ফিল্মের পর্দায় হোক বা টেলিভিশনে শোয়ে সঞ্চালনার কাজে অথবা ঘরোয়া আড্ডায়— সলমনের ডান হাতে সব সময়ই দেখা যায় একটি ব্রেসলেট। একমাত্র ফিল্মের চরিত্রের প্রয়োজনে কখনওসখনও সেই ব্রেসলেটটি হাতছাড়া করতে বাধ্য হন সলমন। না হলে দিনরাত নাকি তিনি সেটি পরেই থাকেন!
ডান কব্জি ছা়ড়িয়ে প্রায় হাত খুলে বেরিয়ে যাওয়া সলমনের ওই ব্রেসলেটি কেন তাঁর সব সময়ের সঙ্গী? খোলসা করেছেন খোদ সল্লু মিয়াঁ।
১৯৮৮ সালে জে কে বিহারির ফিল্ম ‘বিবি হো তো অ্যাইসি’-তে সহ-অভিনেতা হিসেবে বলিউডে অভিষেক হয়েছিল সলমনের। তার পর বলিউডে তিরিশ বছরেরও বেশি পার করে ফেলেছেন চিত্রনাট্যকার সেলিম খানের ছেলে।
এই কয়েক দশকে সলমন খান যে স্বয়ং একটি ‘ব্র্যান্ড’-এ পরিণত হয়েছেন, তা তাঁর অতি বড় বিরোধীও মানবেন। ফলে সলমনের ফিল্ম তো বটেই, তাঁর ব্যক্তিজীবনও আতশকাচের তলায়।
এমনকি, তিনি কোন পার্টিতে কী পোশাকে এলেন বা হেয়ারস্টাইল বদলালেন কি না, তা নিয়ে ‘পেজ থ্রি’-র পাতা জমজমাট থাকে। তবে সল্লু মিয়াঁর ডান হাতের ব্রেসলেট নিয়ে দীর্ঘ দিন বিশেষ কিছু জানা যায়নি।
কেন ব্রেসলেট পরেন সলমন? সলমনের বহু ভক্তের কাছে তা অজানা থাকলেও ‘গুরু’র দেখাদেখি তাঁরাও ব্রেসলেট পরতে শুরু করে দিয়েছেন। তা সে তাঁদের ব্যক্তিত্বের সঙ্গে যতই বেমানান হোক না কেন!
আপনি কেন ব্রেসলেট পরেন সলমন? বেয়াড়া প্রশ্নটা করেছিলেন এক সাংবাদিক। সে প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ছোটবেলার কথা শুনিয়েছেন সলমন।
একটি আন্তর্জাতিক ইভেন্টের সময় সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে সলমন জানিয়েছেন, বাবার কাছে থেকে ব্রেসলেটটি উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন তিনি। সলমনের কথায়, ‘‘ছোটবেলা থেকেই দেখেছি, সব সময় এ রকমই একটা ব্রেসলেট পরে থাকতেন বাবা। সে সময় ভাবতাম, ব্রেসলেট পরে বাবাকে কী ‘কুল’ই না লাগছে! বাচ্চারা যেমন সব কিছু নিয়ে খেলাধুলো করে, আমিও বাবার ব্রেসলেটটা নিয়ে খেলতাম।’’
বাবার ব্রেসলেটটি পছন্দ হলেও ছোটবেলায় সেটি সলমনের হাতে আসেনি। তার জন্য দীর্ঘ দিন অপেক্ষা করতে হয়েছে। সলমন বলেছেন, ‘‘ছোটবেলায় ব্রেসলেট পরতাম না। তবে বলিউডে কাজ শুরুর করার পর বাবা আমাকে একেবারে নিজের ব্রেসলেটের মতো দেখতে একটি ব্রেসলেট উপহার দেন। সেই থেকে এটা আমার সঙ্গেই রয়েছে।’’
নিজের ডান হাতের ব্রেসলেটটিকে সৌভাগ্যের প্রতীক বলে মনে করেন সলমন। বিদেশি সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেছেন, ‘‘আমার ব্রেসলেটের মধ্যে এই যে পাথরটা দেখছেন, একে ফিরোজা বলে। এ রকম ধরনের পাথর দু’টিই রয়েছে। একটা হল আকিক আর একটা ফিরোজা। এই ফিরোজাটি হল নীলকান্তমণি।
ব্রেসলেটের পাথরটি নিয়ে একটি বদ্ধমূল ধারণাও রয়েছেন সলমনের। তাঁর দাবি, ‘‘সমস্ত নেতিবাচক মনোভাব বুঝে নেয় ফিরোজা।’’ পাশাপাশি আরও একটি দাবি করেছেন তিনি। বলিউডের সুপারস্টারের কথায়, ‘‘প্রত্যেক বার অশুভ কিছুর মুখোমুখি হলে তা বুঝতে পারে ফিরোজা।’’
সলমন জানিয়েছেন, বেশ কয়েক বার তাঁর ব্রেসলেটের পাথরে চিড় ধরে গিয়েছে। তা যে অশুভ ঘটনার ইঙ্গিত, তা-ও মনে করেন সলমন। সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘নেতিবাচক কোনও কিছু আমার দিকে ধেয়ে এলে এই পাথর তা আটকে দেয়। পাথরের শিরায় সেই অশুভ শক্তিকে শুষে নেয় ফিরোজা। সে কারণেই তাতে চিড় ধরে যায়।’’