Parvez Musharraf Death

কাশ্মীরে লোভ, লস্করে ভরসা এবং তিন নারীর কথা কখনও লুকোননি জাঁদরেল জেনারেল

প্রেমজীবনের কথা বলতে গিয়ে বাঙালি প্রণয়ীর কথা জানিয়েছিলেন মুশারফ। পাকিস্তানের বন্দর শহর করাচিতে থাকার সময় পূর্ব পাকিস্তানের বাসিন্দা, এক বাঙালি তরুণীর সঙ্গে প্রেম হয়েছিল তাঁর।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:০০
Share:
০১ ২০

আদালতের নিদানে কাশ্মীরের রাজনীতি থেকে হারিয়ে গিয়েছিলেন অনেক আগেই। রবিবার জীবন থেকেও হারিয়ে গেলেন পাকিস্তানের একদা দোর্দণ্ডপ্রতাপ রাষ্ট্রপ্রধান পারভেজ মুশারফ। দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে প্রয়াত হয়েছেন পাকিস্তানের এই প্রাক্তন সেনাপ্রধান তথা প্রেসিডেন্ট।

ফাইল চিত্র।

০২ ২০

পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বরাবরই সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকে। ১৯৬১ সালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া মুশারফ পদোন্নতির সব ধাপ পেরিয়ে প্রথমে সেনাপ্রধান হন। পরে ২০০১ সালে ইসলামাবাদের মসনদে বসেন।

ফাইল চিত্র।

Advertisement
০৩ ২০

১৯৯৯ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের শাসনক্ষমতা দখল করেছিলেন মুশারফ। পরবর্তী কয়েকটা বছরে তিনিই ছিলেন পাকিস্তানের সর্বেসর্বা।

ফাইল চিত্র।

০৪ ২০

মুশারফকে সেনার উচ্চপদে বসিয়েছিলেন সে দেশের আর এক প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নওয়াজ শরিফ। পরে নানা বিষয়ে মতপার্থক্যের কারণে মুশারফকে সেনাপ্রধানের পদ থেকে সরাতে চেয়েও তা করতে পারেননি নওয়াজ।

ফাইল চিত্র।

০৫ ২০

নওয়াজকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে মধুর প্রতিশ‌োধ নিয়েছিলেন মুশারফ। ক্ষমতায় আসা ইস্তক তাঁর কাশ্মীরপ্রীতির কথা কখনও লুকোননি এই জাঁদরেল জেনারেল।

ফাইল চিত্র।

০৬ ২০

কাশ্মীরের সঙ্গে অবশ্য তাঁর সংঘাত বহু পুরনো। ১৯৬৫ সালে কাশ্মীরে অস্থিরতা তৈরি করতে পাকিস্তান যে ‘অপারেশন জিব্রাল্টার’-এর রণকৌশল সাজিয়েছিল, তাঁর অংশীদার ছিলেন মুশারফ।

০৭ ২০

যুদ্ধ চলার সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীর বোমাবর্ষণের মুখে পড়েও নাকি ঘাঁটি ছেড়ে পালাননি অকুতোভয় মুশারফ। তার জন্য পাকিস্তান সরকারের তরফে তাঁকে ‘ইমতিয়াজি সনদ’ পদক দেওয়া হয়।

০৮ ২০

অনেকই মনে করে থাকেন যে, ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের নেপথ্যেও ছিল মুশারফের পাকা মাথা। অবশ্য ওই যুদ্ধে পাক হানাদারদের সীমান্তের ওপারে হটিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী।

০৯ ২০

২০১৭ সালে এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে মুশারফ জানিয়েছিলেন, তিনি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার খুব বড় এক জন ভক্ত। মুম্বই হামলার মূল চক্রী হাফিজ সইদের প্রশংসাও শোনা গিয়েছিল তাঁর গলায়।

১০ ২০

কাশ্মীরে ভারতকে চাপে রাখতে লস্করের মতো জঙ্গি সংগঠনকে যে প্রয়োজন, তা-ও খোলাখুলি জানিয়েছিলেন তিনি। কাশ্মীর নিয়ে আমেরিকার হস্তক্ষেপ নিয়েও সরব হয়েছিলেন তিনি।

