জওয়ান-পাঠানে বক্স অফিস মাতিয়ে এই ষাট ছুঁই ছুঁই বয়সেও শাহরুখ খান বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনিই বলিউডের ‘কিং’। কিন্তু এই সাফল্যের নেপথ্যে কি কোনও গোপন ফর্মুলা আছে?
বলিউডে আটের দশক থেকে রাজত্ব শুরু করেছেন শাহরুখ-সহ তিন খান। এঁদের মধ্যে আমির খানের বছর প্রতি সিনেমার সংখ্যা এক আঙুলেরও গাঁট পেরোয়নি গত কয়েক বছরে। সলমনের ভিতরের টাইগার এখনও ‘জিন্দা হ্যায়’। তবে সে বাঘের দাঁত-নখের ধার কিছুটা ক্ষয়েছে।
কিন্তু পাঠান-জওয়ান দেখার পর যাঁরা শাহরুখ ভক্ত নন, তাঁদেরকেও বলতে শোনা গিয়েছে, এই ‘কিং’য়ের ধার নতুন করে বেড়েছে।
কিন্তু কি সেই ম্যাজিক? যা বুড়ো হাড়েও (শাহরুখ ভক্তরা মাফ করবেন) ভেল্কি দেখায়! সম্প্রতি এক গায়ক এ ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে মনে করছেন বলিউডের একাংশ।
গায়কের নাম অভিজিৎ ভট্টাচার্য। শাহরুখের বহু ব্লকবাস্টার হিট ছবিতে তাঁর জন্য গান গেয়েছেন অভিজিৎ।
‘ইয়েস বস’, চলতে চলতে, ম্যায় হুঁ না, বাদশা, ফিরভি দিল হ্যায় হিন্দুস্তানি, দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে যায়েঙ্গের মতো সিনেমায় শাহরুখের মুখে সঙ্গীতের নেপথ্য কণ্ঠ হয়েছেন তিনি। আর এই প্রত্যেকটি ছবিই বক্স অফিসের পাশাপাশি সঙ্গীতে মিউজিক্যাল হিট ছিল।
অভিজিতের ভক্তরা এমনও বলে থাকেন ছবিগুলির হিট হওয়ার পিছনে একটি বড় কারণই ছিল ছবির গানগুলি। তবে একই সঙ্গে তাঁরা এ-ও বলেন যে, শাহরুখের সেরা ছবির গানগুলি গাওয়ার সুযোগও পেয়েছিলেন তিনিই।
সেই অভিজিৎই সম্প্রতি কয়েকটি মন্তব্য করেছেন শাহরুখকে নিয়ে। বলেছেন, শাহরুখের কাউকে দরকার পড়ে না। বরং ব্যাপারটা উল্টো, শাহরুখকেই আসলে সবার দরকার।
শাহরুখকে দেখলে একটি কথা প্রায় সবাই মানেন। তাঁর সহবত জ্ঞান টনটনে। তিনি নিজে কখনও তাঁর সাফল্যের কথা বুক বাজিয়ে বলেন না। বলিউডের তাঁকে দরকার এমন কথাও কখনও বলতে শোনা যায়নি শাহরুখকে। অভিজিতের এই মন্তব্যে তাই কিছুটা চমকেই গিয়েছেন শাহরুখ ভক্তরা।
তবে অভিজিৎ এখানেই থামেননি। বরং এর সঙ্গে তিনি আর যা যা বলেছেন, তা শুনে অবাক হয়েছে বলিউড।
অভিজিৎ বলেছেন, ‘‘শাহরুখ একজন অত্যন্ত বাণিজ্যিক মানসিকতার মানুষ। নিজের প্রয়োজনে তিনি যাঁকে খুশি, যেমন খুশি ব্যবহার করতে পারেন। বলিউডে তাঁর দীর্ঘ কেরিয়ারে তিনি এমনটাই করে এসেছেন।’’
অভিজিতের কথায় শাহরুখের সাফল্যের অন্যতম কারণ হল তিনি নিজের উত্তরণের পথে কোনও কাঁটা রাখেন না। তাঁর আর তাঁর সাফল্যের মাঝে কেউ এলে তাঁদের সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি।
ঠিক কী প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করছেন অভিজিৎ? তা স্পষ্ট নয়। নিজের অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনা সংস্থাও রয়েছে শাহরুখের। তবে কি সেই ব্যবসার কথাই বলতে চেয়েছেন অভিজিৎ? নাকি বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতেও কোনও প্রতিযোগী না রাখার কথা বলেছেন তিনি?
স্পষ্ট করেননি অভিজিৎ। আর তাতেই চটেছেন শাহরুখ ভক্তেরা। তাঁদের বক্তব্য, শাহরুখের সব থেকে ভাল ছবিগুলিতে গান গাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন অভিজিৎ। সঙ্গীত জগতের অনেকেই শাহরুখের ছবিতে গান গেয়েছেন। উদিত নারায়ণ, কুমার শানু, সোনু নিগম এমনকি শানও। কিন্তু অভিজিতের গাওয়া গানের সংখ্যা অনেক বেশি। আর তিনিই কিনা শাহরুখ বিরোধী মন্তব্য করছেন?
অবশ্য এমন এই প্রথম নয়। একদা শাহরুখের অধিকাংশ ছবিতে গান গাওয়া অভিজিৎ আগেও বহুবার শাহরুখের বিরুদ্ধে নানা রকম মন্তব্য করেছেন। যদিও কিং খান কখনও সেই সব মন্তব্যে জবাব দেননি।