চারদিক পাহাড় দিয়ে ঘেরা। তার মধ্যে রকমারি ফুলের সমাহার। যে দিকে চোখ যায়, শুধুই ফুল আর ফুল। টিউলিপের বাহার দেখলে চোখের পলক পড়বে না। ভূস্বর্গের কোলে সকলেরই নজর টানে টিউলিপের বাগান। যার সৌন্দর্যে মোহিত সকলেই।
শ্রীনগরে ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল টিউলিপ গার্ডেন দেখতে লক্ষ লক্ষ পর্যটক ভিড় জমান প্রতি বছর। নানা রঙের টিউলিপকে সঙ্গী করে ক্যামেরার সামনে ছবি তোলার হিড়িক পড়ে যায় সেখানে। একসঙ্গে এত টিউলিপ দেখা এক বিরল অভিজ্ঞতা।
শ্রীনগরের এই টিউলিপ বাগান ভারতের গর্বও বটে। সম্প্রতি এই বাগানের মুকুটে জুড়েছে নয়া পালক। ওয়ার্ল্ড বুক অফ রেকর্ডসে (লন্ডন) নাম উঠল কাশ্মীরের টিউলিপ বাগানের। এই খবর এক্স হ্যান্ডেলে (টুইটার) জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী।
এই মুহূর্তে এশিয়ার সবচেয়ে বড় টিউলিপের বাগান হল এটি। ১০ লক্ষেরও বেশি টিউলিপ শোভা পাচ্ছে এই বাগানে।
শুধু তাই নয়, ৬৮ ধরনের টিউলিপ রয়েছে বাগানে। যার শোভায় বাগানের সৌন্দর্য আরও বেড়েছে।
ভূস্বর্গ বরাবরই পর্যটকদের অন্যতম প্রিয় জায়গা। কাশ্মীরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করতে চান সকলেই। সেই তালিকায় আলাদা করে জায়গা করে নিয়েছে এই বাগান।
৭৪ একর এলাকা জুড়ে রয়েছে এই টিউলিপ বাগান। ২০০৭ সালে এই বাগান সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। উপত্যকার পর্যটন শিল্পে গতি আনতেই এই বাগানকে তৈরি করা হয়েছে।
শ্রীনগরের ডাল লেক এবং জ়াবারওয়ান পাহাড়ের কোলে সারি সারি টিউলিপ যেন ভূস্বর্গের সৌন্দর্যকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
টিউলিপ বাগানের আগের নাম ছিল সিরাজ বাগ। পরে নাম রাখা হয় ‘ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল টিউলিপ গার্ডেন’।
এই বাগান মনে করাবে বলিউডের বিখ্যাত ছবি ‘সিলসিলা’র সেই গানের দৃশ্য। টিউলিপের বাগানের মধ্যে ‘দেখা এক খোয়াব’ গানে অমিতাভ বচ্চন এবং রেখার অনস্ক্রিন রোম্যান্সে এখনও বুঁদ সিনেপ্রেমীরা। তবে এই গানের শুটিং কাশ্মীরের টিউলিপ বাগানে হয়নি। শুটিং হয়েছিল আমস্টারডামে।
শুধু টিউলিপই নয়। এই বাগানে রয়েছে আরও অনেক ফুল। ড্যাফোডিল, রানুনকুলি-সহ ৪৬ রকমের ফুল রয়েছে এখানে।
পর্যটকদের টানতে প্রতি বছর বসন্তকালে এই বাগানে ‘টিউলিপ উৎসব’-এর আয়োজন করা হয়। সেই সময় বাগানের শোভা আরও বেড়ে যায়। বাড়ে পর্যটকের ভিড়ও।
শুধু দেশের পর্যটকরাই নন, বিদেশিরাও কাশ্মীর ভ্রমণে যান। আর কাশ্মীর গেলেই অবশ্যই তাঁরা ঢুঁ মারেন এই বাগানে।
২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পর্যটক ভিড় জমিয়েছেন টিউলিপ বাগানে। মার্চ এবং এপ্রিল মাসের মধ্যে তিন লক্ষ ৬৫ হাজার পর্যটক গিয়েছেন সেখানে। তাঁদের মধ্যে তিন হাজার পর্যটক ভিন্দেশি।
আকাশপথে কলকাতা থেকে শ্রীনগর যেতে সময় লাগে প্রায় চার ঘণ্টা। শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকে বাগানের দূরত্ব ১৮ কিমি। আর ট্রেনে করে গেলে হাওড়া থেকে প্রথমে জম্মু পৌঁছতে হবে। তার পর সেখান থেকে সড়কপথে শ্রীনগর।