কথায় আছে, ‘বাপ কা বেটা, সিপাহি কা ঘোড়া’! তবে তিনি ‘বেটা’ নন। কিন্তু বাবার দেখানো পথেই এগোতে চান। বাবা এক সময় বাইশ গজের খেলোয়াড় ছিলেন। কন্যার অবশ্য ক্রিকেটার হওয়ার তেমন কোনও আগ্রহ নেই। তবে ক্রীড়া দুনিয়ার পাশাপাশি টিভির পর্দাতেও ছিল বাবার উজ্জ্বল উপস্থিতি। কন্যাও চান টিভির পরিচিত মুখ হতে। ইতিমধ্যেই সেই কন্যার নানা অবতারের ছবি সাড়া ফেলেছে। বাবা নভজ্যোত সিংহ সিধু। আর যাঁকে নিয়ে সমাজমাধ্যমে এত হইচই, তিনি হলেন সিধু তনয়া রাবিয়া।
ইনস্টাগ্রামে সিধু-কন্যাকে নিয়ে উন্মাদনা কম নেই! রাবিয়ার নানা অবতারের ছবি আপাতত চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। কেউ কেউ তো বলছেন, রাবিয়া নাকি পুরো সুপারমডেল!
ইনস্টাগ্রামে রাবিয়ার ফলোয়ারের সংখ্যাও অনেক। ৭০ হাজারেরও বেশি ফলোয়ার তাঁর। সিধু-কন্যা যে পুরোদস্তুর কেতাদুরস্ত, তা তাঁর বেশভূষা দেখলেই টের পাওয়া যায়।
বর্তমানে জেলবন্দি সিধু। ১৯৮৮ সালে পটিয়ালার রাস্তায় গাড়ি পার্কিংকে কেন্দ্র করে গুরনাম সিংহ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন সিধু ও তাঁর বন্ধু রুপিন্দ্র সিংহ সান্ধু। অভিযোগ, গুরনামকে গাড়ি থেকে জোর করে টেনে বার করে মারধর করেন তাঁরা। ওই ঘটনার কয়েক দিন পরে মারা যান গুরনাম। এই ঘটনায় প্রাক্তন ক্রিকেটারকে এক বছর কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সেই থেকেই পটিয়ালা জেলে রয়েছেন তিনি।
সিধুর জেলযাপনের মধ্যেই প্রচারের আলো কেড়েছেন রাবিয়া। প্রায় প্রতি দিনই তাঁর ছবি ভাইরাল হচ্ছে সমাজমাধ্যমে।
১৯৯৫ সালে জন্ম রাবিয়ার। উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। সিঙ্গাপুরে লাসাল কলেজ থেকে কলা বিভাগে পড়াশোনা করেন।
স্নাতক পাশের পর লন্ডন গিয়েছিলেন সিধু-কন্যা। সেখানে ইস্টিটিউটো মারাঙ্গনি থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। বর্তমানে পেশায় তিনি ফ্যাশন ডিজাইনার।
ফ্যাশন দুনিয়ায় রাবিয়ার আত্মপ্রকাশ ঘটলেও বাবার মতোই টিভি তারকা হয়ে উঠতে চান। ক্রিকেট দুনিয়ার পাশাপাশি টিভিতে কমেডি শো-তে দেখা যেত সিধুকে।
বাবা যে তাঁর কতটা কাছের, সেই অনুভূতির কথা রাবিয়ার কথাতেই টের পাওয়া গিয়েছে। গত বছর পঞ্জাবে বিধানসভা নির্বাচনের সময়ও সিধুর কন্যা শিরোনামে এসেছিলেন।
পূর্ব অমৃতসর কেন্দ্রে ভোটে লড়েছিলেন সিধু। সেই সময় বাবার হয়ে প্রচারে শামিল হয়েছিলেন রাবিয়া। কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী চরণজিৎ সিংহ চান্নিকে আক্রমণও করতে দেখা গিয়েছিল সিধু-কন্যাকে।
তবে কি আগামী দিনে বাবার মতো তিনিও রাজনীতির আঙিনায় পা রাখবেন? সিধুর হয়ে তাঁর কন্যার প্রচার দেখে এমন জল্পনাই দানা বেঁধেছিল। তবে এ নিয়ে তেমন আগ্রহ দেখাননি রাবিয়া।
সিধুর স্ত্রী নভজ্যোত কউর পেশায় চিকিৎসক। একই সঙ্গে তিনিও রাজনীতির দুনিয়ায় পা রেখেছেন। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই রাবিয়া আগামী দিনে রাজনীতিতে যোগ দেবেন কি না, এ নিয়ে জল্পনা রয়েইছে। তবে শোনা যায়, আপাতত গ্ল্যামার দুনিয়ার প্রতিই নাকি ঝোঁক রয়েছে রাবিয়ার।
গত বছর পঞ্জাবে নির্বাচনের সময় সিধুর হয়ে প্রচারপর্বে রাবিয়ার একটি মন্তব্য হইচই ফেলে দিয়েছিল। যত দিন না সিধু জয়ী হচ্ছেন, তত দিন বিয়ে করবেন না, এ কথাই বলেছিলেন রাবিয়া।
২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচনে অবশ্য জিততে পারেননি সিধু। আম আদমি পার্টির প্রার্থী জীবন জ্যোত কউরের কাছে হেরে গিয়েছিলেন তিনি। তবে সেই সময় সিধু-কন্যার ওই মন্তব্য ঘিরে চর্চা চলেছিল।
ভোটপর্ব মিটেছে গত বছর। এখনও চর্চায় সিধু-কন্যা। সমাজমাধ্যমে তাঁর ছবি রোজই ঝড় তুলছে। আগামী দিনে এই পঞ্জাবি কন্যার জীবন কোন খাতে বয়, সে দিকেই নজর রেখেছেন তাঁর ভক্তরা।