কেরিয়ার শুরু করেছিলেন ছোট পর্দার মাধ্যমে। মরাঠি ধারাবাহিকের অভিনেত্রী বর্তমানে বড় পর্দা থেকে শুরু করে ওটিটির পরিচিত অভিনেত্রী হয়ে উঠেছেন। চিত্রনাট্য অনুযায়ী অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁর চরিত্রগুলি হয় সাহসী। সম্প্রতি ‘ডাব্বা কার্টেল’ ওয়েব সিরিজ়ে অভিনয় করে নজর কেড়েছেন সাই তামহঙ্কর।
১৯৮৬ সালের জুনে মহারাষ্ট্রের সাংলি এলাকায় জন্ম সাইয়ের। বাবা-মা এবং ভাইবোনের সঙ্গে সেখানেই থাকতেন সাই। মহারাষ্ট্রের স্কুল এবং কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করেন তিনি।
পড়াশোনা চলাকালীন অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ জাগে সাইয়ের। তাঁর মায়ের এক বান্ধবীর সাহায্যে নাটকে অভিনয় করতে শুরু করেন তিনি। একাধিক নাটক মঞ্চস্থ করেছেন সাই। তার পর পাকাপাকি ভাবে অভিনয় নিয়ে কেরিয়ার গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
২০০৩ সালে একটি মরাঠি ধারাবাহিকে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে কেরিয়ার শুরু করেন সাই। তার পর একের পর এক মরাঠি ধারাবাহিকে অভিনয় করেন তিনি। তাঁর উপর নজর পড়ে বলিউডের ছবিনির্মাতা সুভাষ ঘাইয়ের।
সুভাষের হাত ধরে বলিপাড়ায় নামেন সাই। ২০০৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। বড় পর্দায় সেটিই প্রথম কাজ সাইয়ের।
২০০৮ সালে মরাঠি সিনেমাতেও অভিনয় করতে দেখা যায় সাইকে। হিন্দি ছবির মাধ্যমে কেরিয়ার শুরু করলেও মরাঠি ফিল্মজগতে ধীরে ধীরে পরিচিতি গড়ে তোলেন তিনি। এক সময় সর্বোচ্চ উপার্জনকারী মরাঠি নায়িকাদের তালিকায় নাম লিখিয়ে ফেলেছিলেন সাই।
‘গজনী’, ‘হান্টার’, ‘লভ সোনিয়া’, ‘মিমি’, ‘ভক্ষক’ এবং ‘অগ্নি’র মতো হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন সাই। তা ছাড়া ‘দ্য সিক্রেট অফ শিলেদার্স’, ‘ডাব্বা কার্টেল’, ‘নবরস’ এবং ‘ক্রাইম বিট’ নামের ওয়েব সিরিজ়ে অভিনয় করেছেন তিনি।
ছোটবেলায় খেলাধুলার প্রতিও আগ্রহ ছিল সাইয়ের। নিয়মিত কবাডি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতেন তিনি। সাই ক্যারাটেতে ‘অরেঞ্জ বেল্ট’।
২০১২ সালের এপ্রিল মাসে অময় গোসাভির সঙ্গে বাগ্দান পর্ব সেরেছিলেন সাই। পেশায় ভিস্যুয়াল আর্টিস্ট অময়। আংটিবদলের এক বছর পর ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে অময় এবং সাই বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু তাঁদের সংসার দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
দু’বছর সংসার করার পর ২০১৫ সালে বিবাহবিচ্ছেদ হয় সাইয়ের। বিচ্ছেদের পরেই অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন সাই।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, অনীশ জোয়াগ নামে এক প্রযোজকের সঙ্গে দীর্ঘ দিন সম্পর্কে ছিলেন সাই। ‘ওয়াইজ়েড’, ‘গার্লফ্রেন্ড’ এবং ‘ধুরালা’ নামের ছবির প্রযোজনার দায়িত্বে ছিলেন অনীশ। এই তিনটি মরাঠি ছবিতেই অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল সাইকে।
বলিপাড়ার জনশ্রুতি, অনীশের সঙ্গেও সম্পর্ক বেশি দিন স্থায়ী হয়নি সাইয়ের। দু’জনে আলোচনা করেই নাকি সম্পর্কে দাঁড়ি টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পরে অবশ্য নায়িকা নিজেই ঘোষণা করেছিলেন যে, তিনি ‘সিঙ্গল’ রয়েছেন।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ওটিটির পর্দায় মুক্তি পেয়েছে ‘ডাব্বা কার্টেল’ নামের একটি ওয়েব সিরিজ়। এই সিরিজ়ে পুলিশের চরিত্রে অভিনয় করে নজর কেড়েছেন সাই।
চলতি বছরে বড় পর্দায়ও দেখা যাবে সাইকে। চলতি মাসে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে চলেছে ‘গ্রাউন্ড জ়িরো’ নামের একটি হিন্দি ছবি। দীর্ঘ বিরতির পর এই ছবির মাধ্যমে ‘কামব্যাক’ করছেন বলি অভিনেতা ইমরান হাশমি। এই ছবিতেই অভিনয় করতে দেখা যাবে সাইকে।
বর্তমানে কেরিয়ার নিয়েই ব্যস্ত রয়েছেন সাই। কম সময়ের মধ্যে সমাজমাধ্যমে নিজস্ব অনুরাগীমহল তৈরি করে ফেলেছেন নায়িকা। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামের পাতায় ৩৪ লক্ষের গণ্ডি পার করে ফেলেছে।