন সংস্থায় কত বিনিয়োগ রয়েছে তাঁর।
২০১৪ সালে অন্য একটি সংস্থার সঙ্গে মিলে একটি পোশাক সংস্থা শুরু করেন কোহলি। তাঁকে এখনও এই সংস্থার বিজ্ঞাপনে দেখতে পাওয়া যায়। এই সংস্থা থেকে নাকি প্রচুর আয় হয় কোহলির।
বিরাট দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন পদ খেতে ভালবাসেন। তাই দিল্লির বুকে নিজেই খুলে ফেলেছেন দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন পদ সম্ভারিত একটি বিলাসবহুল রেস্তোরাঁ।
বিরাটের এই রেস্তোরাঁর নাম ‘নুয়েভা’। এই রেস্তোরাঁ তৈরি করতে নাকি প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি বিনিয়োগ করেছেন বিরাট। এই রেস্তরাঁতে খাবার জন্য রীতিমতো ভিড় লেগে থাকে। খরচ করতে হয় প্রচুর টাকাও।
শোনা যায়, একটি অনলাইন গেমিং প্ল্যাটফর্মের মূল সংস্থাতেও বিনিয়োগ রয়েছে কোহলির।
২০১৯-এর ফেব্রুয়ারিতে এই সংস্থায় বিনিয়োগ করেছিলেন বিরাট। ঘটনাচক্রে, ওই সংস্থা সেই সময় ভারতীয় ক্রিকেট দলের কিট স্পনসর এবং মার্চেন্ডাইজ হওয়ায় বিতর্কও তৈরি হয়েছিল।
বহু বার ওই অনলাইন গেমিং প্ল্যাটফর্মের বিজ্ঞাপনে মুখ দেখাতে দেখা গিয়েছে কোহলিকে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালে এই সংস্থায় প্রায় ৬৮০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন কোহলি।
২০২০ সালে কোহলি মোট বিনিয়োগ করেছিলেন প্রায় ৮০০ কোটি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল বেঙ্গালুরুর ইনস্যুরেন্স সংস্থায় কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ।
২০২১ সালে দু’টি স্টার্ট আপ সংস্থার উপরেও ভরসা দেখিয়েছিলেন কোহলি।
কোহলি ২০২১ সালে বাজারে মোট ৯০০ কোটি টাকার উপর বিনিয়োগ করেছিলেন।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে কোহলির বিনিয়োগ হাজার কোটির উপরে।
বাজারে নতুন আসা কফি সংস্থাতেও বিনিয়োগ করেছেন কোহলি। পাশাপাশি এই সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসাবেও মুখ দেখাতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
২০২৩ সালে ইতিমধ্যেই প্রচুর টাকা বিনিয়োগ করেছেন বিরাট। তার মধ্যে অন্যতম গয়ক কিশোর কুমারের বাংলোকে একটি বিলাসবহুল রেস্তরাঁয় রূপান্তরিত করা। এই কাজ করার সময় বিরাট তাঁর কাছে থাকা একাধিক বিলাসবহুল গাড়িও নাকি বিক্রি করে দিয়েছেন।
বিরাটের নিজস্ব প্রসাধনী সংস্থাও রয়েছে। জামাকাপড় থেকে শুরু করে সুগন্ধি, সবই তৈরি করে বিরাটের এই সংস্থা।
বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, জিম এবং ফিটনেস সেন্টারেও বিনিয়োগ করেছেন ভারতীয় ক্রিকেটার। দেশের প্রায় প্রতিটি বড় শহরেই এই জিম রয়েছে।
এই সংস্থাগুলিতে বিনিয়োগ করে কোহলি বহু কোটি টাকার মুনাফা করেছেন বলেও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে উল্লেখ রয়েছে।