কোনও সরকারি অথবা বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত নন। পড়াশোনার পাটও চুকে গিয়েছে অনেক দিন আগেই। এখন তাঁর কাজ শুধু রাতের পর রাত জেগে থাকা।
ঘুম না আসার কারণে নয়, বরং দর্শকদের মনোরঞ্জন করার জন্য এই অভিনব পন্থা বেছে নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা জেকি বোয়েম।
২৮ বছর বয়সি জেকি কুইন্সল্যান্ডের গোল্ড কোস্ট এলাকায় থাকেন। তিনি নেটমাধ্যমের এক জন ইনফ্লুয়েন্সার।
বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার গেম খেলতে ভালবাসেন। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামে তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা ২২ হাজারের কাছাকাছি।
তবে, জেকির কাজের জায়গা হল মূলত টিকটক। সেখানেই তিনি ‘স্লিপ লাইভ স্ট্রিম’-এর মাধ্যমে লক্ষের গুণিতকে উপার্জন করেন।
তিনি প্রতি রাতেই টিকটকে লাইভে আসেন। তাঁর অনুরাগীরা লাইভ চলাকালীন বিভিন্ন ধরনের উপহার পাঠান।
কেউ সানগ্লাস, কেউ বক্সিং গ্লাভস, কেউ খেলনা রেলগাড়ি উপহারও পাঠান। তবে সবই ডিজিটাল মাধ্যমে, ডিজিটাল কয়েন ব্যবহার করে।
অনুরাগীদের পাঠানো প্রতিটি উপহারের সঙ্গে তাঁর ঘরের মিউজিক সিস্টেমের যোগসূত্র রয়েছে।
টিকটকের মাধ্যমে এই উপহারগুলি পাঠানোর পরেই কখনও গ্যাসভর্তি বেলুন জেগে উঠে বিকট আওয়াজ করে। আবার কখনও ঘরময় আলো জ্বলে উঠে ‘সোপ বাব্ল’-এ তাঁর ঘর ভরে যায়।
এত জোরে আওয়াজ হওয়ার কারণে জেকির ঘুমও ভেঙে যায়। বহু দিন আগে থেকেই ঘুমানোর সময় টিকটকে সরাসরি ভিডিয়ো করেন তিনি।
তবে, গত এক মাসে তাঁর এই ভিডিয়োগুলি বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। প্রায় ৮৫ লক্ষ মানুষ তাঁর ভিডিয়ো দেখেছেন।
এর ফলে তিনি মাসে উপার্জন করেছেন ৪৯,০০০ আমেরিকান ডলার। ভারতীয় মুদ্রা অনুযায়ী যার মূল্য ৩৮ লক্ষ ৭০ হাজারের কাছাকাছি।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, রাতের পর রাত এ ভাবে জেগে থাকতে তাঁর কোনও অসুবিধা হয় না। যত দিন তাঁর অনুরাগীরা তাঁকে উপহার পাঠাতে থাকবেন, তিনি তত দিনই সরাসরি সম্প্রচার (লাইভ স্ট্রিম) করবেন।
জেকি যখন প্রথম লাইভ স্ট্রিম শুরু করেছিলেন, তখন তাঁর ভক্তরা একটি উপহার পাঠালে একটিই শব্দ হত, যার ফলে তাঁর ঘুম ভেঙে যেত। বর্তমানে তাঁর কাছে লেজার লাইট, বাব্ল গান-সহ ২০ ধরনের প্রযুক্তি রয়েছে, তিনি উপহার পেলে যে সব যন্ত্রতে আলো জ্বলে এবং শব্দ হয়। এ সবই তাঁর অনুরাগীদের ভালবাসার ফল।