Prajwal Revanna

পর পর ধর্ষণের অভিযোগ, দেশত্যাগ! মধ্যরাতে দেশে ফিরে গ্রেফতার, প্রজ্বলকাণ্ডের শুরু কোথায়?

জার্মানির মিউনিখ থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১টার পর বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে নামে রেভান্নার বিমান। সেখান থেকেই তাঁকে হেফাজতে নেয় কর্নাটক পুলিশের নয় সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল সিট।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৪ ১৩:২৮
Share:
০১ ২০

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গ্রেফতার হয়েছেন কর্নাটকের জনতা দল সেকুলার (জেডিএস) সাংসদ প্রজ্বল রেভান্না। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন শতাধিক মহিলা। অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর জার্মানিতে চলে গিয়েছিলেন তিনি।

০২ ২০

জার্মানির মিউনিখ থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১টার পর বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে নামে রেভান্নার বিমান। সেখান থেকেই তাঁকে হেফাজতে নেয় কর্নাটক পুলিশের নয় সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল সিট। শারীরিক পরীক্ষার পর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হবে।

Advertisement
০৩ ২০

রেভান্নার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন বহু মহিলা। তাঁর হাজার তিনেক যৌন কেলেঙ্কারির ভিডিয়োও ছড়িয়ে পড়ে ভোটের মুখে। তবে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়ার নাতি।

০৪ ২০

কর্নাটকের হাসন কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ রেভান্না। এ বারও জেডিএস তাঁকে ওই কেন্দ্র থেকেই টিকিট দিয়েছে। দ্বিতীয় দফায় গত ২৬ এপ্রিল হাসনে ভোট হয়ে গিয়েছে। তবে প্রার্থী হিসাবে জেডিএস রেভান্নার নাম প্রকাশ্যে আনার পরেই প্রকাশ্যে এসেছে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলিও। সেই থেকে ভোটের মুখে কর্নাটকের রাজনীতির অন্যতম বড় ইস্যু হয়ে গিয়েছে রেভান্না-পর্ব।

০৫ ২০

ভোটের কয়েক দিন আগে আচমকা হাসন কেন্দ্রে ছড়িয়ে পড়ে রেভান্নার একাধিক ‘অশ্লীল’ ভিডিয়ো। অভিযোগ, তিনি একাধিক মহিলাকে যৌন হেনস্থা করেছেন। তার ভিডিয়োও তুলে রাখা হয়েছে। একটি পেনড্রাইভে রেভান্নার কীর্তি জমা রয়েছে বলে ছড়িয়ে পড়ে।

০৬ ২০

জেডিএস বর্তমানে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের শরিক। রেভান্নার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর কর্নাটকের শাসকদল কংগ্রেস তা লুফে নেয়। পরে তদন্তের জন্য গঠন করা হয় সিট।

০৭ ২০

রেভান্নার নির্বাচনী এজেন্ট পূর্ণচন্দ্র তেজস্বী পাল্টা অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগ, ভোটের মুখে রেভান্নার ভাবমূর্তি খারাপ করার জন্য চক্রান্ত করে এই ধরনের ভিডিয়ো ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নবীন গৌড়া-সহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয় জেডিএস এবং বিজেপির তরফে।

০৮ ২০

রেভান্নার বিরুদ্ধে একের পর ধর্ষণ এবং যৌন হেনস্থার অভিযোগে যখন কর্নাটক তোলপাড়, ঠিক সেই সময়ে ২৬ তারিখ ভোট মিটে যাওয়ার পর দেশ ছেড়ে ‘পালিয়ে যান’ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর পৌত্র। তিনি বেঙ্গালুরু থেকে সরাসরি জার্মানির মিউনিখে চলে গিয়েছেন বলে জানা যায়।

০৯ ২০

অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর কী ভাবে পুলিশের তদন্ত এড়িয়ে দেশ ছাড়লেন রেভান্না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সাংসদ হওয়ায় বিশেষ কূটনৈতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করেছিলেন তিনি। তা বাতিলের দাবি ওঠে কর্নাটক জুড়ে।

১০ ২০

২৭ এপ্রিল কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া ঘোষণা করেন, রেভান্নার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলির তদন্তের জন্য সিট গঠন করা হবে। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনও এ বিষয়ে কর্নাটক সরকারকে চিঠি দিয়েছিলেন এবং উপযুক্ত পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছিলেন।

