ভোটের আবহে আবার শিরোনামে কেন্দ্রীয় সরকারের এক নয়া পদক্ষেপ। সরকারি চাকরিতে কর্মরত মহিলাদের পেনশনের নিয়মে এল বদল। এখন কেবল তাঁর স্বামী নন, নমিনি হতে পারবেন তাঁর সন্তানরাও।
কেন্দ্রের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, মহিলা সরকারি কর্মচারীরা নিজেদের ইচ্ছা ও স্বাধীনতা মতো তাঁদের পেনশনের ‘নমিনি’ বেছে নিতে পারবেন। লোকসভা নির্বাচনের মুখে কর্মরত মহিলাদের পেনশন নিয়ে এই নতুন নিয়ম ঘোষণা করল কেন্দ্র।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ এই ঘোষণা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, পেনশন সংক্রান্ত বিধি ‘সেন্ট্রাল সিভিল সার্ভিস রুলস ২০২১’-এ সোমবারই এই নতুন সংশোধন আনা হয়েছে।
এই সংশোধনটি এনেছে পেনশন এবং পেনশন প্রাপক কল্যাণ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় দফতর (ডিওপিপিডব্লিউ)।
কেন্দ্রের কর্মচারী, পেনশন এবং জনগণের অভাব-অভিযোগ সংক্রান্ত মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র। যে দফতর সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিয়ন্ত্রণাধীন।
মঙ্গলবার নতুন ঘোষণা করার পরে জিতেন্দ্র বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মোদীর সরকার মহিলাদের সমানাধিকার দেওয়ার নীতিতে চলে। তাই দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা এই নিয়মে সংশোধন করা হল।’’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মতে এই নতুন নিয়ম যেমন বাঁধা গত ভাঙল, তেমনই আগামী দিনে সমাজের উপরে সুদূরপ্রসারী প্রভাবও ফেলবে এই বদল।
প্রসঙ্গত, এর আগে মহিলাদের পেনশন তাঁর মৃত্যুর পর পেতেন তাঁর স্বামী। স্বামী না থাকলে বা তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকলে সেই পেনশনের দাবিদার হতে পারতেন তাঁর সন্তান।
কিন্তু এখন থেকে সরকারি কর্মচারী মা নিজের পেনশনের জন্য স্বামীর বদলে ছেলেমেয়েদেরও উত্তরাধিকারী হিসাবে মনোনীত করতে পারবেন।
কী ভাবে এই সুবিধার সুযোগ নিতে পারবেন মহিলা কর্মচারীরা? তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মহিলা পেনশন প্রাপক বা মহিলা সরকারি কর্মচারীদের এ জন্য একটি লিখিত অনুরোধ করতে হবে তাঁর অফিসের সর্বোচ্চ প্রধানকে।
সেখানে তাঁকে লিখতে হবে, ‘‘তাঁর মৃত্যুর পর পেনশনের অর্থ তাঁর স্বামীর বদলে নির্দিষ্ট পুত্র অথবা কন্যা অথবা পুত্র-কন্যাদের দিতে হবে। প্রক্রিয়াটি চলাকালীনও যদি কোনও ভাবে তাঁর মৃত্যু হয়, তা হলেও এই নির্দেশই বজায় থাকবে।’’ এই লিখিত অনুরোধের ভিত্তিতেই প্রক্রিয়াটি শুরু হবে।
তবে, একই সঙ্গে ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, যদি সরকারি মহিলা কর্মচারীর কোনও সন্তান না থাকে, তবে তাঁর মৃত্যুতে তাঁর স্বামীই তাঁর পেনশনের অধিকারী হবেন।
আবার স্বামী যদি তাঁদের মানসিক ভাবে অসুস্থ সন্তানের বা বয়সে নাবালকের দেখভালকারী হন, তা হলেও ওই পেনশন প্রথমে তিনি পাবেন।
পরে সন্তান সুস্থ হলে বা বড় হলে এবং পেনশন পাওয়ার যোগ্য বলে প্রতিপন্ন হলে, পেনশনের অর্থ সরাসরি তাঁর নামেই দেওয়া হবে।