সম্প্রতি তিন তিনটি জাতীয় পুরষ্কার জিতে নিল ওম রাউত পরিচালিত হিন্দি ছবি ‘তানাজি’। সতেরো দশকের মুঘল-মরাঠা সংঘর্ষের উপর এই ছবির মূল চিত্রনাট্য বোনা হয়েছে।
২০২০ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল অজয় দেবগণ ও কাজলকে। খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সইফ আলি খান।
আনুমানিক ১১০ থেকে ১৫০ কোটি টাকা বাজেটের এই ছবিটি বক্স অফিস থেকে মোট ৩৬৮ কোটি টাকা উপার্জন করে। ড্রামা ও অ্যাকশনের সঙ্গে ঐতিহাসিক গাথার এই মেলবন্ধন বক্স অফিসের সঙ্গে দর্শকদের মনেও জায়গা করে নেয়।
সিনেমাটোগ্রাফি, ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর থেকে শুরু করে অভিনেতাদের পোশাক— সব কিছুতেই ইতিহাসের ছাপ ধরা দেয়। পুরো সিনেমা জুড়েই বিনোদনের কোনও খামতি ছিল না।
তবে, মরাঠা পেশওয়াদের বীর সেনাপতির ভূমিকায় অজয় দেবগণ অভিনয় করলেও দর্শকদের মনে বিশেষ জায়গা করে নেন উদয়ভান সিংহ রাঠৌর।
চরিত্রের পরতে পরতে যে নৃশংসতা রয়েছে, তা অভিনয় দক্ষতার মাধ্যমে সাবলীল ভাবে বড়পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন সইফ আলি খান।
বক্স অফিসে বিপুল সাড়া ফেললেও সইফ এই ছবির বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন। অভিনেতার দাবি, এই ছবিতে ভুল তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি প্রথমে কিছু না বললেও এর পর এই ধরনের কিছু ঘটলে তিনি অবশ্যই বিরোধিতা করবেন বলেও জানান।
এমনকি, ভুল তথ্যে ভরা কোনও ছবিতে তিনি অভিনয়ও করবেন না বলে জানিয়েছেন সইফ। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ব্রিটিশরা যত দিন শাসন করতে আসেননি, তত দিন ‘ভারত’ বলে কোনও কিছুই ছিল না। ছবিটি নাকি ভুলভাল তথ্যের উপর ভিত্তি করে বানানো।
কিন্তু আজ সেই ছবিই জাতীয় পুরষ্কার বিজয়ী। অজয় দেবগণও এই ছবির জন্য জাতীয় পুরষ্কার পেয়েছেন। যেখানে জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত ছবির মধ্যে অধিকাংশই দক্ষিণী ছবি, সেখানে বলিউডের এই একটি মাত্র ছবি তিনটি পুরষ্কার জয় করেছে।
‘তানাজি’ ছাড়া আরও একটি হিন্দি ছবি ‘তুলসীদাস জুনিয়র’ জাতীয় পুরষ্কার পেয়েছে। এ ছাড়া অধিকাংশ ছবিই দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অন্তর্ভুক্ত।
দক্ষিণী সিনেমার সঙ্গে টেক্কা দিয়ে ‘তানাজি’ ছবিটি যে সাফল্যের এই শিখরে পৌঁছেছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
যে ছবির বিষয়ে অভিনেতা এই ধরনের মন্তব্য করেন পরে সেই সিনেমাই জাতীয় পুরষ্কার পায়। তবে, এমন মন্তব্য করার পর জনরোষের শিকার হন সইফ।
অনেকে তাঁকে নিয়ে মজাও করেছেন। এত বড় মাপের অভিনেতা হয়ে ভারতের ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান নেই বলে অনেকেই অবাক হয়েছেন।
কেউ কেউ আবার ভারতের পুরনো ম্যাপও নেটমাধ্যমে ভাগ করে নিয়েছেন। এক সময় সইফ জানিয়েছিলেন, ইতিহাস বিষয়ের প্রতি তাঁর আগ্রহ রয়েছে বলেই ছেলের নাম তৈমুর রেখেছেন।
এই ঘটনার প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছেন অনেকে। তাঁদের দাবি, এক জন ইতিহাসপ্রেমী হয়ে সইফের পক্ষে এ রকম মন্তব্য করা অত্যন্ত লজ্জাজনক।