১১ ২০

লস্করকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসাবে দেগে দেওয়া নিয়ে তাঁর ক্ষোভ ছিল। তাঁর দাবি ছিল, আমেরিকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারত এ সব করেছে।

১২ ২০

ব্যক্তিগত জীবনের নানা ওঠাপড়া নিয়েও খুল্লমখুল্লা হয়েছেন মুশারফ। আত্মজীবনী ‘ইন দি লাইন অফ ফায়ার’-এ মুশারফ জানিয়েছিলেন, তাঁর জীবনের তিনটি প্রেমের কথা।

১৩ ২০

প্রেমজীবনের কথা বলতে গিয়েই বাঙালি প্রণয়ীর কথা জানিয়েছিলেন তিনি। পাকিস্তানের বন্দর শহর করাচিতে থাকার সময় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাসিন্দা, এক বাঙালি তরুণীর সঙ্গে প্রেম হয়েছিল তাঁর। যদিও বাড়ি বদলের সময় হারিয়ে যান সেই প্রেমিকা, হারিয়ে যায় তরুণবেলার প্রেমও।

১৪ ২০

সেটি ছিল তাঁর দ্বিতীয় প্রেম। প্রথম বার বয়সে অনেকটাই বড় এক তরুণীর প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছিলেন মুশারফ। পাকিস্তানের ভাবী রাষ্ট্রপ্রধান প্রেমে এতটাই মগ্ন হয়ে পড়েছিলেন যে, তাঁর বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হয়েছিল। অন্যান্য বারের মতো প্রথম পাঁচে থাকা হয়নি তাঁর।

১৫ ২০

স্ত্রী শেহবার সঙ্গে অবশ্য তাঁর সম্বন্ধ করেই বিয়ে হয়েছিল। খুব সাধারণ পোশাকে শেহবার বাড়ি যাওয়ার স্মৃতিচারণা করেছিলেন মুশারফ। জানিয়েছিলেন, শেহবাকে এক ঝলক দেখেই তাঁর প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন।

১৬ ২০

জন্ম দিল্লিতে হলেও দেশভাগের পর পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন মুশারফের বাবা-মা। মুশারফের বাবা ছিলেন পাকিস্তান প্রশাসনের আমলা। বাবার কর্মসূত্রে কিছু দিনের জন্য তুরস্কে যেতে হয়েছিল মুশারফকে। সে কারণে তুর্কি ভাষায় বিশেষ পারদর্শী ছিলেন মুশারফ।

১৭ ২০

কুকুরদের প্রতি তাঁর বিশেষ আগ্রহ ছিল। প্রিয় পানীয়ের নামে প্রিয় পোষ্যটিরও নাম রেখেছিলেন ‘হুইস্কি’। হুইস্কিকে নিয়ে মুশারফ বিদেশ সফরেও যেতেন।

১৮ ২০

গণতন্ত্রের রাস্তা বন্ধ করে দেশে ‘একনায়কতন্ত্র’ কায়েম করার অভিযোগ উঠলেও মুশারফের আমলে পাকিস্তানের অর্থনীতি এবং সমাজে উদারীকরণের হাওয়া বয়েছিল। পাকিস্তানের একাধিক বেসরকারি টেলিভিশন সংস্থাকে লাইসেন্স দিয়েছিলেন তিনি। নাটক, গানবাজনার প্রসারেও উদ্যোগী হয়েছিলেন তিনি।

১৯ ২০

২০০১ সালে গুজরাতে ভূমিকম্প হওয়ার পর ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীকে শোকবার্তা পাঠিয়েছিলেন মুশারফ। বিমানে করে ত্রাণও পাঠিয়েছিলেন। ২০০৪ সালে কাশ্মীর নিয়েও ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসতে উদ্যোগী হন মুশারফ।

২০ ২০

২০০৮ সালে বিরোধী দলগুলি একজোট হয়ে মুশারফের অপসারণ দাবি করে। চাপের মুখে ২০০৮ সালের ১৮ অগস্ট দেশের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। পরে লন্ডন এবং দুবাইতে স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement