সোমবার ৩৫ বছরের অভিনেত্রী রেঞ্জুষা মেননের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হওয়ার পর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মালয়ালম টেলিভিশন জগতের পাশাপাশি দক্ষিণের ফিল্মপাড়ার পরিচিত মুখ ছিলেন তিনি। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন অভিনেত্রী। কিন্তু রেঞ্জুষার মৃত্যু নিয়ে ঘনিয়েছে রহস্য।
১৯৮৮ সালে কেরলে জন্ম রেঞ্জুষার। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান তিনি। তাঁর বাবা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্মী। কেরলেই স্কুল-কলেজের পড়াশোনা শেষ করেন তিনি।
এর্নাকুলামের একটি বেসরকারি কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন রেঞ্জুষা। নাচ নিয়ে কেরিয়ার তৈরি করবেন বলে বিনোদনজগতের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ভাগ্যের চাকা তাঁকে অভিনয়ের দিকে নিয়ে যায়।
নাচে দক্ষ ছিলেন বলে দক্ষিণের একটি রিয়্যালিটি শোয়ে প্রতিযোগী হিসাবে অংশগ্রহণ করেন রেঞ্জুষা। সেখান থেকেই অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। ২০০৫ সালে ‘অথভুতা দীপু’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন তিনি।
‘ক্লাসমেটস’, ‘মারিককুন্দোরু কুনজাদু’, ‘সিটি অফ গড’, ‘থালাপ্পাভু’, ‘বম্বে মার্চ ১২’ এবং ‘লিসম্মুড়ে বীরু’র মতো মালয়ালম ছবিতে অভিনয় করেন রেঞ্জুষা। বড় পর্দার পাশাপাশি মালয়ালম ধারাবাহিকেও অভিনয় করেন তিনি।
বিভিন্ন রিয়্যালিটি শোয়ে সঞ্চালকের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে রেঞ্জুষাকে। ‘আনন্দরাগম’, ‘কৌমুদী’স ভারান ডক্টর’, ‘এন্তে মাতাভু’, ‘স্ত্রী’, ‘বালামণি’, ‘নিজালত্তম’, ‘মাগালুড়ে আম্মা’র মতো একাধিক মালয়ালম ধারাবাহিকে অভিনয় করেন তিনি।
ধারাবাহিকে অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজক হিসাবেও কাজ করেন রেঞ্জুষা। মালয়ালম রিয়্যালিটি শোয়ের কয়েকটি পর্বের প্রযোজনার দায়িত্বেও ছিলেন তিনি।
নামী ব্র্যান্ডের প্রচারের জন্য মডেলিং করতেও দেখা যায় রেঞ্জুষাকে। কানাঘুষো শোনা যায়, বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে প্রায়ই অশান্তি হত তাঁর। তাই কন্যাসন্তানকে নিয়ে আলাদা হয়ে যান অভিনেত্রী।
কানাঘুষো শোনা যায়, দক্ষিণী টেলিভিশনজগতের খ্যাতনামী পরিচালক মনোজ শ্রীলাকামের সঙ্গে একত্রবাস করতেন রেঞ্জুষা। তিরুঅনন্তপুরমের যে ফ্ল্যাট থেকে অভিনেত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে সে ফ্ল্যাটেই মনোজের সঙ্গে থাকতেন রেঞ্জুষা।
তিরুঅনন্তপুরমের ফ্ল্যাটে রেঞ্জুষা এবং মনোজ ভাড়া থাকতেন। কানাঘুষো শোনা যায়, মনোজের সঙ্গে নাকি গোপনে সাত পাকে বাঁধাও পড়েছিলেন অভিনেত্রী।
স্থানীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ধারাবাহিকের শুট করতে বাইরে গিয়েছিলেন মনোজ। রেঞ্জুষাকে বার বার ফোন করলেও কোনও সাড়া পাচ্ছিলেন না তিনি। এমনকি ফ্ল্যাটের নিরাপত্তারক্ষীকেও খোঁজ নিতে ফ্ল্যাটে পাঠিয়েছিলেন মনোজ।
নিরাপত্তারক্ষী ফ্ল্যাটের দরজায় ধাক্কা দেওয়ার পরেও যখন রেঞ্জুষার কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি তখন সেখানে যান মনোজ। ফ্ল্যাটের দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে অভিনেত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, রেঞ্জুষার ফ্ল্যাট থেকে কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি। ঠিক কী কারণে অভিনেত্রী আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন তা নিয়ে রহস্য ঘনিয়েছে। কারও মতে, তিনি ব্যক্তিগত জীবনে সমস্যায় ভুগছিলেন। কারও মতে, আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত ছিলেন বলে নিজেকে শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন রেঞ্জুষা।