10 fatest person of world

থলথলে না থপথপে, স্থূলত্বের কোন বিশেষণ এঁদের উপযুক্ত? ওজনদারদের নিয়ে কিছু গল্প

বিবিধ রোগের ধাক্কা সামলে চলে ভাল থাকার চেষ্টা। সহজে জীবনের হাল ছাড়তে প্রস্তুত যাঁরা, এই ‘থপথপে’ মানুষগুলো তাঁদের জীবনবোধ শেখাতে পারেন।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৯:২১
Share:
০১ ১৩

কাজকর্ম করতেই হয় না তেমন। মুখের গোড়ায় খাবার ধরার লোকও আছে। আবার প্রতি মুহূর্তে থাকে মৃত্যুভয়ও। এঁরাই আসল ‘হেভিওয়েট’। বিশ্বের সবচেয়ে ওজনদার মানুষ।

০২ ১৩

পাঁচ-দশ কিলো ওজন কমাতে না পেরে যখন মাথা কুটছেন, হতাশায় আত্মহত্যাও করে ফেলছেন কেউ কেউ, তখন এঁদের ভাবনা কয়েকশো কিলো নিয়ে। নিজের ওজনই এঁদের শত্রু। তবু তার চোখরাঙানি পেরিয়েও এঁরা নিজের মতো বাঁচতে চান।

Advertisement
০৩ ১৩

কারও সারা রাত ঘুম আসে না। কেউ বা দিনভর শ্বাসকষ্টে ভোগেন। মধুমেহ, হৃদ্‌রোগ, হাড়ের সমস্যা— বিবিধ রোগের ধাক্কা সামলে চলে ভাল থাকার চেষ্টা। সহজে জীবনের হাল ছাড়তে প্রস্তুত যাঁরা, এই ‘থপথপে’ মানুষগুলো তাঁদের জীবনবোধ শেখাতে পারেন।

০৪ ১৩

পল ম্যাসনের গল্প শুরু তেমনই এক হাল ছাড়ার মুহূর্ত থেকে। ২০ বছর বয়সে প্রেমে আঘাত পেয়েছিলেন। সেই সময়ে পলের বাবাও মারা যান। মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার পর থেকেই শুরু সব সময়ের খাই খাই বাতিক। দিনে ২০ হাজার ক্যালোরির খাবার খেতেন। বছরে তাঁর খাবারের জন্যই খরচ হত ৩৮ লক্ষ টাকা। একটা সময়ে ওজন ছিল ৪৪৪.৫ কেজি। ‘বিশ্বের সবচেয়ে মোটা মানুষ’ বলা হত পলকে। তবে এখন তিনি ওজন কমিয়ে নামিয়েছেন ১৮১ কেজিতে। ৫১ বছরের পল ইদানিং মন দিয়েছেন সৌন্দর্যচর্চাতেও।

০৫ ১৩

ডোনা সিম্পসন ২০০৮ সালে ঘোষণা করেছিলেন, তিনি বিশ্বের সর্বাধিক ওজনের মহিলা হতে চান। সেই সময় তাঁর ওজন ছিল ৪৫০ কেজি। ডোনা একটি ওয়েবসাইট খুলেছিলেন। যেখানে মানুষ পয়সা দিয়ে ডোনার খাওয়াদাওয়ার ভিডিয়ো দেখতেন। সেই ডোনা ২০১০ সালে ওজন কমিয়ে আনেন ২৭৩ কেজিতে। ওই বছরই গিনেস বুকেও নাম ওঠে তাঁর। সবচেয়ে ওজনদার সন্তানসম্ভবা হিসাবে। ডোনা জানিয়েছেন, সন্তানের জন্মই তাঁর জীবন বদলে দেয়। আপাতত তার জন্যই ডোনা নিজের ওজন কমিয়ে এনেছেন ১৭০ কেজিতে।

০৬ ১৩

ম্যানুয়েল উরিবের গল্পটা আবার এক্কেবারে আলাদা। দিনের পর দিন ট্যাকো আর পিৎজা খেয়ে নিজের ওজন বাড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন ৫৯৭ কেজিতে। ৫৮-র এই মেক্সিকান ২০০১ সাল থেকে শয্যাশায়ী। ম্যানুয়েল বিবাহিত। তবে বিয়ের পরেই সমস্যার শুরু। চাকরি বদলে আমেরিকার শহরে থাকতে এসেছিলেন ম্যানুয়েল। সারা দিন ডেস্কে বসে কাজ করতে করতে ১২৭ কেজি ওজন হয় তাঁর। তার পর থেকে চেষ্টা করেও ওজন কমাতে পারেনি। অবশেষে ২০১২ সাল থেকে ওজন কমতে শুরু করে। আপাতত ৫৯৭ কেজি থেকে কমে ম্যানুয়েলের ওজন ২০০ কেজি।

