অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীর সঙ্গে সম্প্রতি একটি নাচের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। সেই দৃশ্যে সোহমের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। এমনকি, ছোটপর্দায় ‘রামকৃষ্ণ’র বিপরীতেও অভিনয় করেছেন তিনি।
ফ্ল্যাশ ব্যাক: টালিগঞ্জের ডায়মন্ড সিটি। ১,৬৫০ বর্গফুটের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। যাতায়াতের জন্য গ্যারেজে রাখা বহুমূল্য গাড়ি। মাস ঘুরতেই ঠিকানা বদলে যায় মডেল-অভিনেত্রীর।
কাট টু আলিপুর মহিলা সংশোধনাগার। বর্তমান ঠিকানা ৩০০ বর্গফুটের একটি হলঘর। এসি নয়, মাথার উপর রয়েছে তিনটি সিলিং ফ্যান মাত্র। দিনরাতের সঙ্গী আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারে থাকা আরও ১৯ জন বন্দি। ১৯ জনের মধ্যে কেউ খুনের আসামি, কেউ বা মাদক পাচারে অভিযুক্ত।
অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। যিনি কিছু দিন আগে পর্যন্তও তাঁর পেশার মাধ্যমে মডেলিং ও অভিনয়জগতে নিজের পরিচিতি তৈরি করেছিলেন, এখন ঠিকানার সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে তাঁর পরিচয়ও।
প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম এসএসসি দুর্নীতি মামলায় জড়ানোর পর তদন্তে নাম উঠে আসে অর্পিতারও। তখন থেকেই মডেল-অভিনেত্রী অপেক্ষা ‘পার্থ-ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতাকে নিয়ে সংবাদমাধ্যমের আগ্রহ বেশি। সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে অর্পিতা আর সোহমের নাচের ভিডিয়ো। এর পর অর্পিতার অভিনয় জীবন নিয়ে ফের চর্চা।
কিন্তু মডেল-অভিনেত্রীর জীবন খুব একটা সাদামাটা ছিল না। ছোটপর্দা ছাড়া বড়পর্দাতেও অভিনয় করেছিলেন তিনি।
‘রানী রাসমণী’ বাংলা ধারাবাহিকে একটি মুখ্য চরিত্র ছিলেন রামকৃষ্ণ ওরফে সৌরভ সাহা। সৌরভের সঙ্গেও ছোটপর্দায় অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল অর্পিতাকে।
এ ছাড়াও তাঁর কেরিয়ারের মধ্যগগনে কাজ করেছিলেন টলিউড ইন্ডাস্ট্রির প্রথম সারির অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীর সঙ্গে।
অর্পিতা যখন সংশোধানাগারে তখনই অভিনেতার সঙ্গে তাঁর একটি নাচের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। এই প্রসঙ্গে সোহম মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন। শেষ পর্যন্ত মুখ খুলেছেন অভিনেতা।
আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সোহম বলেন, ‘‘হ্যাঁ, অনেক দিন আগে একসঙ্গে অভিনয় করেছিলাম। আমার কেরিয়ারের একদম প্রথমের দিকের ছবি।’’
সোহম আরও জানান, একসঙ্গে অভিনয় করলেও জানা সম্ভব নয় ব্যক্তিগত জীবনে কে কী করছেন৷ বর্তমান বিধায়ক সোহমের সঙ্গে কোন ছবিতে কাজ করেছিলেন অর্পিতা?
জানা যায়, ছবির নাম ‘জীনা’। ২০১০ সালে সঙ্ঘমিত্রা চৌধুরীর পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল এই ছবি।
সোহম ছাড়াও এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ইন্দ্রাণী হালদার, অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। ছিলেন অভিনেত্রী স্বর্ণকমল দত্তও।
ছিলেন অর্পিতা। শুধু মাত্র নাচের দৃশ্যেই নয়, সোহমের বিপরীতে নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
এখন সেই অভিনেত্রীই জেলবন্দি। জেলে বসে সারা দিন অস্থিরতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন অর্পিতা। এমনকি, তাঁর সহবন্দিরাও সুযোগ পেলেই পার্থের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে টিপ্পনী করছেন।
অর্পিতার আইনজীবী নীলাদ্রিশেখর ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, অর্পিতার বন্ধু, পরিচিত বা পরিজনেরা কেউই যোগাযোগ করছেন না। প্রথম দিকে তা-ও কয়েক জন যোগাযোগ রাখছিলেন। কিন্তু তাঁরাও এখন যোগাযোগ ছিন্ন করে দিয়েছেন।