Retail Inflation

সেপ্টেম্বরে ন’মাসে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি! সব্জি থেকে মশলা, দাম বাড়ল কোন কোন পণ্যের?

সেপ্টেম্বরে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার ন’মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। যা নিয়ে আরবিআই থেকে শুরু করে আর্থিক বিশেষজ্ঞদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:০০
Share:
০১ ১৮

অগ্নিমূল্য খুচরো বাজার। আর তাই নিত্যদিনের সব্জি কিনতে গেলেই দামের ছেঁকা খেতে হচ্ছে আমজনতাকে। এই আবহে সোমবার, ১৪ অক্টোবর খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। যা দেখে ভ্রু কুঁচকেছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।

০২ ১৮

সরকার প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ন’মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ হয়েছে মূল্যবৃদ্ধির হার। যা ৫.৪৯ শতাংশ। ভোক্তা মূল্য সূচক (কনজ়িউমার প্রাইস ইনডেক্স বা সিপিআই)-এর নিরিখে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার অগস্টে ছিল ৩.৬৫ শতাংশ।

Advertisement
০৩ ১৮

গত বছরের (পড়ুন ২০২৩) সেপ্টেম্বরে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির পরিমাণ ছিল ৫.০২ শতাংশ। তবে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির হার দেখা গিয়েছিল ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। ওই সময় সূচক ৫.৬৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছিল। যা এ বার ছাপিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

০৪ ১৮

ভোক্তা মূল্য সূচকের নিরিখে মুদ্রাস্ফীতির হার প্রকাশ করে জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস (ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্স অফিস বা এনএসও)। এই কেন্দ্রীয় সংস্থা জানিয়েছে, এ বছরের সেপ্টেম্বরে খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার ৯.২৪ শতাংশে পৌঁছেছে। অগস্টে যা ছিল ৫.৬৬ শতাংশ। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে খাদ্যে মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৬.৬২ শতাংশ।

০৫ ১৮

সেপ্টেম্বরে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার বৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আবহাওয়াকে দায়ী করেছে এনএসও। এছাড়াও আরও কিছু আনুষঙ্গিক কারণের কথা বলা হয়েছে। যার সঙ্গে সহমত হয়েছে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একটি বড় অংশ। এ বছর দেশের অনেক জায়গাতেই বন্যা হয়েছে। যা খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির মূল কারণ বলে মনে করছেন তাঁরা।

০৬ ১৮

কেন্দ্রের জারি করা রিপোর্টে খাদ্যসামগ্রী, বিশেষত শাকসব্জির দাম বেড়ে যাওয়ায় পাইকারি মুদ্রাস্ফীতিও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সেপ্টেম্বরে এটি ১.৮৪ শতাংশে পৌঁছেছে। অগস্টে যা ছিল ১.৩১ শতাংশ। গত বছরের (২০২৩) সেপ্টেম্বরে পাইকারি মূল্য সূচক ছিল (-) ০.০৭ শতাংশ।

০৭ ১৮

এ বছরের অক্টোবরে বৈঠকে বসে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বা আরবিআইয়ের মুদ্রানীতি কমিটি। বৈঠক শেষে রেপো রেট বা সুদের হার অপরিবর্তিত রাখার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। পাশাপাশি, খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আরবিআই।

০৮ ১৮

কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের তরফে সরকারকে ভোক্তা মূল্য সূচকের নিরিখে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার ৪ শতাংশে নামিয়ে আনতে বলা হয়েছে। এতে উভয় দিকে ২ শতাংশ মার্জিন রেখেছে আরবিআই। যা বেশ চ্যালেঞ্জিং বলে মানছেন বিশেষজ্ঞেরাও।

০৯ ১৮

জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরে সব্জির ক্ষেত্রে বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৬ শতাংশ। ডাল ও অন্যান্য খাদ্যপণ্যে এটি ছিল ৯.৮১ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে ফলের বাজারও ছিল খুবই চড়া। তবে ২০২৩ সালের তুলনায় এ বছরের সেপ্টেম্বরে কম দামে বিক্রি হয়েছে মশলা।

