শৈশব থেকেই মুম্বইয়ে থেকেছেন। কিন্তু এই ব্যস্ত শহরে তেমন ভাবে কখনওই মন স্থির করতে পারেননি বলি অভিনেতা জাভেদ জাফ্রে। বার বার আস্তানা বদল করেছেন। শেষ পর্যন্ত সমুদ্রমুখী বিলাসবহুল একটি ফ্ল্যাট কিনে সেখানে প্রথম ‘বাড়ির স্পর্শ’ অনুভব করেছেন অভিনেতা।
মুম্বইয়ের বান্দ্রায় ৪০ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন জাভেদ। অনেক সময় মজার ছলে ‘বান্দ্রা বয়’ (বান্দ্রার ছেলে) হিসাবেই নিজের পরিচয় দেন তিনি। মুম্বইয়ের নানা প্রান্তে বার বার ঠিকানা বদল করে থেকেছেন অভিনেতা।
বান্দ্রা এলাকাটি মোটেও পছন্দের ছিল না জাভেদের। অথচ তাঁর নতুন বাড়ির ঠিকানা সেখানেই। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা বলেন, ‘‘গায়ে ঘেঁষা প্রচুর বহুতল। দেখলেই মনে হয় দমবন্ধ হয়ে যাবে।’’
জাভেদের কথায়, ‘‘বান্দ্রায় চারপাশে যে দিকেই তাকাতাম, সে দিকেই দেখতাম নতুন নতুন আবাসন তৈরি হচ্ছে। ঘরগুলি এতই গায়ে লাগা যে, এক বাড়িতে চা বানানোর সময় অন্য বাড়ি থেকে চিনি আনা যায়।’’
তবে নতুন বাড়িটি যে জায়গায় রয়েছে তা দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন জাভেদ। সাত হাজার বর্গফুটের বিশাল ফ্ল্যাটের দরজা খুলে ঢুকেই বসার ঘর। দেওয়ালের রং ডিমের কুসুমের মতো। ঘরের এক দিকে লম্বা সোফা।
সোফার সামনে পাথরের তৈরি দু’টি টেবিল। ঘরের কোণে টবে পোঁতা গাছ। এক দিকে দেওয়াল জুড়ে বই রাখার জায়গা।
বুকশেল্ফের মাঝখানে ফাঁকা জায়গায় লাগানো রয়েছে টেলিভিশন সেট। প্রতিটি ঘরেই আসবাবের পরিমাণ বেশ কম।
প্রতিটি ঘরের দেওয়ালের রঙের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আসবাবপত্র, বিছানার চাদর এবং পর্দার রং বেছে নেওয়া হয়েছে। ঘরের আয়নাগুলির নকশাও অন্য রকমের।
বসার ঘরে রয়েছে সিলিং থেকে নামানো কাচের লম্বা জানলা। সেখান থেকে মুম্বই শহরের পাশাপাশি বিস্তীর্ণ আরব সাগর দেখা যায়।
জাভেদের বাড়ির বারান্দাটিও বিশাল। সেখানে আলাদা করে বসার জায়গার পাশাপাশি রয়েছে একটি দোলনাও।
৭ হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাটের অন্দরসজ্জার দায়িত্বে রয়েছেন কুশ ভায়ানি। মুম্বইয়ে একটি স্টুডিয়োও রয়েছে কুশের।
জাভেদ বলেন, ‘‘আমার যে বাড়িতে জন্ম হয়েছিল সেখানে আমি জীবনের ১৫ বছর কাটিয়েছিলাম। তার পর বাড়ি বদল হয়েছিল। সেখানে বেশ কয়েক বছর ছিলাম।’’
এর পর স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে মুম্বইয়ের লোখন্ডওয়ালায় চলে যান জাভেদ। সেখানে অনেকটা সময় কাটিয়েছেন তাঁরা। তার পর বান্দ্রার বাড়িটি কেনেন অভিনেতা।
জাভেদ জানান, তাঁর পুত্র এবং কন্যা চেয়েছিলেন যে, নতুন বাড়ি এমন ভাবে বানানো হোক যেখানে দিনের বেলায় সূর্যের আলো ঘরে প্রবেশ করে। গৃহসজ্জার মধ্যে বিশেষ আড়ম্বর চাইছিলেন না অভিনেতার দুই সন্তান।
স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বান্দ্রার নতুন বাড়িতেই থাকবেন জাভেদ। ঘর থেকে সমুদ্র-দর্শন, ছিমছাম সাজের নতুন ঠিকানা অভিনেতাকে তাঁর প্রথম বাড়ির কথাই মনে করিয়ে দেয় বলে দাবি জাভেদের।