০৭ ১৩

রবার্ট আর্ল হিউসের ওজন বাড়তে শুরু করেছিল ৬ বছর বয়স থেকেই। তখনই ৯২ কেজি ওজন ছিল তাঁর। ১০ বছর বয়সে তা বেড়ে পৌঁছয় ১৭১ কেজিতে। মাত্র ৩২ বছর বয়সে ইউরেমিয়ায় মৃত্যু হয় রবার্টের। তাঁর সর্বোচ্চ ওজন ছিল ৪৮০ কেজি। শোনা যায়, পিয়ানোর বাক্সের আকারের এক বিশাল কফিনে সমাধিস্থ করা হয় রবার্টকে।

০৮ ১৩

কেনেথ ব্রুমলি তারকা ওজনদার। হাফ টন ড্যাড নামে একটি টিভির অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তখন তাঁর ওজন ছিল ৪৬৮ কেজি। প্রায় চার বছর শয্যাশায়ী থাকার পর গ্যাসট্রিক বাইপাস করাতে হয় তাঁকে। কেনেথকে বাড়ি থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি দেওয়াল ভাঙতে হয়েছিল দমকলকে। ৫৫ বছরের কেনেথ চিকিৎসা এবং ডায়েটের পর ৭৬ কেজি ওজন কমাতে পেরেছিলেন। তবে এখনও নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেননি।

০৯ ১৩

মাইকেল হেব্রাঙ্কোর ওজন ৩৪ বছর বয়সে পৌঁছেছিল ৪৯৮ কেজিতে। তিনি নিজেই জানিয়েছেন, এক বারে ২৪টি শুয়োরের মাংসের চপ, দু’পাউন্ড বেকন এবং ৩৬টি ডিম খেতে পারতেন মাইকেল। তবে একটা সময়ে বাঁচার ইচ্ছে চলে গিয়েছিল। মুখে বন্দুক রেখে ঘোড়াটি প্রায় টেনেই ফেলেছিলেন মাইকেল। শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। বদলে তিনি একটি চিঠি লেখেন ওজন কমানোর বিশারদকে। ১৯ মাসে ওজন কমে ৩৭০ কেজি হয়েছিল মাইকেলের।কিন্তু পরে আবার তা বেড়ে ৪৫৩ কেজি হয়ে যায়। শেষে হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে আবার ওজন কমিয়ে ২৪৯ কেজিতে নামিয়ে আনেন মাইকেল।

১০ ১৩

মায়রা রোজালেসের বিরুদ্ধে তাঁর নিজের বোনের ছেলেকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। ওজনই তাঁকে বাঁচিয়ে দেয় আদালত বলেছিল, ওজনের কারণে রোজালেস ওই খুন করতে সমর্থই নন। ৩১ বছরের রোজালেসের ওজন ছিল ৪৯৫ কেজি। পরে তিনি স্বীকার করেছিলেন, বোনকে বাঁচাতে ওই খুনের অভিযোগ মেনে নিয়েছিলেন তিনি। আসলে বোনের হাতের ধাক্কাতেই দুর্ঘটনাবশত মৃত্যু হয়েছিল তাঁর সন্তানের। মায়রা এখন অসুস্থ। বোনকে জেলে পাঠানোর শোক তাঁর শরীরে প্রভাব ফেলে। তবে তাঁকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেই চলেছেন চিকিৎসকেরা।

১১ ১৩

জন ব্রাউন মিনোখোর ওজন ছিল ৬৩৫ কেজি। ১৯৮৩ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। শোনা যায়, জনকে বিছানা থেকে তুলতে ১৩ জন মানুষ লাগত। পরে অবশ্য বহু চিকিৎসায় ওজন কমে। ১৯৬৩ সালে ৩১৭ কেজি ওজন হয়েছিল জনের। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ওজন কমানোর লড়াই লড়েছেন। শেষ হৃদ্‌যন্ত্র এবং শ্বাসযন্ত্র বিকল হয়ে মারা যান জন। সেই সময়ে তাঁর ওজন ছিল ৩৬২ কেজি।

১২ ১৩

টেরি স্মিথ। ওজন ৩১৭ কেজি। বিবাহিতা। এক সন্তানও রয়েছে তাঁর। বরাবরই তাঁর চেহারা বড়সড়। সাত বছর যখন বয়স, তখন ওজন ছিল ৫১ কেজি। সাধারণ খাবারই অত্যন্ত বেশি পরিমাণে খেতেন। শেষে ৩২ বছর বয়সে বোধোদয় হয়। হয় ডায়েট করব, নয়তো মরব— গোছের প্রতিজ্ঞা করে শুরু হয় ওজন ঝরানোর যুদ্ধ। এখন তাঁর ওজন অনেকটাই কমেছে। তবে টেরি জানিয়েছেন, আরও অনেক পথ হাঁটতে বাকি।

১৩ ১৩

জামবিক খাতোখোভ। বাড়ি রাশিয়ায়। বয়স ১১। তবে ইতিমধ্যেই রেকর্ড ওজনের মালিক সে। ১৪৭ কেজি। এত কম বয়সে এত ওজন আর কোনও শিশুর নেই। যদিও জামবিকের মা নিলা তা মনে করেন না। তাঁর মতে জামবিক সবে বড় হতে শুরু করেছে। ঈশ্বর তাঁকে যে ভাবে বানিয়েছেন, তা বদলানোর দরকার নেই।

সব ছবি সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement