সম্প্রতি ওটিটির পর্দায় মুক্তি পেয়েছে সঞ্জয় লীলা ভন্সালী নির্মিত ‘হীরামন্ডি’। এত দিন বড় পর্দায় একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়ে গিয়েছেন তিনি। এ বার ওটিটির জগতে আত্মপ্রকাশ করেছেন পরিচালক।
নব্বইয়ের দশক থেকে বলিপাড়ায় যাত্রা শুরু করেন সঞ্জয়। ‘খামোশি: দ্য মিউজ়িক্যাল’, ‘হম দিল দে চুকে সনম’, ‘দেবদাস’, ‘ব্ল্যাক’, ‘গোলিয়োঁ কি রাসলীলা রাম-লীলা’, ‘বাজিরাও মস্তানি’, ‘পদ্মাবত’ এবং ‘গঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়ি’র মতো হিট ছবি রয়েছে সঞ্জয়ের কেরিয়ারের ঝুলিতে। কিন্তু সঞ্জয়ের ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েও তা ফিরিয়ে দেন বলিউডের দুই খান। বাঙালি অভিনেত্রীর দিদিও রয়েছেন সেই তালিকায়।
১৯৯৯ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘হম দিল দে চুকে সনম’। সঞ্জয় পরিচালিত এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন সলমন খান, ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন এবং অজয় দেবগন। তবে অজয় এবং ঐশ্বর্যা প্রথম পছন্দ ছিলেন না পরিচালকের।
১৯৯৬ সালে ‘খামোশি: দ্য মিউজ়িক্যাল’ ছবির মাধ্যমে পরিচালনার জগতে পা রাখেন সঞ্জয়। তাঁর কেরিয়ারের প্রথম পরিচালিত ছবির নায়ক ছিলেন সলমন। প্রথম ছবি পরিচালনার সময়েই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিলেন যে, তাঁর পরবর্তী ছবিতে নায়কের ভূমিকায় সলমন ছাড়া অন্য কেউ অভিনয় করবেন না।
‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবিতে তিন তিনটি মুখ্য চরিত্র নির্মাণ করেন সঞ্জয়। প্রথম অভিনেতা হিসাবে সলমনকে প্রস্তাব দেন তিনি। সলমন সেই প্রস্তাবে রাজিও হন। কিন্তু বাকি দুই চরিত্রের জন্য সঞ্জয় যে বলি তারকাদের পছন্দ করেছিলেন, তাঁরা কেউ রাজি হননি।
কানাঘুষো শোনা যায়, ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবিতে সলমনের সহ-অভিনেতা হিসাবে সঞ্জয়ের প্রথম পছন্দ ছিলেন আমির খান। আমির সেই প্রস্তাব খারিজ করলে শাহরুখ খানের কাছে গিয়েছিলেন সঞ্জয়। কিন্তু তিনিও কোনও কারণে পরিচালকের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন।
বলিপাড়ার অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায়, বলিপাড়ার দুই খান রাজি না হলে অনিল কপূরকে ‘হম দিল দে চুকে সনম’-এ অভিনয়ের প্রস্তাব দেন সঞ্জয়। কিন্তু তিনিও সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন।
বলিপাড়ায় গুঞ্জন, বলিউডের ‘খিলাড়ি’ অক্ষয় কুমারকেও নাকি ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন সঞ্জয়। কিন্তু পরিচালকের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন অক্ষয়।
পর পর চার জন অভিনেতার কাছ থেকে ফিরে আসার পর শেষমেশ অজয় দেবগনের কাছে যান সঞ্জয়। ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবিতে বলরাজের চরিত্রে অভিনয় করতে রাজি হন অজয়।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, সলমন এবং অজয়ের বিপরীতে ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য বাঙালি অভিনেত্রী রানি মুখোপাধ্যায়ের দিদি কাজলকে পছন্দ করেছিলেন সঞ্জয়। কিন্তু সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন অভিনেত্রী।
কানাঘুষো শোনা যায়, কাজলের পর করিনা কপূর খানের কাছে ছবির প্রস্তাব দেন সঞ্জয়। তখনও বলিপাড়ায় আত্মপ্রকাশ করেননি করিনা। কিন্তু ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবিতে কাজ করতে চাননি তিনি।
কাজল এবং করিনা দু’জনেই সঞ্জয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলে সলমন সমস্যার সমাধান নিয়ে হাজির হন। বলি অভিনেত্রী ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনের কথা সঞ্জয়কে বলেন ‘ভাইজান’।
১৯৯৭ সালে ‘অওর প্যার হো গয়া’ ছবির মাধ্যমে বলিপাড়ায় পা রাখেন ঐশ্বর্যা। যদিও সেই ছবি বক্স অফিসে তেমন সাফল্য পায়নি। সলমনের কথায় ঐশ্বর্যাকে ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন সঞ্জয়। পরিচালকের প্রস্তাবে রাজিও হন অভিনেত্রী।
কানাঘুষো শোনা যায়, ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবির শুটিং চলাকালীনই সলমনের সঙ্গে ঐশ্বর্যার সম্পর্ক দানা বেঁধেছিল। পরে অবশ্য দুই তারকার পথ আলাদা হয়ে যায়। সঞ্জয়ের ছবিতে নন্দিনীর চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল ঐশ্বর্যাকে।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ১৬ কোটি টাকা খরচ করে বানানো ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবিটি তিন গুণ আয় করে। মুক্তির পর বক্স অফিস থেকে ৫০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল এই ছবি।