dead bodies

Sharif Chacha: হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে পচাগলা দেহ নেন শরিফ চাচা! ধুয়েমুছে তাদের জন্য পাতেন শেষশয্যা

ফৈজাবাদে বাড়ি শরিফের। শরিফের ‘শরিফি’ নজরে পড়েছে ভারত সরকারেরও। ২০২০-তে তাঁকে তাঁর কাজের জন্য পদ্মশ্রী সম্মান দিয়েছে কেন্দ্র।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২২ ০৮:২৬
Share:
০১ ১৩

সকালে ঘুম থেকে উঠে নিয়ম করে তিনটি জায়গায় যান শরিফ চাচা— থানা, হাসপাতাল, আর শেষে মর্গে। বেওয়ারিশ দেহ পেলেই সঙ্গে নিয়ে চলে আসেন।

০২ ১৩

সেই দেহ কী অবস্থায় রয়েছে, দেহটি পুরুষের না মহিলার— তা নিয়ে শরিফ চাচার মাথাব্যথা নেই। পচা, গলে যাওয়া, ক্ষতবিক্ষত, মুণ্ডহীন, বিকৃত, রাইগর মর্টিস ধরে যাওয়া এমনকি রক্তাক্ত পোশাকে মোড়া দেহও তিনি নেন। পরম মমতায় তাঁদের ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করেন। পাল্টে দেন পোশাক। তার পর?

Advertisement
০৩ ১৩

শরিফ চাচা তাঁদের যত্ন করে শুইয়ে দেন শেষশয্যায়। কারও মাটির নীচে কারও বা কাঠের চিতায় ‘বিছানা’ পাতেন তিনি। বেওয়ারিশ দেহগুলির মাটি পায় শরিফের জন্যই। এ যাবৎ ৩০০০-এরও বেশি হিন্দু দেহ সৎকার করেছেন। গোর দিয়েছেন আড়াই হাজার মুসলিমকে।

০৪ ১৩

ফৈজাবাদে বাড়ি শরিফের। সবাই শরিফ চাচা নামেই ডাকেন। শরিফের ‘শরিফি’ নজরে পড়েছে ভারত সরকারেরও। ২০২০-তে তাঁকে তাঁর কাজের জন্য পদ্মশ্রী সম্মান দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু শরিফ কোনও পুরস্কারের আশায় এই কাজ করেননি। করেন না।

০৫ ১৩

২৭ বছর ধরে ভাগাড় ঘেঁটে একের পর এক দেহ তুলে এনেছেন। নিজে সম্মান পাবেন বলে নয়। তাঁর ভাবনা ছিল একটাই, মৃত্যুর পর বেওয়ারিশ দেহগুলির যাতে কোনও অসম্মান না হয়।

০৬ ১৩

এক কালে সাইকেল সাড়াইয়ের কাজ করতেন শরিফ। বড় ছেলে মহম্মদ রইস খান যখন বাবার ব্যবসায় না এসে সুলতানপুরে কেমিস্টের কাজ করতে চাইলেন, তখন আপত্তি করেননি শরিফ। কিন্তু সেই ছেলে আর ফেরেনি।

০৭ ১৩

বেশ কয়েক সপ্তাহ ছেলের খবর না পেয়ে তাঁকে খুঁজতে সুলতানপুরে যান শরিফ। প্রায় একমাস ধরে দরজায় দরজায় ঘুরে ছেলেকে খুঁজে পান রেললাইনের ধারে। রইসের শরীর একটি বস্তায় মোড়া ছিল। তার অনেকটাই খুবলে খাওয়া।

০৮ ১৩

শরিফ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘ওই দৃশ্য জীবনে ভুলতে পারব না। উন্মাদ মনে হচ্ছিল নিজেকে। কিন্তু সে দিনই ঠিক করি আর কারও সন্তানের এই পরিণতি হতে দেব না।’’

০৯ ১৩

শরিফ মনে করেন মৃত্যুর পরও সম্মান জরুরি। মৃত্যুতেও শালীনতা থাকা দরকার। সেই ভাবনা থেকেই কাজ শুরু তাঁর।

১০ ১৩

এক সময়ে একাই সব কাজ করতেন। এখন বয়স ৮২। কয়েক জন রিকশাওয়ালা আর নিজের নাতির সাহায্যে এখনও তিনি লক্ষ্যে অবিচল।

১১ ১৩

শরিফের কথা এখন অনেকেই জানেন। তাই কোনও দেহ ৭২ ঘণ্টা বেওয়ারিশ পরে থাকলে পুলিশই খবর দেয় শরিফকে।

১২ ১৩

এক একটি দেহ সৎকার করতে খরচ পড়ে ৩০০০-৫০০০ টাকা। সে টাকা কোথা থেকে আসে? সাইকেল সারাইয়ের দোকান আর নেই শরিফের। ১৫ জনের পরিবারের খাবার জোগান দেন একমাত্র নাতি, যিনি এক জন তথ্য-প্রযুক্তি কর্মী। তবে খরচ জোগাড় হয়েই যায়।

১৩ ১৩

শরিফের নাতি সাবির জানিয়েছেন, অনেকেই তাঁদের কাজ দেখে অর্থ সাহায্য করেন, তা দিয়েই সৎকারের কাজ করেন তাঁরা। তবে সাবির এ-ও বলেছেন যে, এই অসুবিধার মধ্যে কাজ করতে গিয়েই আরও বেশি করে অনুপ্রেরণা পান তাঁরা। যা তাঁদের আগামী দিনেও চালিয়ে যাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement