Sealdah Train Service Disruption

লাইনে থমকে রয়েছে একের পর এক লোকাল ট্রেন, ছাড় পায়নি রাজধানী, দুরন্তও, বিশৃঙ্খলা চরমে, কেন?

বিপাকে লক্ষ লক্ষ নিত্যযাত্রী। শনিবার পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। দুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে যাত্রীদের। দূরপাল্লার ট্রেনও আটকে পড়েছে। কিন্তু কেন হঠাৎ এই পরিস্থিতি তৈরি হল?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২৪ ১৯:৫৯
Share:
০১ ১৮

শুক্রবার থেকে শিয়ালদহ মেন এবং উত্তর শাখায় বিঘ্নিত ট্রেন চলাচল। বিপাকে লক্ষ লক্ষ নিত্যযাত্রী। শনিবার পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। দুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে যাত্রীদের। দূরপাল্লার ট্রেনও আটকে পড়েছে। কিন্তু কেন হঠাৎ এই পরিস্থিতি তৈরি হল?

০২ ১৮

শনিবার যাত্রীদের ভোগান্তি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা শুরু হয় শুক্রবার। ওই দিন বাতিল হয় একের পর এক ট্রেন। যে ক’টা ট্রেন চলেছে, দেরিতে পৌঁছেছে গন্তব্যে। সঠিক সময়ে স্কুল, কলেজ, অফিসে পৌঁছতে পারেননি নিত্যযাত্রীরা। ট্রেনে ছিল উপচে পড়া ভিড়। স্টেশনে বিশৃঙ্খলা।

Advertisement
০৩ ১৮

এই পরিস্থিতিতে ভিড়ের চাপে ট্রেন থেকে পড়ে যান ২২ বছরের এক যুবক। শুক্রবার সকালে শিয়ালদহ মেন শাখায় টিটাগড় ও খড়দহ স্টেশনের মাঝে ঘটে এই দুর্ঘটনা। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে বিএন বসু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। মৃত ওই যুবকের নাম মহম্মদ আলি হাসান আনসারি। তিনি টিটাগড়ের বাসিন্দা।

০৪ ১৮

যাত্রীদের বড় অংশ এ জন্য রেলের গাফিলতির দিকেই আঙুল তুলেছেন। অফিস, স্কুল, কলেজ চালু থাকার দিনে এই পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁরা। যদিও রেল মানতে চায়নি। তাদের তরফে জানানো হয়, সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে পরিষেবার বিষয়ে জানানো হয়েছে। সমাজমাধ্যমেও এই সংক্রান্ত তথ্য পোস্ট করা হয়েছে।

০৫ ১৮

শনিবার যাত্রীদের ভোগান্তি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ। শিয়ালদহ উত্তর এবং মেন শাখায় যে সব ট্রেন চলাচল করে, সেগুলি প্রায় সবই দেরিতে ছেড়েছে। লাইনে সামনে আগের ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকায় থেমে থেমে চলেছে। দেরিতে পৌঁছেছে গন্তব্যে।

০৬ ১৮

এক-একটি স্টেশনে দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল ট্রেন। কোনও কোনও স্টেশনে ১০ থেকে ১৫ মিনিটও দাঁড়িয়ে থেকেছে। কিছু ট্রেন আবার সিগন্যাল না পেয়ে দুই স্টেশনের মাঝে দাঁড়িয়ে থেকেছে।

০৭ ১৮

এর মধ্যে ট্রেন কম চলার কারণে ভিড়ের চাপ ছিল খুব বেশি। অনেক যাত্রী ট্রেনে চাপতে পারেননি। এই গরমে দীর্ঘ ক্ষণ ট্রেনের ভিতরে থেকে নাস্তানাবুদ অবস্থা নিত্যযাত্রীদের। অন্য দিকে, সময় মতো ট্রেন না আসায় সব স্টেশনেই বৃদ্ধি পেয়েছে ভিড়। তৈরি হয়েছে বিশৃঙ্খলা।

০৮ ১৮

ট্রেন এড়িয়ে অনেকেই সড়কপথে গন্তব্যে পৌঁছনোর চেষ্টা করেছেন। তাতে বাসে ভিড় বেড়েছে। অটোর লাইন দীর্ঘ হয়েছে। রাস্তায় বেড়েছে যানজট। ব্যারাকপুর, সোদপুরে এই ছবি দেখা গিয়েছে।

