সম্পর্কে রয়েছেন বহু দিন। তবুও মনের মধ্যে সন্দেহ বাসা বেঁধেছিল মরগ্যানের। প্রেমিক তাঁকে ঠকাচ্ছে না তো? সন্দেহ দূর করতে প্রেমিকের সমাজমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট ঘাঁটতে শুরু করেন আমেরিকার বাসিন্দা মরগ্যান টাবর।
প্রেমিকের সমস্ত সমাজমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট ঘেঁটে জানতে পারেন, অ্যাবি রবার্টস এবং বেকা কিং নামে আরও দু’জনের সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন তাঁর প্রেমিক। জানার পর ওই দু’জনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন মরগ্যান। তবে দেখা করার পর ঝগড়াঝাঁটি নয়, বরং তাঁরা পাতিয়ে ফেললেন বন্ধুত্ব।
মেলামেশা করে জানতে পারেন, তিন জনেরই শখ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়ানোর। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন, প্রেমিককে প্রতারণার শাস্তি দিতে তিন জনেই তাঁর সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টানবেন। এমনকি সম্পর্কচ্ছেদ উদ্যাপনে বেড়াতেও যাবেন একসঙ্গে।
সেই উদ্দেশ্যে ৩০ বছরের পুরনো একটি ভাঙাচোরা বাস কিনে ফেলেন তাঁরা। সেই বাসই নতুন ভাবে সাজিয়ে থাকা-খাওয়ার আয়োজন করে ফেলেন।
তিন জনের নামের প্রথম অক্ষর অনুযায়ী বাসটির নাম রাখেন ‘দ্য ব্যাম বাস’। কিন্তু অ্যাবি নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে তাঁদের বাস ছেড়ে চলে যান।
পরে মরগ্যান এবং বেকাহ দু’জনে মিলে সমাজমাধ্যমে ‘ফাইন ক্রু’ নামে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন।
ইতিমধ্যেই তাঁরা আমেরিকার ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্ক, গ্রেট স্যান্ড ডিউন্স ন্যাশনাল পার্ক এবং গ্র্যান্ড টেটন ন্যাশনাল পার্ক ঘুরে ফেলেছেন।
স্কুবা ডাইভিং থেকে শুরু করে প্যারাসুটে ভ্রমণ, অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী তিন তরুণী তাঁদের সব মনোবাঞ্ছা পূরণ করেছেন।
ইনস্টাগ্রামে ইতিমধ্যেই তাঁদের অনুরাগীর সংখ্যা ৫৯ হাজারের গণ্ডি পার করেছে।
তাঁদের ঘুরতে যাওয়ার মুহূর্ত থেকে শুরু করে বিভিন্ন মজার ভিডিয়ো ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন তাঁরা।
বাসের মধ্যে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা থাকলেও জামাকাপড় কাচার জন্য দোকানই ভরসা তাঁদের।
দু’বছর ধরে বন্ধুত্ব রয়েছে তাঁদের। অ্যাবি তাঁদের বাস ছেড়ে গেলেও এখনও মরগ্যান এবং বেকা সম্পর্ক রেখেছেন তাঁর সঙ্গে।
বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে নতুন লোকজনের সঙ্গে আলাপ করে ভাল লাগছে বলেও জানিয়েছেন মরগ্যান।
বেকা জানান, এই অভিজ্ঞতা তাঁদের জীবনে অন্য মাত্রা এনে দিয়েছে, তাঁদের চিন্তাভাবনা আরও পরিণত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘‘মেয়েদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হওয়া খুব ভাল। জীবনে কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হলে তাঁরা সব সময় পাশে এসে দাঁড়ায়।’’
বাসে এ ভাবে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে কোনও সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন কি না, তা জিজ্ঞাসা করা হলে মরগ্যান মজার ছলে বলেন, ‘‘প্রয়োজনের সময় রাস্তায় খুব সহজে শৌচালয় খুঁজে পাওয়া যায় না। এটাই সব থেকে বড় সমস্যা।’’