হেনরি জিগল্যান্ড। ১০০ বছরেরও আগে হওয়া হেনরির মৃত্যু শতাব্দীর অন্যতম দুর্ভাগ্যজনক এবং অবিশ্বাস্য মৃত্যু বলেও মনে করেন অনেকে।
ঘটনার সূত্রপাত ১৯০৫ সালে। টেক্সাসের হানি গ্রোভ শহরের বিত্তশালী কৃষক পরিবারের ছেলে হেনরি প্রেম করতেন মেসি টিচনরের সঙ্গে। কিন্তু হঠাৎই এক দিন মেসির সঙ্গে সম্পর্কে ইতি ঘটিয়ে বেরিয়ে আসেন হেনরি।
মেসিকে স্পষ্ট করে হেনরি জানিয়ে দেন, এই সম্পর্ক থেকে তিনি বেরিয়ে যেতে চান। তবে হেনরির এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি মেসি। প্রেম হারানোর দুঃখ সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হন তিনি।
বোনকে হারিয়ে হেনরির উপর প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন মেসির দাদা। মেসির আত্মহত্যার প্রতিশোধ নিতে হেনরিকে প্রাণে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
মেসির মৃত্যুর কয়েক দিন পর হঠাৎই হেনরির বাড়ির সামনে উপস্থিত হন মেসির দাদা। তখন বাগানের একটি গাছের পাশে আপনমনে কাজ করছিলেন তিনি। হেনরিকে লক্ষ্য করে দূর থেকে পর পর দু’টি গুলি চালান মেসির দাদা। হেনরির কী হল দেখার আগেই ওই একই বন্দুকের গুলিতে আত্মঘাতী হন তিনি।
মেসির দাদা জানতেও পারেননি যে, তাঁর ছোড়া গুলি হেনরির শরীর বিদ্ধ করতে পারেনি। প্রথম গুলি হেনরির শরীর ছুঁয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল বটে কিন্তু দ্বিতীয় গুলিটি লাগে হেনরির পাশে থাকা একটি গাছে।
এর পরের ঘটনা ২০ বছর পরের অর্থাৎ, ১৯২৫ সালের। বাবার সব সম্পত্তির মালিক তখন হেনরি।
হেনরি সিদ্ধান্ত নেন, বাড়ির সামনের জমিতে কয়েকটি গাছ তিনি কেটে ফেলবেন। ঠিক করেন সবার আগে সেই গাছ কাটবেন, যেটি এক সময়ে তাঁর ‘প্রাণ বাঁচিয়েছিল’।
তবে কুঠারের কোপ মারার পরিবর্তে গাছ কাটতে অন্য এক পন্থা অবলম্বন করেছিলেন হেনরি। আর সেই নতুন উপায়ই তাঁর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
প্রথমে গাছের বিরাট বড় কাণ্ডে ছোট ছোট অনেকগুলি ছিদ্র করেন হেনরি। তার পর সেই ছিদ্রগুলি ডিনামাইট দিয়ে ভরে ফেলা হয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী বিস্ফোরণের পর টুকরো টুকরো হয়ে যায় গাছটি। একই সঙ্গে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে গাছের কাণ্ডে আটকে থাকা বুলেটকেও ছিটকে দেয়।
বিস্ফোরণের পর ওই বুলেট এসে আঘাত করে হেনরির বুকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
হেনরির করুণ পরিণতি স্থানীয় সংবাদপত্রে জায়গা পেয়েছিল। এর পর ধীরে ধীরে হেনরির দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যুর খবর সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
অনেকেই এই ঘটনার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কয়েক জন স্থানীয়দের মতে, বাচ্চারা মজা করতে সংবাদমাধ্যমে এই খবর রটিয়েছিল। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের তরফে সেই ঘটনাকে সত্যি মনে করে ছাপানো হয়।
ঘটনার সত্যতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকলেও কেউ সেই ঘটনাকে মিথ্যা বলেও প্রমাণ করতে পারেননি।