আমির খান অভিনীত ‘থ্রি ইডিয়টস্’ ছবির বীরু সহস্রবুদ্ধিকে মনে আছে? দু’হাতেই সমান ভাবে লিখতে পারত সে। বোমান ইরানি সেই চরিত্রকে ফুটিয়েও তুলেছিলেন সাবলীল ভাবে।
লেখালিখির জন্য বেশির ভাগ মানুষই ডান হাত ব্যবহার করেন। তবে জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ লেখেন বাঁ হাত দিয়ে।
কিন্তু যদি বলা হয় যে, পৃথিবীতে সত্যিই এমন অনেকে রয়েছেন, যাঁরা বীরু সহস্রবুদ্ধির মতো দু’হাতেই লিখতে পারেন। যাবতীয় সব কাজ করতে পারেন দু’হাত দিয়েই!
শুধু তা-ই নয়, এমন স্কুলও রয়েছে, যেখানে পড়ুয়াদের দু’হাতে লিখতে শেখানো হয়। ভারতেও তেমন একটি স্কুল রয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের সিঙ্গরৌলীতে এমন একটি স্কুল রয়েছে, যে স্কুলের ছাত্ররা লিখতে পারে দু’হাতেই।
সিঙ্গরৌলীর ওই স্কুলের নাম বীণা বাদিনী স্কুল। বীণা বাদিনী স্কুলের পড়ুয়াদের উভয় হাত দিয়ে লেখার দক্ষতা রয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের বীণা বাদিনী স্কুল ভারতের এক মাত্র ‘অ্যাম্বিডেক্সট্রাস’ স্কুল, যেখানে ১৫০ জনেরও বেশি পড়ুয়া রয়েছে। এই পড়ুয়ারা একই সময়ে দু’হাত দিয়ে লিখতে পারে।
ওই পড়ুয়াদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য, তারা মোট ছ’টি ভাষায় কথা বলতে, পড়তে এবং লিখতে পারে। ভাষাগুলি হল— হিন্দি, ইংরেজি, উর্দু, সংস্কৃত, আরবি এবং রোমান।
ওই স্কুলের বেশির ভাগ পড়ুয়াই তিন ঘণ্টার পরীক্ষা মোটামুটি দেড় ঘণ্টায় শেষ করে দিতে পারে বলেও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
বীণা বাদিনী স্কুলের ১৫০ পড়ুয়ার অসাধারণ দক্ষতার নেপথ্যে রয়েছেন স্কুলের প্রধানশিক্ষক বিপি শর্মা। তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক জন প্রাক্তন সেনা।
ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদের দু’হাতে লেখার দক্ষতা ছিল। তাঁর থেকেই অনুপ্রাণিত হন শর্মা। সেই অনুপ্রেরণা থেকেই আরও অনেক শিশুকে দু’হাতে লেখা শেখানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
বীণা বাদিনী স্কুলে যখন প্রথম কোনও শিশু ভর্তি হয়, তখন তাকে এক হাতেই লিখতে শেখানো হয়। এক মাস পর তাদের অন্য হাত ব্যবহার করে লিখতে শেখানো হয়। এর পরে শিক্ষার্থীদের উভয় হাত একসঙ্গে ব্যবহার করে লিখতে শেখানো হয়।
৪৫ মিনিটের ক্লাসে ওই স্কুলের প্রতিটি পড়ুয়া ১৫ মিনিট করে উভয় হাতে লেখা অনুশীলন করে।
‘রিডার্স ডাইজেস্ট’ পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধ অনুযায়ী, পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশ মানুষ দু’হাতে লেখালিখি করতে পারেন।
রাজেন্দ্র প্রসাদ ছাড়াও লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি, বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন এবং আলবার্ট আইনস্টাইনের মতো বিখ্যাত মানুষেরা দু’হাতে লিখতে পারতেন।