রাশিয়া বনাম ইউক্রেন— দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ থামার কোনও লক্ষণই নেই। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের মাটিতে আগ্রাসন শুরু করেছিল ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ। দেড় বছর ধরে চলছে সেই যুদ্ধ। এই দেড় বছরে যুদ্ধে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাণহানি হয়েছে বহু মানুষের।
যুদ্ধের আবহে প্রকাশ্যে এল রুশ সৈনিকদের অত্যাচারের কাহিনি। রুশ সেনার হাতে বন্দি ইউক্রেনীয়দের কী ভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে, এই বিবরণ তুলে ধরেছেন কিভের এক নাগরিক।
ইউক্রেনের বহু নাগরিককে বন্দি করার অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। ইউক্রেনের বাসিন্দাদের বন্দি করার পর জেলে ভরে তাঁদের অত্যাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে পুতিনের দেশের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ, ইউক্রেনের নাগরিকদের বন্দি করে ‘ডিটেনশন সেন্টার’-এ রাখছে রাশিয়া। আর সেখানে ইউক্রেনের নাগরিকদের উপর নির্মম অত্যাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
সিমফারোপোল ডিটেনশন সেন্টার— সেখানেই ইউক্রেনের বহু নাগরিককে বন্দি করে রাখা হয়েছে বলে দাবি। সেখানে বন্দি ছিলেন আলেকজ়ান্ডার তারাসভ নামে ইউক্রেনের এক নাগরিক। তিনিও অত্যাচারের কাহিনি তুলে ধরেছেন।
ক্রেমলিন বিরোধী রাশিয়ার একটি সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছেন তারাসভ। রাশিয়ার বিরুদ্ধে মিছিল করায় গত বছরের মার্চ মাসে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। সে বছরের মে মাসে ওই ডিটেনশন সেন্টারে বন্দি ছিলেন তিনি।
তারসভ জানিয়েছেন, ওই ডিটেনশন সেন্টারে বন্দিদের বিদ্যুতের শক দেওয়া হত। শুধু তাই নয়, সেখানে রাখা হত হিংস্র কুকুরও।
তারসভ আরও দাবি করেছেন, ইউক্রেনের খেরসনে তাঁকে প্রথম আটক করেছিল রুশ বাহিনী। এর পর সেখানে একটি বহুতলের বেসমেন্টে তাঁর উপর অত্যাচার চালানো হয়। তার পরেই তাঁকে ওই ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়।
ইউক্রেনের ওই বাসিন্দা আরও দাবি করেছেন, তাঁর কানে বিদ্যুতের তার গুঁজে দেওয়া হত। তার পর শক দেওয়া হত।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে আর কারা কারা জড়িত, তাঁদের নাম জানতেই এ ভাবে অত্যাচার চালানো হত বলে অভিযোগ করেছেন তারসভ।
শুধু তাই নয়, তারসভের কপালে বন্দুক ঠেকিয়ে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দিতেন বলে অভিযোগ উঠেছে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে।
রোজই ওই কারাগারে বন্দিদের বিদ্যুতের শক দেওয়া হত বলে অভিযোগ করেছেন তারসভ।
তারসভের মতো একই অভিজ্ঞতা হয়েছে আরও এক প্রাক্তন বন্দি ম্যাক্সিমের। তিনিও অত্যাচারের কাহিনি তুলে ধরেছেন।
ম্যাক্সিমের কথায়, লুহানস্কে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে তাঁরা (রুশ সৈনিক) হুমকি দিতেন। লুহানস্কে মৃত্যুদণ্ড বৈধ। ফলে সেখানে বন্দিদের নিয়ে গিয়ে গুলি চালিয়ে দেবেন।
এখনও যুদ্ধ চলছে। এই আবহে রাশিয়ার বিরুদ্ধে এমন অত্যাচারের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই হইচই শুরু হয়েছে। যদিও কারাগারে বন্দিদের উপর অত্যাচারের যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া।