Russia

Ukraine Russia conflict: রুশ বোমায় ছারখার ইউক্রেনের সাজানো শহর! ধ্বংসস্তূপে খোঁজ সদ্য অতীত স্মৃতির

শহরটাকে দুরমুশ করে দিয়ে চলে গিয়েছে রুশ বাহিনী। রাজধানী কিভের কাছেই ওই শহুরে জনপদের কিছু দিন আগের এবং এখনকার তোলা ছবি দেখলেই তা মালুম হবে।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২২ ১৫:৪১
Share:
০১ ২১

রুশ ‘বুলডোজার’-এ পিষছে ইউক্রেনের একের পর এক শহর। কিভে যাওয়ার পথে রাশিয়ার সেনাবহর ইউক্রেনের যে যে শহরের উপর দিয়ে এগিয়েছে, তার প্রত্যেকটিই এই মুহূর্তে জনমানবহীন। বসবাসের অযোগ্য। তবে বুধবার রুশ ফৌজের ছেড়ে যাওয়া যে শহরটির ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, তা দেখে শিরদাঁড়া বেয়ে হিমস্রোত নেমে যেতে বাধ্য।

০২ ২১

ইউক্রেনের শহরটির নাম বোরোডিয়াঙ্কা। রাজধানী কিভ থেকে ৬০ কিলেমিটার দূরে ছোট্ট শহুরে জনপদ।

Advertisement
০৩ ২১

জন সংখ্যা সাকুল্যে ১৩ হাজার। তবে শহরতলি বলা যাবে না। বোরোডিয়াঙ্কা অভিজাত মানুষের বাসস্থান। আধুনিক সুযোগসুবিধা এমনকি আন্তোনোভ বিমানবন্দরও কাছেই।

০৪ ২১

তবে এই সব কিছুই এখন ‘ছিল’ হয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবারের পর থেকে বোরোডিয়াঙ্কার জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে একটা কঙ্কালসার, কালো ঝুলের মতো বোরোডিয়াঙ্কার ভূত। যে ছবি দেখলে বিশ্বাস করতে অসুবিধা হয়, ক’দিন আগে শহরের চেহারা কেমন ছিল।

০৫ ২১

বোরোডিয়াঙ্কায় রুশ বাহিনীর ‘বুলডোজার’ সুলভ মার্চিংয়ের পরের ছবি প্রথম প্রকাশ করেন ইউক্রেনের বিদেশ বিষয়ক মন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা।

০৬ ২১

একটি প্রায়-ধ্বংস হয়ে যাওয়া বহুতলের ছবি দিয়ে দিমিত্রি যা লিখেছেন, তার তর্জমা করলে দাঁড়ায়, ‘‘যে সব মিথ্যেবাদী রাশিয়ানরা বলছেন, ইউক্রেনের কোনও শহরে বা জনপদে বোমা বর্ষণ করা হয়নি, তাঁদের এই ছবিটা দেখতে বলুন।’’

০৭ ২১

বহুতলটির ছবি যখন তোলা হয়েছিল, তখনও ভিতরে আগুন জ্বলছে। দেখা যাচ্ছে, বোমার আঘাতে প্রায় দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে বাড়িটি। ঘরের আব্রু খুলে দিয়ে গুঁড়ো হয়ে মাটিতে পড়ে গিয়েছে গোটা একটা দেওয়াল। আসবাব সব এসে পড়েছে মাটিতে।

০৮ ২১

অ্যাপোক্যালিপ্স বোধ হয় একেই বলে! শব্দটি ধ্বংসের সমার্থক হিসেবে ব্যবহার করা হলেও এর আরেক অর্থ উন্মোচন। রুশ বাহিনীর দৌরাত্ম্যে বোরোডিয়াঙ্কার আবরণ খুলে প্রকাশ্যে চলে এসেছে শহরটির দুর্বল দিকটি। দিমিত্রি বলেছেন, বোরোডিয়াঙ্কায় রুশ বাহিনী গত দু’দিন ধরে টানা বোমাবর্ষণ করেছে। তাতে মৃত্যুও হয়েছে শহরের বহু বাসিন্দার।

০৯ ২১

দিমিত্রি ওই ছবি টুইট করেন বৃহস্পতিবার রাত ৯টার সময়। তার কয়েক ঘণ্টা পর শুক্রবার সকালে প্রকাশ্যে আসে বোরোডিয়াঙ্কার আর একটি ভিডিয়োও। শহরে মূল রাস্তা বরাবর ড্রোন উড়িয়ে যেটি রেকর্ড করেছিলেন কেউ। ওই ভিডিয়োয় আরও স্পষ্ট হয়েছে শহরের বর্তমান অবস্থা।

১০ ২১

ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, শুধু একটি বহুতল নয়। মূল রাস্তার দু’ধারে পর পর সার দেওয়া সবক’টি বাড়ির মাথা থেকেই বেরিয়ে আসছে কালো ধোঁয়া। ভিতরে আগুন জ্বলছে। মাটিতে এসে পড়েছে দেওয়াল। প্রায় গোটা শহরটাকেই একটা ধ্বংসস্তূপ বলা চলে।

১১ ২১

বোরোডিয়াঙ্কা ছোট জনপদ হতে পারে। তবে এর ইতিহাস বেশ প্রাচীন। শহরটি ইউক্রেনে একটি পর্যটন কেন্দ্রও।

১২ ২১

বোরোডিয়াঙ্কার এক প্রান্তে রয়েছে ভেজদা নদী। অন্য প্রান্তে একটি চিড়িয়াখানা। তা ছাড়া বোরোডিয়াঙ্কার প্রাকৃতিক দৃশ্যও বেশ মনোরম। যার আমেজ নিতে প্রতি বছরই পর্যটকরা ভিড় করেন এই শহরে।

১৩ ২১

সেই বোরোডিয়াঙ্কায় এখন গ্রাস করেছে নৈঃশব্দ্য। রাস্তাঘাট জনমানবহীন। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, মূল রাস্তার মুখে ঢোকার অবকাশ নেই কারণ সেখানে রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে আছে বেশ কয়েকটি সেনাবাহিনীর ট্রাক। পুড়ে গিয়েছে প্রত্যেকটাই।

১৪ ২১

ট্রাকগুলির মধ্যে একটি বেঁচে গিয়েছে কোনওমতে। তবে চালক নেই। ট্রাকটির গায়ে সাদা অক্ষরে বড় করে লেখা একটি ভি। যা সাধারণত রাশিয়ার সেনা সাঁজোয়ার ট্রাকে দেখা যায়।

১৫ ২১

শহর ছেড়ে চলে গিয়েছেন প্রায় সমস্ত বাসিন্দা। তবে এখনও রয়ে গিয়েছেন কেউ কেউ। তাঁদের অনেককেই আত্মীয়ের কফিন নিয়ে রাস্তায় হাঁটতে দেখা গিয়েছে ছবিতে। এঁরা রাশিয়ার বোমার আঘাতের শিকার।

১৬ ২১

এক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তেমনই একটি পরিবার জানিয়েছেন গত দু’দিনের অভিজ্ঞতার কথা।

১৭ ২১

তাঁরা জানিয়েছেন, প্রথমে রুশ ফৌজকে প্রতিহত করতে রাস্তায় নেমেছিলেন বোরোডিয়াঙ্কার সাধারণ মানুষজনই। বোতলবোমার মতো দেখতে, তবে তার থেকেও শক্তিশালী মলোটভ ককটেল নিয়ে হামলা চালিয়েছিল রুশ বাহিনীর সাঁজোয়ায়।

১৮ ২১

তারই প্রমাণ ওই ট্রাকগুলি। হামলায় বহু রুশট্রাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আগুনে পুড়েও যায়।

১৯ ২১

যুদ্ধে অংশ নেওয়ার ইতিহাস রয়েছে বোরোডিয়াঙ্কার। ১৮৬৩ সালে জানুয়ারির যুদ্ধের সময় এই শহরের বাসিন্দারা একযোগে লড়াই করেছিলেন। গত মঙ্গল এবং বুধবারও লড়াই করতে নেমেছিলেন তাঁরা।

২০ ২১

প্রত্যক্ষদর্শীদেরই একজন সেই অসমযুদ্ধের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘ সবঠিক চলছিল। হঠাৎই বদমাইস রাশিয়ানগুলো নির্বিচারে গোলা এবং বোমা বর্ষণ শুরু করে দিল।’’ সেই হামলার সঙ্গে আর পেরে ওঠা সম্ভবই ছিল না বোরোডিয়াঙ্কার।

২১ ২১

শহরটাকে দুরমুশ করে দিয়ে চলে যায় রুশ বাহিনী। ছারখার হওয়া শহুরে জনপদটির কিছু দিন আগের ছবির সঙ্গে এখনকার তোলা ছবি দেখলে তা স্পষ্ট বোঝা যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement