রাস্তার উপর পড়েছিল তরুণীর দেহ। পেশায় তিনি যৌনকর্মী। কী ভাবে মৃত্যু? না কি খুন? তৈরি হয় হাজারো ধন্দ। জড়ো হয় পুলিশ। রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গের ঘটনা। মৃত্যুর কারণ জানতে পারা গিয়েছিল ময়নাতদন্তের পর। হতবাক হয়েছিলেন তরুণীর সহকর্মীরাও।
তরুণীর সহকর্মীরা কিছুতেই বুঝতে পারছিলেন না, তাঁর মৃত্যুর কারণ। পুলিশও প্রাথমিক ভাবে মনে করেছিল, খুন করা হয়েছে তাঁকে। যদিও তরুণীর দেহে কোনও ক্ষতচিহ্ন ছিল না। তা হলে খুন করা হয়েছিল কী ভাবে?
তরুণীর মৃতদেহের কাছেই পড়েছিল তাঁর ব্যাগ। তাতে ছিল টাকা। তরুণীর গায়ে গয়নাও ছিল। পুলিশ বুঝতে পারে, আর যাই হোক চুরি বা ডাকাতির জন্য এ কাজ করা হয়নি।
অন্য এক যৌনকর্মী পুলিশকে জানিয়েছিলেন, আগের রাতে তরুণী কার সঙ্গে ছিলেন, তিনি জানেন। ওই যৌনকর্মী দাবি করেন, লোকটির যৌনক্ষুধা খুব বেশি। তাঁর অত্যাচারেই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে।
অন্য যৌনকর্মীরা জানান, মৃত্যুর আগের রাতে তরুণীর কাছে এক ব্যক্তি এসেছিলেন। তিনি টাকার বিনিময়ে তরুণীকে ‘ওরাল সেক্স’ করতে বলেছিলেন। তরুণী তাতে রাজিও হয়েছিলেন। তিনি ২০০ রুবল দাবি করেছিলেন। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২০০ টাকারই আশপাশে।
ওই যৌনকর্মীরা জানিয়েছিলেন, তরুণী একটি শর্ত দিয়েছিলেন তাঁর খদ্দেরকে। জানিয়েছিলেন, কন্ডোম পরে থাকলেই ওরাল সেক্সে সম্মতি দেবেন। ওই খদ্দের রাজিও হয়েছিলেন। তার পর তাঁরা সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছিলেন।
তরুণীর ময়নাতদন্তের রিপোর্টেই পুরোটা স্পষ্ট হয়। জানা যায়, শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। রিপোর্টে দেখা যায়, তাঁর স্বরযন্ত্রে আটকে গিয়েছিল কন্ডোম।
যৌনক্রিয়ার সময় কন্ডোম তরুণীর গলায় ঢুকে যায়। তা স্বরযন্ত্রে আটকে থাকায় ফুসফুসে অক্সিজেন পৌঁছতে পারেনি। সে কারণে মৃত্যু হয় তরুণীর। এতে তাঁর খদ্দেরের কোনও ভূমিকা ছিল না।
ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞের দল জানিয়েছিলেন, তরুণী যৌনক্রিয়ার সময় একটু বেশিই সক্রিয় হয়েছিলেন। তাঁর ঠোঁটও প্রয়োজনের তুলনায় বেশি সক্রিয় ছিল। জোরে শ্বাসবায়ু টেনে ধরাই কাল হয়েছে।
প্রায় ১০ বছর আগে এ রকমই এক ঘটনা ঘটেছিল ইজরায়েলের এক শহরে। সেখানে কন্ডোম শ্বাসযন্ত্রে আটকে মৃত্যু হয়েছিল ৫০ বছরের এক ব্যক্তির।
ওই ব্যক্তি আর তাঁর বন্ধু নাহারিয়ার বাসিন্দা। নাহারিয়ার রাস্তাতেই আচমকা পড়ে যান ৫০ বছরের ওই ব্যক্তি। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
পরে ময়নাতদন্তের সময় দেখা যায়, ওই ব্যক্তির শ্বাসযন্ত্রে কন্ডোম আটকে রয়েছে। চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন, কন্ডোম শ্বাসযন্ত্রে আটকানোর ফলে দমবন্ধ হয়ে মারা গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। তাঁর বন্ধুকে জেরা শুরু করে পুলিশ।
প্রশ্ন ওঠে, ওই ব্যক্তির গলায় কন্ডোম গেল কী করে? তদন্তে জানা যায়, মৃত ব্যক্তি মাদকাসক্ত ছিলেন। কন্ডোমে কোনও মাদক লাগানো ছিল। তা শুঁকতে গিয়েই বিপত্তি।
পরে সেই কন্ডোমটিও ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। তাতে মাদকের প্রমাণ মিলেছিল।