ছেলেকে দেখে প্রাক্তন স্বামীর কথা মনে পড়ত। তাই কি মায়ের হাতে মরতে হল চার বছরের শিশুকে? সূচনা শেঠের ছেলে হত্যার তদন্তে আর একটি সূত্র পেয়েছে পুলিশ।
টিস্যু পেপারে লেখা কয়েকটি লাইন। তাও আবার পেন দিয়ে নয়, লেখার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল আইলাইনার।
দলা পাকানো এক টুকরো টিস্যু পেপার। তাতে এলোমেলো করে লেখা কয়েকটি লাইন। হাতের লেখাও কেঁপে কেঁপে গিয়েছে।
গোয়ায় সূচনা শেঠের ঘর থেকে সেই কাগজ উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। কাগজে আইলাইনার দিয়ে লেখা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
চার বছরের ছেলেকে খুনের আগে কী লিখে গিয়েছিলেন সূচনা? কেনই বা টিস্যু পেপারের মধ্যে লিখতে হয়েছিল? খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, টিস্যুর মধ্যে অন্তত পাঁচ লাইন লিখেছিলেন সূচনা। তাতে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় আদালতের নির্দেশ নিয়ে হতাশার প্রকাশ রয়েছে।
আদালত তাঁর ছেলেকে প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে প্রতি রবিবার করে দেখা করার নির্দেশ দিয়েছিল। তাতেই অসন্তুষ্ট ছিলেন সূচনা।
উদ্ধার হওয়া টিস্যু পেপারের লেখার সঙ্গে সূচনার হাতের লেখা মিলিয়ে দেখা হবে। ফরেন্সিক ল্যাবে ইতিমধ্যে হস্তাক্ষর পরীক্ষার জন্য তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া, সূচনার বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, ছেলেকে নিয়েও বিরক্ত ছিলেন বেঙ্গালুরুর স্টার্টআপ সিইও। তিনি নাকি ঘনিষ্ঠ মহলে একাধিক বার জানিয়েছিলেন, ছেলের মুখ দেখে তাঁর স্বামীর কথা মনে পড়ে।
কারণ ছেলের মুখের সঙ্গে স্বামীর মুখের মিল ছিল। ওই শিশুমুখ তাঁকে তাঁদের বিষাক্ত সম্পর্কের কথা মনে করিয়ে দিত।
২০১০ সালে বেঙ্গালুরুর বেঙ্কট রমনের সঙ্গে সূচনার বিয়ে হয়েছিল। ২০১৯ সালে তাঁদের পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। এর পরেই সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে। বিবাহবিচ্ছেদের পথে হাঁটেন সূচনা এবং বেঙ্কট।
ঘটনার সময়ে বেঙ্কট কাজের সূত্রে বিদেশে ছিলেন। মৃত্যুর আগে বাবার সঙ্গে শিশুটি ভিডিয়ো কলে কথাও বলেছিল। পরে বেঙ্কটের হাতেই শিশুর মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয়।
ছেলেকে শ্বাসরোধ করে খুন করে দেহ সুটকেসে ভরে গোয়া থেকে বেঙ্গালুরু যাচ্ছিলেন সূচনা। পথে ধরা পড়ে যান। সোমবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, জেরার মুখে সূচনা দাবি করেছেন, তিনি সন্তানকে খুন করেননি। ঘুম থেকে উঠে দেখেছিলেন, শিশুটি মৃত। ওই ঘর থেকে কাফ সিরাপের খালি শিশিও পেয়েছে পুলিশ।