India Invitation in NATO

ভারতকে নেটোয় আহ্বান, আমেরিকার প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে রাশিয়াকে কি শত্রু বানাবে নয়াদিল্লি?

সম্প্রতি নেটোয় যোগ দেওয়ার জন্য ডাক পেয়েছে দিল্লি। আমেরিকার সঙ্গে তারা বরাবরই সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। কিন্তু নেটোয় যোগ দিলে ভারতকে রাশিয়ার রোষের মুখে পড়তে হবে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২৩ ০৮:৩৭
Share:
০১ ২০

নর্থ অ্যাটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন বা উত্তর অতলান্তিক চুক্তি সংগঠনের (সংক্ষেপে নেটো) পথ চলা শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে। ১৯৪৯ সালের ৪ এপ্রিল নেটোর জন্ম। সদস্য দেশগুলিতে শান্তি রক্ষাই এই সংগঠনের উদ্দেশ্য।

০২ ২০

নেটোয় এখনও পর্যন্ত ৩১টি দেশ যুক্ত হয়েছে। এই ৩১টি সদস্য দেশের মধ্যে রয়েছে আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি, ইটালি। কিন্তু ভারত নেটোয় নেই।

Advertisement
০৩ ২০

সম্প্রতি আমেরিকা-ঘনিষ্ঠ এই সংগঠনে যুক্ত হওয়ার ডাক পেয়েছে নয়াদিল্লি। পরোক্ষ ভাবে আমেরিকার নিয়ন্ত্রণে এই সংগঠন থেকে ভারতকে নেটোয় যোগদানের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

০৪ ২০

আমেরিকার সঙ্গে বরাবরই সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে ভারত। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে নেটোয় যোগ দিয়ে তারা মিত্রতাকে খাতায়কলমে স্বীকৃতি এখনও দেয়নি।

০৫ ২০

বিশ্ব রাজনীতিতে শক্তিশালী দেশগুলির সঙ্গে ভারত সাধারণত সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রেখে চলে। আমেরিকার সঙ্গে মিত্রতায় আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিলে আমেরিকা বিরোধী দেশগুলির সঙ্গে তার সম্পর্ক তিক্ত হতে পারে।

০৬ ২০

এ ক্ষেত্রে ভারতের প্রধান চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে পারে রাশিয়া। আমেরিকার পাশাপাশি রাশিয়ার সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক ভাল। ইউক্রেন যুদ্ধের পরেও ভারত সরাসরি পুতিনের দেশের সমালোচনা করেনি।

০৭ ২০

আমেরিকার ডাকে সাড়া দিয়ে ভারত নেটোর ৩২তম সদস্য দেশ হবে কি না, তা নিয়ে তাই সংশয় রয়েছে। দোটানায় পড়েছে নয়াদিল্লি। বল এখন তাদেরই কোর্টে।

০৮ ২০

এক দিকে, নেটোর ডাকে সাড়া না দিলে আমেরিকার বিরাগভাজন হওয়ার আশঙ্কা। অন্য দিকে, রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের প্রেক্ষিতে নেটোর সদস্যপদ গ্রহণ দিল্লির কাছে খাল কেটে কুমির আনার সমান।

০৯ ২০

ভারতকে আহ্বানের মধ্যে নেটো কিংবা আমেরিকার অন্য কোনও পরিকল্পনাও থাকতে পারে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। নেটোর ইতিহাস ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

১০ ২০

এর আগে লিথুয়ানিয়া, এস্টোনিয়া, আজারবাইজানের মতো ছোট দেশগুলি নেটোর পাতা এমন ফাঁদেই পা দিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার মতো উন্নত দেশও নেটোর ষড়যন্ত্রের শিকার বলে মনে করেন অনেকে। যদিও দক্ষিণ কোরিয়া এখনও নেটোতে যোগ দেয়নি।

১১ ২০

নেটোতে যোগ দেওয়ার জন্য এই দেশগুলির উপর পরোক্ষে চাপ সৃষ্টি করা হয় বলে দাবি। একই সঙ্গে রাশিয়া বিরোধী মনোভাব গড়ে তোলা হয় দেশগুলির মনে। এই নীতিতেই একাধিক দেশকে সদস্যপদ গ্রহণে বাধ্য করেছে নেটো।

১২ ২০

গত কয়েক বছরে ভারতকে সদস্য করার জন্য নেটোর তোড়জোড় চোখে পড়ছে। প্রকাশ্যে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরের জন্য আহ্বান তো আছেই, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে নেটো সদস্যেরা।

১৩ ২০

২০২০ সালে ভারত-চিন সীমান্ত সংঘর্ষের সময় নেটোর অন্যতম সদস্য ফ্রান্স প্রকাশ্যেই ভারতের সাহায্যার্থে সেনা পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। ভারতকে খুশি করতে এমন একাধিক পদক্ষেপ করতে দেখা গিয়েছে আমেরিকা-ঘনিষ্ঠ সংগঠনের তরফে।

১৪ ২০

অনেকে বলেন, নেটোয় যোগ দিয়ে দেশগুলির আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা এবং শান্তি রক্ষার কথা বলা হয় বটে, কিন্তু এর নেপথ্যে লুকিয়ে অন্য উদ্দেশ্য।

১৫ ২০

নেটোর মূল চালক দেশ, বিশেষত আমেরিকা ছোটখাটো দেশগুলিকে এই সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত করে আসলে ওই দেশগুলির উপর ছড়ি ঘোরানোর পথ প্রশস্ত করে নেয়। ‘নিরপেক্ষ’ ভারতকেও তেমন ফাঁদে ফেলা হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

১৬ ২০

নেটোর এই কূটনীতির সাম্প্রতিক উদাহরণ হিসাবে ইউক্রেনের নাম করা হয়। রাশিয়ার প্রতিবেশী এই দেশটির সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করছিল নেটো। রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার পর কিন্তু নেটোর থেকে প্রত্যাশিত সমর্থন বা সাহায্য পাননি জ়েলেনস্কি।

১৭ ২০

ভারতের কি নেটোকে প্রয়োজন আছে? এই প্রশ্নের উত্তরে প্রথমেই আসে ভারতের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার প্রসঙ্গ। দেশ যত দিন সুরক্ষিত আছে, বহিরাগত শত্রুর হাত থেকে যত দিন ভারত আত্মরক্ষা করতে সক্ষম থাকবে, তত দিন নেটোর মতো সংগঠনকে প্রয়োজন নেই দিল্লির। অন্তত এমনটাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের একাট বড় অংশ।

১৮ ২০

পাকিস্তান কিংবা চিন ছাড়া আর কোনও দেশের সঙ্গে ভারতের তেমন শত্রুতা নেই যা থেকে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। নেটোয় যোগ দিলে এই দুই দেশ ভারত আক্রমণের আগে দশ বার ভাবতে বাধ্য হবে।

১৯ ২০

নেটোয় যোগ দিলে পৃথিবীর অন্যতম অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে ভারত। দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ইতিবাচক মোড় ঘুরতে পারে নেটোর হাত ধরে।

২০ ২০

নেটোয় যোগদানের যাবতীয় ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিকগুলি বিবেচনা করে অত্যন্ত সন্তর্পণে পা ফেলতে হবে দিল্লিকে। এ ক্ষেত্রে ভারতের একটি ভুল পদক্ষেপ দেশকে এক ধাক্কায় অনেকখানি পিছিয়ে দিতে পারে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নিজের ‘নিরপেক্ষ’ ভাবমূর্তি বজায় রাখাই ভারতের সামনে এখন চ্যালেঞ্জ।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement