জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে ছন্দপতন। দীর্ঘ ১৭ বছর পরে এই প্রথম বার মার্ক জাকারবার্গের মালিকাধীন সংস্থার ব্যবহারকারীর সংখ্যা এই পরিমাণে কমল। যার আঁচ এসে পড়ে ফেসবুকের অভিভাবক সংস্থা ‘মেটা’র উপরেও।
ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় মেটার লভ্যাংশ এক ধাক্কায় অনেকটাই কমেছে। ধাক্কা খেয়েছে এই সংস্থার বিজ্ঞাপন ব্যবসাও। বুধবার সংস্থার তরফে এই ঘোষণা করা হয়।
যদিও সংস্থার দাবি বুধবার তাদের ব্যবহারকারীর সংখ্যা আবার বেশ খানিকটা বেড়েছে। তবে এই সংখ্যা শুধু ফেসবুকের না। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটস্অ্যাপ-সহ সব মাধ্যমগুলি মিলিয়েই এই বৃদ্ধি।
এই সঙ্কটের সময়ে বৃহস্পতিবার সবথেকে বড় ধাক্কা খেল এই সংস্থা। বৃহস্পতিবার এই সংস্থার শেয়ারের দাম কমল প্রায় ২৬ শতাংশ। ফলে এক দিনে এই সংস্থার বাজারমূল্য প্রায় ১৭ লক্ষ কোটি টাকা কমেছে।
কেন হঠাৎ এই অবস্থা হল? বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশের মতে, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সংখ্যা অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বৃদ্ধির দিন ফুরিয়েছে। ফেসবুক শেষ দুই ত্রৈমাসিকে প্রায় ১০ লক্ষ ব্যবহারকারীকে হারিয়েছে।
অনেকে আবার মনে করছে, সংস্থা নতুন ব্যবহারকারীদের আকর্ষণ করার ক্ষমতা হারিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যবহারকারীদের সংখ্যা কমে যাওয়া এই ইঙ্গিতই দেয় যে এই অ্যাপের ব্যাবহারকারীদের সংখ্যা সম্ভবত শীর্ষে পৌঁছেছে।
মেটা-র হোয়াটস্অ্যাপ অ্যাপটি এত বছর ধরে বাজারে রাজত্ব করা সত্ত্বেও এই অ্যাপের মাধ্যমে রোজগারের ক্ষেত্র খুব সীমিত। তাই কোনও একটি অ্যাপ সমস্যার মুখোমুখি হলে হোয়াটস্অ্যাপ সেই অ্যাপ-কে আর্থিক সহায়তা দিতে পারছে না। এটাকেও মেটার হঠাত্ পতনের একটি অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
অ্যাপল তাদের অপারেটিং সিস্টেমে নয়া সংযোজন হিসেবে এমন একটি কৌশল রেখেছে যাতে ফেসবুকের মতো অ্যাপগুলি ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য ইচ্ছেমতো ব্যবহার করতে না পারে।
এর ফলে অ্যাপল মোবাইল ব্যবহারকারীদের নেটমাধ্যমে কার্যক্রম নীরিক্ষণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে ফেসবুক। যার কারণে তাদের কাছে সঠিক বিজ্ঞাপনও পৌঁছতে পারছে না এই সংস্থা।
অনেক ব্যবসায়িক সংস্থা তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপনগুলি ফেসবুকে দেওয়ার বদলে গুগলে দিচ্ছে। এত দিন ফেসবুক এই বিজ্ঞাপন ব্যবসায় একাধিপত্ব চালাচ্ছিল। কিন্তু এই নয়া প্রতিদ্বন্দ্বী আসায় তারা ক্ষতির মুখ দেখছে।