মনোস্কামনা পূর্ণ করার জন্য দেবদেবীদের কাছে প্রার্থনা করেন না, এমন আস্তিক মানুষ পাওয়া বিরল। কিন্তু মনোস্কামনা পূর্ণ না হলে সেই দেবদেবীরই মূর্তি চুরি? এমন কি কখনও শোনা গিয়েছে?
এমনই এক উদ্ভট কাণ্ড ঘটিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের এক যুবক। শিবের কাছে চাওয়া মনোবাঞ্ছা পূর্ণ না হওয়ায় শিবমূর্তিই চুরি করেছেন তিনি।
উত্তরপ্রদেশের কৌশাম্বি জেলার মহেবঘাট এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযুক্ত ওই যুবক এলাকায় ছোটু নামে পরিচিত।
কৌশাম্বি জেলায় বাড়ির কাছেরই এক শিবমন্দির থেকে শিবলিঙ্গ চুরি করেছিলেন ছোটু। গ্রেফতারও হন পুলিশের হাতে।
কিন্তু কোন ইচ্ছাপূরণের জন্য শিবের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ছোটু, যার জন্য তিনি এমন চরম পদক্ষেপ করেছেন?
২৭ বছর বয়সি ছোটুর দাবি, শিবের ওই মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। ইচ্ছাপূরণের জন্য তিনি ব্রত এবং নিয়ম পালন করেছিলেন।
কিন্তু কয়েক মাস পেরিয়ে গিয়েও তাঁর সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি। দীর্ঘ দিন শিবলিঙ্গের পুজো করেও বিয়ে হয়নি ছোটুর।
পুলিশ জানিয়েছে, আষাঢ় এবং শ্রাবণ, এই দু’মাস ছোটু নিয়মিত মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করার ইচ্ছাপ্রকাশ করে পুজো করতেন। মন্দিরে প্রার্থনা করার পাশাপাশি পুরোহিতের কথা শুনে প্রয়োজনীয় সমস্ত আচার-অনুষ্ঠানও পালন করেছিলেন তিনি।
কিন্তু তার পরেও বিয়ে না হওয়ায় রেগে যান ছোটু। মনে আঘাত পেয়ে শেষমেশ শিবলিঙ্গই চুরির সিদ্ধান্ত নেন।
তবে শিবলিঙ্গ চুরি করে পাচার বা বিক্রি করার পথে হাঁটেননি ছোটু। মন্দিরের বাইরে বাঁশ এবং পাতা দিয়ে লুকিয়ে রেখেছিলেন মূর্তিটি।
কয়েক জন গ্রামবাসী মন্দিরে পৌঁছে দেখেন, শিবলিঙ্গ উধাও। এই ঘটনায় গ্রাম জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
মন্দিরের পুরোহিতের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ জানতে পারে, ছোটু নামের ওই যুবক শিবলিঙ্গ চুরির সঙ্গে জড়িত।
পুলিশ ছোটুকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে তিনি পুরো বিষয়টি স্বীকার করে। মন্দিরের বাইরে লুকিয়ে রাখা শিবলিঙ্গও তুলে দেন পুলিশের হাতে।
এর পর শিবলিঙ্গটি মন্দিরে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়। পুলিশ সুপার ব্রিজেশকুমার শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, অভিযুক্ত যুবক কুমহিয়াওয়া গ্রামের বাসিন্দা। ছোটু প্রতি দিন মন্দিরে যেতেন এবং শীঘ্রই যাতে তাঁর বিয়ে হয়ে যায়, সেই প্রার্থনা করতেন।
এত চেষ্টা করেও তাঁর ইচ্ছাপূরণ না হওয়ায় দুঃখিত এবং ক্ষুব্ধ ছোটু মন্দির থেকে শিবলিঙ্গ চুরি করে লুকিয়ে রেখেছিলেন বলে এসপি জানিয়েছেন।