বলিপাড়ায় সাতাশ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন ধর্মেন্দ্রের কনিষ্ঠ পুত্র ববি দেওল। দশ বছর বয়সে শিশু অভিনেতা হিসাবে কাজ করলেও বলিপাড়ায় তিনি অভিনয় শুরু করেন ‘বরসাত’ ছবির মাধ্যমে।
‘বরসাত’ ছবিই কেরিয়ার তৈরি করে দিয়েছিল ববির। প্রথম ছবিতে অভিনয় করে সাফল্যের সিঁড়িতে চড়তে শুরু করে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অভিনেতার ভাগ্যের ফের ভারী অদ্ভুত। যে নামের ছবি তাঁর কেরিয়ার তৈরি করেছিল, সেই নামের ছবিই কেরিয়ার ধ্বংস করে দেয় ববির।
১৯৯৫ সালে রাজকুমার সন্তোষীর পরিচালনায় ‘বরসাত’ ছবিটি মুক্তি পায়। মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ববি এবং টুইঙ্কল খন্নাকে বেছে নেন পরিচালক।
‘বরসাত’ ছবিতে অভিনয়ের পর জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে যান ববি। তার পর আর কেরিয়ারে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। ‘গুপ্ত’, ‘সোলজার’, ‘বিচ্ছু’র মতো একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়ে গিয়েছেন দর্শককে। কিন্তু ‘বরসাত’ ছবিটিই তাঁর কেরিয়ারে বান ডেকে আনে।
কেরিয়ার শুরুর এক দশক পর আবার একই নামের ছবিতে অভিনয় করার সুযোগ পান ববি। ২০০৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘বরসাত’ ছবিতে ববির সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যায় প্রিয়ঙ্কা চোপড়া জোনাস এবং বিপাশা বসুকে।
তবে এই ‘বরসাত’ ছবির পরিচালনার দায়িত্বে রাজকুমার সন্তোষী ছিলেন না। সুনীল দর্শন পরিচালনা করেছিলেন এই ছবি।
কিন্তু বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে ‘বরসাত’। তার পর বহু হিন্দি ছবিতে অভিনয় করলেও ইন্ডাস্ট্রিতে আর আগের জায়গা ফিরে পাননি ববি।
বলিপাড়ার একাংশের দাবি, যে নামের ছবিতে অভিনয় করে ববি তাঁর কেরিয়ার তৈরি করেন, সেই একই নামের ছবি তাঁর সাফল্য ছিনিয়ে নেয়।
তবে এই দ্বিতীয় ‘বরসাত’ ছবিতে অভিনয় করার কথাই ছিল না ববির। পরিচালক সুনীলের প্রথম পছন্দ ছিলেন অক্ষয় কুমার। সুনীলের প্রস্তাবে রাজিও হয়ে গিয়েছিলেন অক্ষয়।
এমনকি প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে একটি গানের শুটিংও সেরে ফেলেন অক্ষয়। শুটিং শুরু হওয়ার কিছু দিন পর অক্ষয় জানান, তিনি অন্য ছবির কাজে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন যে, ‘বরসাত’-এর শুটিংয়ের জন্য সময় বার করতে পারবেন না।
শুটিং শুরু হওয়ার পর মাঝপথে কাজ ছেড়ে বেরিয়ে যান অক্ষয়। অভিনেতার এই আচরণে অবাক হয়ে যান সুনীল। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, অক্ষয়ের কাজ ছাড়ার নেপথ্যে কারণ ভিন্ন।
কাজের চাপের জন্য নয়, বরং স্ত্রীর কারণে ‘বরসাত’ ছবি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন অক্ষয়। সুনীলের দাবি, টুইঙ্কল কিছুতেই চাননি যে প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে কোনও ছবিতে অভিনয় করুন অক্ষয়।
‘বরসাত’ ছবি নিয়েই অক্ষয় এবং টুইঙ্কলের মধ্যে অশান্তি হয় বলে বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়। এর আগে অক্ষয়ের সঙ্গে ‘জানওয়ার’, ‘এক রিস্তা’, ‘অন্দাজ় অ্যান্ড দোস্তি: ফ্রেন্ডস ফরএভার’-এর মতো ছবিতে কাজ করেছিলেন সুনীল। কিন্তু অক্ষয়ের এমন আচরণের সাক্ষী হননি।
টুইঙ্কলের কথায় এ ভাবে কাজ থেকে পিছিয়ে গিয়েছিলেন বলে ক্ষুব্ধ হন সুনীল। পরিচালকের দাবি, প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে কোনও রকম সমস্যা ছিল টুইঙ্কলের। সেই কারণেই অক্ষয়কে অভিনয় করতে বাধা দিয়েছিলেন তিনি।
অক্ষয় কাজ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর ববিকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন সুনীল এবং ‘বরসাত’ ছবির মাধ্যমেই কেরিয়ারে পতন হয় ববির।