হরিয়ানার গুরুগ্রামে একটি কলসেন্টারে কাজ করতেন শ্রদ্ধা ওয়ালকরের লিভ-ইন সঙ্গী আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। বৃহস্পতিবার সেখানকার কর্মীদের বয়ান নেয় দিল্লি পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, কলসেন্টারের কর্মীদের অভিযোগ করেছেন, আফতাবের আচরণ ভাল ছিল না। মহিলা সহকর্মীদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করতেন।
কলসেন্টার সূত্রে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, নিয়মিত কাজে আসতেন না আফতাব। মহিলা সহকর্মীদের সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগে তাঁকে কাজ থেকে বরখাস্তও করা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন কলসেন্টারের কর্মীরা।
জেরায় আফতাব পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন, অন্য এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল তাঁর। ওই মহিলার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কও ছিল বলে দাবি করেছেন আফতাব। বাড়িতে আরও এক বন্ধু আসতেন বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ।
ইতিমধ্যেই ২০২০ সালের শ্রদ্ধার একটি ছবি প্রকাশ্যে এনেছেন তাঁর বন্ধুরা। সেই ছবিতে শ্রদ্ধার নাকে, মুখে ক্ষতের দাগ স্পষ্ট। দাবি করা হচ্ছে, শ্রদ্ধাকে নির্মম ভাবে মারধর করেছিলেন আফতাব। যার জেরে ৩ দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়েছিল শ্রদ্ধাকে।
লক্ষ্মণ নাদার নামে শ্রদ্ধার এক বন্ধু দাবি করেছেন, তাঁকে এক দিন শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন যে, আফতাব এবং তাঁর মধ্যে একাধিক বার ঝগড়া এবং মারধরের ঘটনা ঘটেছে। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠিয়ে তাঁকে উদ্ধার করার জন্যও বলেছিলেন শ্রদ্ধা।
আফতাবের আরও দাবি, টাকাপয়সার খরচ নিয়ে ১৮ মে দু’জনের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। কারণ দু’জনের হাতটান চলছিল। দিল্লি থেকে মুম্বইয়ে গিয়ে ব্যাগপত্তর কে নিয়ে আসবেন, তা নিয়ে কথা কাটাকাটিও হয়।
আফতাবের বিরুদ্ধে শ্রদ্ধাকে খুনের অভিযোগ উঠলেও, পোক্ত প্রমাণ পেতে পুলিশকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে। কারণ এখনও পর্যন্ত শ্রদ্ধা খুনের সব ক’টি অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
আফতাবের বাড়ি থেকে একটি করাত মিললেও, সেটি খুনে ব্যবহার হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এখনও মেলেনি শ্রদ্ধার কাটা মুন্ডুও। অন্য দিকে, দিল্লির মেহরৌলীর জঙ্গল থেকে উদ্ধার হওয়া হাড়গোড় শ্রদ্ধার কি না, তা নিয়েও একটা সংশয় তৈরি হয়েছে।
শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের বেশ কিছু তথ্যপ্রমাণ হাতে এসেছে পুলিশের। কিন্তু আরও পোক্ত প্রমাণ খুঁজতে মরিয়া পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দিল্লির আদালত আফতাবকে পাঁচ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। আফতাবের নারকো পরীক্ষার জন্যও দিল্লি পুলিশকে অনুমতি দিয়েছে আদালত। উল্লেখযোগ্য, আফতাব নিজেও এই পরীক্ষায় সম্মতি দিয়েছেন।