১০ ১৮

এনএসওর রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘অগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে অগ্নিমূল্য হয়েছে সব্জি। যা এই সময়সীমার মধ্যে খুচরো খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির মূল কারণ। সব্জির মুদ্রাস্ফীতির হার ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা ১৪ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। আগের মাসে এটি ছিল ১০.৭ শতাংশ।’’

১১ ১৮

তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি, সবজিকে বাদ দিলে অন্যান্য খাদ্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতির হার এ বছরের সেপ্টেম্বরে ৫৯ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে নেমেছে। এটি ৩.৯ শতাংশে চলে এসেছে। অগস্টে যা ছিল ৪.৩ শতাংশ। একে ইতিবাচক লক্ষণ বলেছেন তাঁরা।

১২ ১৮

এনএসও জানিয়েছে, জাতীয় মুদ্রাস্ফীতির হার ৫.৪৯ শতাংশ রয়েছে। গ্রাম ও শহর এলাকায় এটি যথাক্রমে ৫.৮৭ শতাংশ ও ৫.০৫ শতাংশে পৌঁছেছে। রাজ্যের নিরিখে মুদ্রাস্ফীতি হার সর্বাধিক বিহারে। সেখানে এর অঙ্ক ৭.৫ শতাংশ।

১৩ ১৮

খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার সবচেয়ে কম দিল্লিতে। সেখানে এর পরিমাণ ৩.৬৭ শতাংশ। শহর এলাকায় খাদ্যপণ্যের দাম গ্রামীণ এলাকার তুলনায় বেশি রয়েছে। বছর থেকে বছরের হিসেবে সেপ্টেম্বরে গৃহস্থালির মুদ্রাস্ফীতির হার ২.৭৮ শতাংশে পৌঁছেছে।

১৪ ১৮

গত ৯ অক্টোবর মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠকের পর আরবিআইয়ের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বলেন, ‘‘আমরা মুদ্রাস্ফীতির হারের দিকে কড়া ভাবে নজর রাখছি। এটিকে আমাদের শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’’ কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর মাইকেল দেবব্রত পাত্র জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে চলতি অর্থবর্ষে মূদ্রাস্ফীতির হার গড়ে ৪.৫ শতাংশ থাকবে। যা আগেই পূর্বাভাসে বলেছিল আরবিআই।

১৫ ১৮

অন্য দিকে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার নিয়ে মুখ খুলেছেন পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামাণিক। তাঁর যুক্তি, ‘‘আগামী দিনে মূল্যবৃদ্ধির হারে আরও ঊর্ধ্বগতি দেখা যেতে পারে। কারণ, পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধ শুরু হওয়ায় বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দর বাড়তে শুরু করেছে। পাশাপাশি, সংঘর্ষের জেরে পণ্যের জোগান বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’

১৬ ১৮

এ বছর ডিসেম্বরে আরবিআই রেপো রেট বা সুদের হার কমাবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন আর্থিক বিশ্লেষকদের একাংশ। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন পটনা আইআইটির অধ্যাপক রাজেন্দ্র। তাঁর দাবি, আগামী বছরের (পড়ুন ২০২৫) ফেব্রুয়ারির আগে কিছুতেই তা করতে পারবে না আরবিআই।

১৭ ১৮

আরবিআইয়ের কর্তাব্যক্তিরা অবশ্য জানিয়েছেন, ভারতে মাঝেমধ্যেই জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের দর চড়তে থাকে। ফলে যত দিন যাচ্ছে ততই লক্ষ্য স্থির রেখে ঋণনীতি ঠিক করার কাজটা কঠিন হচ্ছে। তবে মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম টানতেই রেপো রেট স্থির রাখা হচ্ছে।

১৮ ১৮

খুচরো মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি কংগ্রেস। শতাব্দীপ্রাচীন দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ‘‘গরিবদের জন্য রেশন ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষকে ক্ষুধায় বিশ্বগুরু বানিয়ে ফেলেছেন। বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১০৫ নম্বর স্থানে রয়েছে ভারত।’’

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement