ভারতের সবচেয়ে ধনী পরিবারের সঙ্গে রয়েছে ঘনিষ্ঠ সংযোগ। প্রচারের আলোয় সব সময় না থাকলেও ভারতের বৃহত্তম হিরে ব্যবসায়ী সংস্থাগুলির মধ্যে একটির কর্ণধার তিনি।
২০২৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে হিরে ব্যবসায় নিজের আলাদা পরিচয় গড়ে তুলেছেন। অনায়াসেই তাঁকে ভারতের ‘ডায়মন্ড কিং’ বলা যায়।
তিনি রাসেল মেটা। বিখ্যাত হিরে-রত্ন ব্যবসায়ী ও ‘রোজ়ি ব্লু’র মালিক। যাঁর আরও একটি পরিচয়ও রয়েছে। অম্বানী পরিবারের বড় পুত্রবধূ শ্লোকা অম্বানীর বাবা রাসেল। এ ছাড়াও তাঁর আরও এক পুত্র ও কন্যা রয়েছেন। রাসেল অলঙ্কারশিল্পী মোনা মেটাকে বিয়ে করেন।
রাসেলের দাদা বিরাজ় এবং দিদি দিয়া। শ্লোকা কনিষ্ঠতম। মুকেশ ও নীতা অম্বানীর বড় ছেলে আকাশ ২০১৯ সালে শ্লোকা মেটাকে বিয়ে করেছিলেন।
রাসেল মেটা ১৯৬৫ সালে মুম্বইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। এর পরে তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার কার্লসবাদে আমেরিকার জেমোলজিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে হিরে সংক্রান্ত বিষয়ে ডিপ্লোমা করেন।
১৯৮৫ সালে রাসেল তাঁর বাবা এবং ভাইদের সঙ্গে কাজ শুরু করেছিলেন। ‘রোজ়ি ব্লু’ সংস্থাটি ১৯৬০ সালে রাসেলের বাবা অরুণকুমার রমনিকলাল মেটার তৈরি করা।
পড়াশোনা শেষ করে মুম্বইয়ে ফিরে তিনি দোকানের মেঝেয় বসে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ শুরু করেন। হিরে কাটা, পালিশ করা থেকে শুরু করে হিরে বাছাই করার মতো কাজও তাঁকে করতে হয়েছে।
বর্তমানে বিশ্বের সাতটি দেশে ১২টি কার্যালয় রয়েছে ‘রোজ়ি ব্লু’র— বেলজিয়াম, ইজ়রায়েল, হংকং, জাপান, ইংল্যান্ড, চিন ও আমিরশাহিতে।
২০২২ সালে ‘রোজ়ি ব্লু’ ৫ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা আয় করেছে। এই সংস্থার ডিরেক্টরের পদে রয়েছেন শ্লোকাও।
অম্বানীদের বড় পুত্রবধূ শ্লোকার সম্পত্তির পরিমাণও নেহাত কম নয়। তাঁর মোট সম্পদ ১ হাজার ৫১২ কোটি টাকারও বেশি।
শ্লোকার বাবা রাসেল এবং দাদা বিরাজ় হিরের ব্যবসার দেখভাল করেন। অন্য একটি গহনা প্রস্তুতকারক সংস্থার দেখাশোনা করেন শ্লোকার দিদি দিয়া এবং মা মোনা মেটা।
২০১৯ সালে মুকেশের পুত্র আকাশ অম্বানীর সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন তাঁর দীর্ঘকালীন প্রেমিকা শ্লোকা। তার পর থেকেই অম্বানীদের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক মেটা পরিবারের।
শুধু শ্লোকা নন, রাসেলের আর এক মেয়ে দিয়াও সমাজমাধ্যম ও ফ্যাশন জগতের এক পরিচিত মুখ। তিনিও কয়েক হাজার কোটির মালিক।
দিয়া মেটা আবার ইশা অম্বানীর ছোটবেলার বন্ধু। ২০১৭ সালে আয়ুষ জাটিয়াকে বিয়ে করেন তিনি। দিয়া সমাজমাধ্যমে খুব সক্রিয় থাকেন। ‘রোজ়ি ব্লু’ সংস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন তিনিও। সেই কারণে তাঁর আয়ও দিদি শ্লোকার চেয়ে কম নয়।
নামী হিরে ব্যবসায়ী হওয়ার পাশাপাশি রাসেল মেটা জনহিতকর কাজে প্রচুর অর্থ দেন।
হিরেশিল্পে অমূল্য অবদান তাঁকে সম্মান ও প্রশংসা এনে দিয়েছে। ২০২৪ সালে ‘ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি’ পুরস্কারের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে আজীবন কৃতিত্ব পুরস্কারের প্রাপক ছিলেন রাসেল।