কখনও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ, কখনও বা ‘চাপ’ সামলাতে না পারা—প্রেমে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার ঘটনা অহরহ ঘটে। যার পরিণতিও হয় মর্মান্তিক। সম্প্রতি এমন দু’টি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে।
চার তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এক দিন চার প্রেমিকায় হাজির হন প্রেমিকের বাড়ি। শুরু হয় চিৎকার, অশান্তি। এক সময় অশান্তির মুখে পড়ে প্রেমিক বিষ খান বলে অভিযোগ। কোচবিহারের মাথাভাঙার ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, একসঙ্গে চার তরুণীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেছিলেন ওই ব্যক্তি। নির্বিঘ্নেই চলছিল সব কিছু। কিন্তু বেশি দিন গোপন থাকে না প্রেম। যে চার তরুণী ওই ব্যক্তির বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে দু’জন ঘোকসাডাঙার বাসিন্দা, এক জন ভাউরথানা এলাকার এবং আর এক জন গোলকগঞ্জের বাসিন্দা। শেষ পর্যন্ত ওই ব্যক্তি বিষ খান।
পরের ঘটনা আরও করুণ। কারণ তার প্রেমের ফাঁদে পড়ে নানাবিধ চাপে বিষ খেয়ে প্রাণ গেল দু’জনের। তৃতীয় জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বার বার ফোন করেও লাভ হয়নি। ফোন তোলেননি প্রেমিক। শোক সামলাতে না পেরে স্কুল ছাত্রী বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করল বলে অভিযোগ।
মেনে নিতে পারল না দুই অন্তরঙ্গ বন্ধুও। কিশোরীর মতো তারাও বিষ খেল। ভিন্ন ভিন্ন কারণে। মোট মৃত্যু হল দু’জনের। তৃতীয় জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের ঘটনা।
তিন কিশোরী মধ্যপ্রদেশের সেহোর জেলার আষ্টা টাউনের বাসিন্দা। শুক্রবার স্কুল পালিয়ে তিন জন ইন্দোরগামী বাসে চেপে বসেন। আষ্টা থেকে ইন্দোরের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার। সেখানে থাকেন ১৬ বছরের এক কিশোরীর প্রেমিক। গত কয়েক দিন ধরে ফোন ধরেননি তিনি।
অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার প্রশান্ত চৌবে বলেন, ‘‘দুই কিশোরী বিষ খেয়ে মারা গিয়েছেন। তৃতীয় জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’’
প্রশান্তের কথায়, ‘‘অসুস্থ কিশোরীকে জেরা করে জানা গিয়েছে তিন জন একই স্কুলে পড়ত। অন্তরঙ্গ বন্ধু ছিল। শুক্রবার সকালে স্কুল পালিয়ে ইন্দোরগামী বাসে উঠেছিল।’’
প্রশান্ত আরও জানিয়েছেন, ইন্দোরে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করবে বলেই বাসে উঠেছিল তিন জন। কিশোরী বাসের ওঠার আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে, প্রেমিক দেখা না করলে দুই বন্ধুর সঙ্গে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করবে।
সেই মতো আষ্টা টাউনের এক দোকান থেকে বিষ কিনে নেয়। এর পর ইন্দোরে নেমে প্রেমিককে ফোন করে দেখা করার অনুরোধ জানায় সে।
ভাওয়ারকুঁয়া এলাকায় তিন জন অপেক্ষা করতে থাকে। সময় গড়ালেও আসেনি প্রেমিক। তখনই কিশোরী বিষ খায়।
তাকে দেখে দ্বিতীয় জনও বিষ খায়। তৃতীয় কিশোরীকে জানায়, পরিবারে কিছু সমস্যা রয়েছে বলে এই পদক্ষেপ করছে সে।
তৃতীয় কিশোরীও এর পর বিষ খায়। শেষ পর্যন্ত বেঁচে গিয়েছে সে। যদিও অবস্থা আশঙ্কাজনক। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।
অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার প্রশান্ত জানিয়েছেন, তিন জনের থেকেই কোনও সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়নি। তিন কিশোরীর অভিভাবক খবর পেয়ে ইন্দোরে এসেছেন। তাঁদের বয়ান রেকর্ড করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।