আগামী দু-তিন বছরের মধ্যে ভারতের হাতে আসছে ‘টিল্টিং ট্রেন’। আশা করা যাচ্ছে, ২০২৫ সালের মধ্যেই নয়া প্রযুক্তির এই ট্রেনগুলি ভারতে চালু হবে। এমনটাই জানিয়েছেন ভারতীয় রেলের এক কর্তা।
আধুনিক সুযোগ-সুবিধা এবং উচ্চ গতিসম্পন্ন ‘বন্দে ভারত’ ট্রেনে নতুন প্রযুক্তি যোগ করে তৈরি হবে এই ‘টিল্টিং ট্রেন’।
রেল সূত্রে খবর, আগামী দু-তিন বছরে ভারতের হাতে মোট ১০০টি ‘টিল্টিং ট্রেন’ আসবে।
কিন্তু ‘টিল্টিং ট্রেন’ আসলে কী? কী ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় এই ট্রেনগুলিতে?
সাধারণত রেলপথে যখন কোনও বড় বাঁক আসে, তখন ট্রেনের চালক গতি কমিয়ে দেন। বাঁকের মধ্যে দ্রুত গতিতে ট্রেন চালালে বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। ট্রেনের উল্টে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে।
এই সমস্যারই সমাধান করবে নয়া প্রযুক্তির ‘টিল্টিং ট্রেন’গুলি। নতুন প্রযুক্তিযুক্ত ট্রেনগুলি বাঁকা রেলপথেও দ্রুত গতিতে ছুটে যেতে পারবে।
মোটরবাইক প্রতিযোগিতার সময় দেখা যায়, বাঁকের মুখে চালকরা বাইকগুলিকে একটু কাত করে চালাচ্ছেন। এই কারণে দুর্ঘটনার হাত থেকেও রক্ষা পান তাঁরা।
নতুন প্রযুক্তির ‘টিল্টিং ট্রেন’গুলিতেও থাকবে একই রকম ব্যবস্থা। বাঁকের মুখে ট্রেনগুলি যে দিকে বাঁক রয়েছে সে দিকে একটু কাত হয়ে ছুটবে।
বাঁকের মুখে ট্রেন কাত করে চালালেও কমাতে হবে না ট্রেনের গতি। গতি না কমিয়েই গন্তব্যের দিকে ছুটে চলবে ‘টিল্টিং ট্রেন’গুলি।
এমনিতেই ‘বন্দে ভারত’ ট্রেনের গতি ভারতে চলা বাকি ট্রেনগুলির থেকে বেশি। নতুন ‘টিল্টিং’ প্রযুক্তি ‘বন্দে ভারত’ ট্রেনে যুক্ত হওয়ার ফলে যাত্রীরা আরও কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারবেন বলে মনে করছে ভারতীয় রেল।
ইটালি, পর্তুগাল, স্লোভেনিয়া, ফিনল্যান্ড, রাশিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, ব্রিটেন, সুইজ়ারল্যান্ড, চিন, জার্মানি এবং রোমানিয়া— বর্তমানে এই ১১টি দেশে ‘টিল্টিং ট্রেন’ চালু রয়েছে। এই তালিকায় নতুন সংযোজন হতে চলেছে ভারত।
শুক্রবার রেলের এক আধিকারিক সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘‘শীঘ্রই আমাদের দেশেও টিল্টিং ট্রেন চালু হবে। আমরা এর জন্য প্রয়োজনীয় অংশীদারের সঙ্গে চুক্তি করব। আগামী দুই থেকে তিন বছরে ১০০টি বন্দে ভারত ট্রেনে আমরা এই প্রযুক্তি ব্যবহার করব।’’
এর আগেও বাঁকের মুখে ট্রেনের গতি অপরিবর্তিত রাখতে ভারতীয় রেল অনেক গবেষণা চালিয়েছে। কিন্তু আশানুরূপ ফল মেলেনি।
এই নিয়ে স্পেনের রেল প্রস্তুতকারী সংস্থা ‘তালগো’র পাশাপাশি সুইজ়ারল্যান্ড সরকারের সঙ্গেও আলোচনা করেছিল ভারতীয় রেল মন্ত্রক।
কিন্তু যখন একটি ট্রেন উচ্চ গতিতে একটি বাঁকের মুখে চলবে তখন ট্রেনের ভিতরে থাকা যাত্রীরা কি ঝাঁকুনি খেতে পারেন? যাত্রীদের জিনিসপত্রও কি এক পাশ থেকে অন্য পাশে চলে যেতে পারে?
প্রযুক্তি প্রস্ততকারক সংস্থার দাবি, ট্রেন কাত হয়ে চললেও ভিতরের যাত্রীদের কোনও অসুবিধা হবে না। অনায়াসেই ভারসাম্য বজায় রাখতে পারবেন যাত্রীরা।