০৯ ১৮

যে ট্রেনগুলি চলেছে, তাদের মধ্যে বেশ কয়েকটি আর শিয়ালদহ স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি। দমদম স্টেশনেই থেমে গিয়েছে। দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনেও থেমে গিয়েছে বহু ট্রেন। সেখান থেকে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছতে ভোগান্তি হয়েছে যাত্রীদের। অনেকেই লাইন ধরে হেঁটে বিধাননগর বা শিয়ালদহে পৌঁছনোর চেষ্টা করেছেন।

১০ ১৮

বিঘ্নিত হয়েছে রাজধানী এক্সপ্রেসের পরিষেবাও। শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ শিয়ালদহে পৌঁছনোর কথা ছিল যে ট্রেনের, তা দুপুর দেড়টার সময় ঢুকেছে শিয়ালদহ স্টেশনে। তার আগে তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিল দমদম স্টেশনের বাইরের অংশে। ধৈর্য হারিয়ে ট্রেন থেকে নেমে মালপত্র নিয়েই হাঁটা দেন বহু যাত্রী।

১১ ১৮

দমদমে প্রায় চার ঘণ্টা আটকে ছিল বিকানের থেকে শিয়ালদহগামী দুরন্ত এক্সপ্রেসও। ট্রেনটির শিয়ালদহে পৌঁছনোর কথা ছিল দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে। কিন্তু সেটি দমদমে পৌঁছয় দুপুর ২টো নাগাদ। তার পর থেকে দাঁড়িয়ে। অগত্যা যাত্রীরা ট্রেন থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করেন শিয়ালদহের উদ্দেশে। তাঁরাও মালপত্র নিয়েই লাইনের পাশ দিয়ে হাঁটতে শুরু করেন।

১২ ১৮

কিন্তু কেন এই পরিস্থিতি? শিয়ালদহ স্টেশনে পাঁচটি প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণের কাজ চলছে। ওই পাঁচটি প্ল্যাটফর্ম থেকে যাতে ১২ কামরার ট্রেন ছাড়তে পারে, সেই উদ্দেশ্যেই এই কাজ করা হচ্ছে বলে আগেই জানিয়েছিল রেল।

১৩ ১৮

শুক্রবার পূর্ব রেল (শিয়ালদহ)-এর ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার দীপক নিগমের তরফে এক্স (সাবেক টুইটার)-এ জানানো হয়েছে, শিয়ালদহ স্টেশনে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ দ্বিতীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। প্রযুক্তি, বিদ্যুৎ, অপারেশন, সিগন্যাল, টেলিকম বিভাগ এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। এই নিয়ে শনিবারও এক্সে একটি পোস্ট দিয়েছে ডিআরএম। সেখানেও কাজের একটি ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে।

১৪ ১৮

শিয়ালদহ স্টেশন থেকে মেন, উত্তর এবং দক্ষিণ শাখায় লোকাল ট্রেন চলে। এর মধ্যে মেন এবং উত্তর শাখার ট্রেন ১ থেকে ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়ে। ১৫ থেকে ২১ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়ে দক্ষিণ শাখার ট্রেন।

১৫ ১৮

প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণের কাজের প্রভাব দক্ষিণ শাখায় পড়েনি। সেখানে ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক আছে। কিন্তু মেন ও উত্তর শাখায় পরিষেবায় বদল আনা হয়েছে।

১৬ ১৮

গত বুধবার প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণের কাজের কথা সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছিলেন দীপক। পরিষেবায় বদল আনার কথা জানানো হলেও, কোন কোন ট্রেন বাতিল বা কোন কোন ট্রেনের যাত্রাপথ নিয়ন্ত্রণ করা হবে, সেই সংক্রান্ত কোনও নির্দেশিকা বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত রেলের তরফে প্রকাশ করা হয়নি। তাতেই বিভ্রান্তি।

১৭ ১৮

পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, সংবাদপত্রে রেলের তরফে বিজ্ঞাপন দিয়ে পরিষেবা সংক্রান্ত সকল তথ্য জানানো হয়েছে। তা মানতে চাননি যাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, শুক্রবার সকালের সংবাদপত্রে এই বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে। তত ক্ষণে বহু যাত্রী বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন।

১৮ ১৮

এ বার প্রশ্ন উঠছে, কবে শেষ হবে এই ভোগান্তি? এ ভাবে আর কত দিন যাতায়াত করতে হবে?

ছবি: নিজস্ব, টুইটার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement