দেশের মহাকাশচারীদের পৃথিবীর বাইরে পাঠানোর দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল ভারত। পরীক্ষায় পাশ করে মহাকাশে পাড়ি দিতে তৈরি ‘গগনযানের’ সিই২০ ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন।
ভারতীয় মহাকাশচারীদের পৃথিবীর বাইরে পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করেছে ইসরো। সেই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘গগনযান’।
চলতি বছরেই ‘গগনযান’ মহাকাশচারীদের নিয়ে মহাকাশের উদ্দেশে পাড়ি দিতে পারে। সেই অভিযানের গুরুত্বপূর্ণ ইঞ্জিন পরীক্ষা করে দেখল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
পরীক্ষাটি সফল হয়েছে। এর ফলে মহাকাশে ভারতীয়দের পাঠানোর বিষয়ে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল ইসরো।
বুধবার ইসরোর তরফে এক্স হ্যান্ডেলে জানানো হয়েছে, ‘গগনযানের’ সিই২০ ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিনটি সফল ভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে।
ওই ইঞ্জিন ‘গগনযানের’ একটি বিশেষ পর্যায়ে মহাকাশচারীদের শক্তি জোগাবে। ‘ক্রায়োজেনিক’ পর্যায়ে যখন পারিপার্শ্বিকের তাপমাত্রা অত্যন্ত কম থাকে, ওই সময়ে ইঞ্জিনটি কাজে লাগবে বলে জানিয়েছে ইসরো।
ইসরোর মহাকাশচারীদের যে মহাকাশযানে করে ‘গগনযান’ অভিযানে পাঠানো হবে, তার নাম লঞ্চ ভেহিক্ল মার্ক ৩ (এলভিএমথ্রি)।
গত বছর থেকেই ‘গগনযানের’ একাধিক যন্ত্রপাতির পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চলেছে ইসরো। ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন পরীক্ষা সেই তালিকায় সপ্তম।
তামিলনাড়ুর মহেন্দ্রগিরিতে সফল ভাবে এই পরীক্ষা করা হয়েছে। এর ফলে ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিনটিকে ‘হিউম্যান রেটিং’-এর স্তরে উত্তীর্ণ করা গিয়েছে।
এ বার মানুষের সেই ইঞ্জিনে উঠতে আর কোনও বাধা নেই। একইসঙ্গে ইসরো জানিয়েছে, মাটিতে থাকাকালীন ‘গগনযানের’ যা কিছু পরীক্ষার প্রয়োজন ছিল, ক্রায়োজেনিক পরীক্ষাই ছিল তার মধ্যে শেষ। এই পর্যায়ে আর কোনও পরীক্ষা বাকি নেই।
পৃথিবীর বাইরে মহাকাশের ৪০০ কিলোমিটার কক্ষপথে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে ইসরোর। নানা পর্যায়ে তার পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে।
প্রথমে ‘ব্যোমমিত্রা’ নামের একটি মহিলা রোবটকে মহাকাশে পাঠাবে ইসরো। সেই অভিযান সফল হলে মহাকাশে মানুষ পাঠানো হবে।
১৯৮৪ সালের ৩ এপ্রিল রাশিয়ার মহাকাশযানে চেপে মহাশূন্যের উদ্দেশে রওনা দিয়ে নজির গড়েছিলেন ভারতীয় মহাকাশচারী রাকেশ শর্মা।
তিনিই ছিলেন প্রথম ভারতীয় নভশ্চর। তবে এ বার আর অন্য দেশের নয়, নিজের দেশের প্রযুক্তিতে ভর করেই মহাকাশে পাড়ি দেবেন ভারতীয়েরা।
অভিযানের তোড়জোড়ের সঙ্গে ভারতীয় মহাকাশচারী কল্পনা চাওলার পরিণতির কথা মাথায় রেখে নভশ্চরদের কী ভাবে নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে হবে, সেই ব্যবস্থাও করেছে ইসরো।