চকচকে সোনার মতো গাড়ি। রোদ পড়লেই চারদিক থেকে আলো ঠিকরে পড়ে চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়ার উপক্রম। দাম প্রায় ১০ কোটি। আর সেই গাড়িকেই নাকি যাত্রী পরিবহণের ট্যাক্সি বানিয়ে ফেললেন কেরলের এক বিত্তশালী উদ্যোগপতি!
ববি চেম্মানুর। কেরলের এই উদ্যোগপতিই বিশ্ববিখ্যাত ফুটবলার দিয়েগো মারোদানাকে কেরলে আনার বন্দোবস্ত করেছিলেন। আর তার পর থেকে প্রায়ই তাঁর নাম খবরের শিরোনামে উঠে আসতে থাকে।
ববির মতোই তাঁর সংগ্রহে থাকা গাড়িগুলিও কেরলে বেশ বিখ্যাত। তাঁর গাড়িশালে রোলস রয়েস, মার্সিডিজ বেঞ্জ, রেঞ্জ রোভার এবং অন্যান্য অনেক বিলাসবহুল গাড়ির সম্ভার রয়েছে।
ববি সম্প্রতি তাঁর বিলাসবহুল ‘রোলস রয়েস ফ্যান্টম’ গাড়িটিকে একটি ট্যাক্সিতে রূপান্তরিত করেছেন। আর তা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়েছে।
ববি শুধু যে এই গাড়ি যাত্রিবাহী ট্যাক্সিতে পরিণত করেছেন তাই নয়, গাড়িটি চকচকে সোনালি রঙ দিয়ে ঢেকেও দিয়েছেন। গাড়ির বাইরে লাগিয়েছেন নিজের নাম এবং ছবি দেওয়া স্টিকারও।
কিন্তু কেন ‘সুখে থাকতে ভূতে কিলোল’ ববিকে? জানিয়েছেন ববি নিজেই।
ববির কথায়, “আমার কাছে রোলস রয়েস, মার্সিডিজ় বেঞ্জ, রেঞ্জ রোভার এবং অন্যান্য বহু বিলাসবহুল গাড়ির সম্ভার রয়েছে। ব্যবসায়িক কারণে আমাকে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। বহু মানুষের সঙ্গে মিশতে হয়। অনেক সময়ই দেখি মানুষ আমার গাড়ি হাঁ করে দেখছে। তখনই আমার মাথায় আসে যে, এই গাড়িটিকে ট্যাক্সি বানিয়ে ফেললে কেমন হয়।’’
ববির মালিকানাধীন গোষ্ঠীর ‘ববি চেম্মানুর গ্রুপ’। তার আওতাতেই রয়েছে ‘ববি ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস’। রোলস রয়েস ফ্যান্টম ট্যাক্সিটি এখন ববির সেই সংস্থার হয়েই যাত্রীদের ভ্রমণ করাতে নিয়ে যায়।
আগে সাদা নম্বরপ্লেট থাকলেও ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হওয়ায় ববির রোলস রয়েস গাড়িটির নম্বর প্লেটের রং-ও বদলেছে। রোলস রয়েসটির নম্বর প্লেটের রং এখন হলুদ, যা ভাড়া গাড়ির পরিষেবার জন্য ব্যবহৃত হয়।
যে কেউ চাইলেই বর্তমানে এখন ওই বিলাসবহুল ‘ট্যাক্সি’তে চেপে ভ্রমণ করতে পারেন। তবে তার জন্য গাঁট থেকে খসাতে হবে অনেকগুলি টাকা। ববির ওই গাড়িতে ভ্রমণ করার দিন প্রতি খরচ ২৫ হাজার টাকা।
ববি জানিয়েছেন, গাড়িটি প্রাথমিক ভাবে মুন্নারে তাঁর রিসর্টে ভ্রমণ করতে আসা পর্যটকদের জন্য রাখা হয়েছিল। তবে পরে তা সবার ভ্রমণের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
ববি বলেন, “গাড়ি নিয়ে ব্যবসা শুরু করতেই দেশে কোভিড অতিমারি আঘাত হানে। তবে এখন আবার ব্যবসা চাঙ্গা হচ্ছে। আমরা বিয়েবাড়িতে এই গাড়ি ভাড়া দেওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা করে নিই। সব সময়ই আমরা বিয়েবাড়ির বরাত পাই কারণ, তরুণ প্রজন্মের অনেকেই ৯.৫ কোটি টাকার ফ্যান্টম গাড়িতে চেপে ভ্রমণ করার অভিজ্ঞতা পেতে চায়।’’
অনেক সময় মধুচন্দ্রিমার জন্যও তাঁর এই গাড়িটি ভাড়া দেওয়া হয় বলে ববি জানিয়েছেন।
ববির সংস্থা এরনাকুলাম থেকে মুন্নার পর্যন্ত একটি হেলিকপ্টার পরিষেবাও শুরু করেছে।
কেরলের ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্টের অবসরপ্রাপ্ত মুখ্য কৌশলী শশীধরণ নায়ারের মতে, “আমার মেয়ের বিয়ের জন্য আমরা রোলস রয়েস ফ্যান্টম বুক করেছিলাম। আমার মেয়ে, জামাই এবং পুরো পরিবার বিষয়টি নিয়ে খুব উত্তেজিত ছিলাম। আমাদের একটি ভিন্ন অভিজ্ঞতা হয়েছে।’’