১১ ২০

সাংসদের বিরুদ্ধে একের পর এক গুরুতর অভিযোগ, সাংসদের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া— ঘটনাপ্রবাহ অস্বস্তিতে ফেলে কর্নাটক জেডিএসকে। তারা সাময়িক ভাবে রেভান্নাকে দল থেকে সাসপেন্ড করে। সিটের তদন্তকেও স্বাগত জানানো হয় দলের তরফে।

১২ ২০

কিছু দিন চুপ থাকার পর গত ১ মে রেভান্না মুখ খোলেন। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, ‘‘সত্য শীঘ্রই প্রকাশ্যে আসবে।’’ আইনজীবীর মাধ্যমে সিটকে চিঠি দিয়ে তিনি কিছু দিনের সময়ও চেয়ে নেন।

১৩ ২০

প্রজ্বল এবং তাঁর বাবা এইচডি রেভান্না এর পর আরও বিপাকে পড়েন। তাঁদের বিরুদ্ধে তাঁদের বাড়ির পরিচারিকা যৌন হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করেন। ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে একাধিক বার তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে বলে পুলিশকে জানান।

১৪ ২০

পরিচারিকা পুলিশকে বলেছিলেন, ‘‘যখনই এইচডি রেভান্নার স্ত্রী বাড়িতে থাকতেন না, তিনি অন্য মহিলাদের বাড়িতে ডাকতেন এবং স্টোররুমে নিয়ে যেতেন। সেখানে তাঁদের গায়ে অপ্রীতিকর ভাবে হাত দিতেন। যৌন হেনস্থাও করা হত ওই মহিলাদের।’’

১৫ ২০

এই অভিযোগের পর ৪ মে প্রজ্বলের বাবাকে অপহরণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। সেই ঘটনাটিও প্রজ্বলের যৌন হেনস্থার ঘটনাগুলির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বলে অভিযোগ। পরে অবশ্য জামিন পেয়ে যান প্রজ্বলের বাবা।

১৬ ২০

সিটের একাধিক তলবের পরেও হাজিরা না দেওয়ায় রেভান্নার বিরুদ্ধে ব্লু কর্নার নোটিস জারি করে কর্নাটক পুলিশ। বিজেপির তরফে পাল্টা অভিযোগ তোলা হয় কংগ্রেস নেতা ডিকে শিবকুমারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, হাসনে রেভান্নার ভিডিয়ো ছড়ানোর চক্রান্তে শামিল তিনিও।

১৭ ২০

রেভান্নাকাণ্ড নতুন মোড় নেয় ২৩ মে। দাদু দেবগৌড়া নিজের পৌত্রকে হুঁশিয়ারি দেন এবং দ্রুত তাঁকে সিটের সামনে হাজির হতে বলেন। রেভান্না যদি দেশে ফিরতে রাজি না হন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানিয়ে দেন।

১৮ ২০

এরও কিছু দিন পর গত ২৭ মে জানিয়ে দেন, তিনি দেশে ফিরছেন। ৩১ মে বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে নামবেন বলে ঘোষণা করে দেন তিনি। জানান, তিনি দেশে ফিরে সিটের তদন্তের মুখোমুখি হবেন। নিজেকে নির্দোষ বলেও দাবি করেন রেভান্না।

১৯ ২০

রেভান্না দাবি করেছিলেন, তিনি অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তবে তাঁর দেশে ফেরার ঘোষণামাত্রই কর্নাটক সরকার জানিয়ে দিয়েছিল, তাঁকে গ্রেফতার হবে। সেই মতোই কাজ হয়েছে বৃহস্পতিবার রাতে।

২০ ২০

রাত ১টার পরে মিউনিখ থেকে বেঙ্গালুরুতে এসে পৌঁছয় রেভান্নার বিমান। সেখান থেকে নামতেই রেভান্নাকে গ্রেফতার করা হয়। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, রেভান্নাকে গ্রেফতার করতে বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে পাঠানো হয়েছিল মহিলা পুলিশ আধিকারিকদের। নেতৃত্বে ছিলেন এক মহিলা আইপিএস অফিসার। মনে করা হচ্ছে, যৌন হেনস্থার মামলায় গ্রেফতারিতে বিশেষ বার্তা দিতেই কর্নাটক সরকারের এই পদক্ষেপ।

সকল ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement